ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বেতন বৈষম্য দূরসহ ৬ দাবিতে মেট্রোরেল কর্মচারীদের কর্মবিরতি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ৮ আগস্ট ২০২৪  
বেতন বৈষম্য দূরসহ ৬ দাবিতে মেট্রোরেল কর্মচারীদের কর্মবিরতি

গ্রেডভিত্তিক বেতন-ভাতা বৈষম্য দূরীকরণ, অন্যান্য দেশের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে সুযোগ-সুবিধা প্রদান, ডিউটিকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ ৬ দফা দাবিতে ‘সর্বাত্মক কর্মবিরতি’ পালন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)-এ ১০ থেকে ২০তম গ্রেড পর্যায়ের ৭০০ এরও বেশি কর্মচারী।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মেট্রোরেলের উত্তরা ডিপোর সামনে তারা এক মানববন্ধনে এসব দাবি করেন।

তাদের দাবি গুলো হলো­­—

১। বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী ১-৯ম গ্রেড পর্যন্ত জাতীয় বেতন স্কেলের ২.৩ গুণ হারে এবং ১০-২০তম গ্রেড পর্যন্ত জাতীয় বেতন স্কেলের ২ গুণ হারে প্রদান করা হচ্ছে; যা পরিবর্তন করে বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো অর্থাৎ সব গ্রেডের একই রকম বেতন কাঠামো, যা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ এর ২.৩ গুণ হারে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ প্রদান করতে হবে। 

২। চাকরিতে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ সিপিএফ সুবিধা প্রদান করতে হবে। 

৩। অন্যান্য সব সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ও অন্যান্য দেশের মেট্রোর সাথে সমন্বয় করে পদোন্নতি ব্যবস্থা চালুকরণসহ সব ধরনের ভাতাদি সম্বলিত সার্ভিস রুলস দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করতে হবে। 

৪। শিক্ষানবিশকাল শেষে অন্যান্য সব সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির ন্যায় যোগদানের তারিখ হতে নিয়মিতকরণ করতে হবে। 

৫। পেনশন ও ডিপোসহ সব স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ডিউটি প্রদান করতে হবে। 

৬। সর্বোপরি কর্মক্ষেত্রে স্বৈরাচারী মনোভাব ও বৈষম্যমূলক আচরণ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ না ঘটানো।

এ ছাড়াও শিক্ষানবিশকাল শেষে স্থায়ীকরণ করতে হবে; স্টেশন ও ডিপোসহ সব স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। 

মানববন্ধনে তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৩ জুন শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি হিসেবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠন করা হলেও অদ্যাবধি এই প্রতিষ্ঠানের সার্ভিসরুলস প্রণয়ন করা হয়নি। এতে প্রতিষ্ঠানে ১০-২০তম গ্রেডে কর্মরত প্রতিটি জনবল বছরের পর বছর চরম বৈষম্য, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বৈরাচারিতা, অন্যায়, জুলুম ও অবিচারের শিকার। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি সার্ভিস রুলস প্রণয়ন না করায় প্রতিটি কর্মচারী বাংলাদেশের সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চলমান সব সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। বৈষম্যমূলক বেতন কাঠামোর ফলে প্রতিটি কর্মচারী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রন্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি কর্মচারীরা বছর বছর ধরে সব রকমের সুবিধা (সিপিএফ, পদোন্নতি, ঝুঁকিভাতা, শিফটিং ভাতা, যাতায়াত ভাতা, প্রাপ্তি বিনোদন ভাতা, মোবাইল ভাতা, গভ. হলিডে ভাতা, মাইলেজ ভাতা) বঞ্চিত হয়ে আসছেন। বৈষম্যমূলক ছুটি (সপ্তাহে ছয়দিন ডিউটি) প্রথা চালুর ফলে প্রতিটি কর্মী অদ্যাবধি সব নৈমিত্তিক ছুটি, অর্জিত ছুটি, প্রাপ্তি বিনোদন ছুটি, চিকিৎসা ছুটি, শিক্ষানবিশ ছুটিসহ অন্যান্য ছুটিসমূহ (সব ধরনের সরকারি ছুটি) হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ছুটির দিনে ডিউটির বিপরীতে প্রদেয় পাওনা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়াও অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের ন্যায় শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনা করে স্কিল্ড মেইনটেইনার, সেমি স্কিল্ড মেইনটেইনার, কাস্টমার রিলেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট, টিকেট মেশিন অপারেটর পদসমূহ নিম্নতর গ্রেডে হওয়ায় মেট্রোকর্মীরা প্রতিনিয়ত বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, যা উন্নীত করে বৈষম্যে দূর করা প্রয়োজন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, নিয়োগবিধি অনুযায়ী দুই বছর সন্তোষজনক চাকরি শেষে স্থায়ীকরণের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৩-৫ বছর অতিবাহিত হলেও কাউকে স্থায়ী করা হচ্ছে না। ফলে প্রতিটি কর্মীকে অত্যন্ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও হতাশায় দিনানিপাত করতে হচ্ছে। বার বার মৌখিক আশ্বাস দিলেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি ও দীর্ঘসূত্রিতা করে আসছে।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়