ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ একুশের চেতনারই ফসল: কাদের গনি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫  
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ একুশের চেতনারই ফসল: কাদের গনি

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, “স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ একুশের চেতনারই ফসল।একুশের মর্মবাণী হচ্ছে মাথা নত না করা। অধিকার ও দেশের মালিকানা নিজেদের রাখা।”

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব বলেন।

আরো পড়ুন:

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, “বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার হরণসহ দেশের মানুষকে নানাভাবে অধিকারহীন করে গত ১৭ বছর একুশের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। এখন দরকার জনগণকে দেশের মালিকানা ফেরত দেওয়া। এজন্য সবার আগে জনগণকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে হবে।”

“জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই শুধু সংস্কারের বৈধ অধিকার রাখেন। জনগণের ভোটাধিকার হরণের অর্থ হলো ফ্যাসিজম কায়েম করা। আর এটি হবে শত শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”

তিনি বলেন, “একুশের চেতনা যুগে যুগে জনগণের মৌলিক অধিকার হরণকারী নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শক্তিকে রুখতে উদ্বুদ্ধ করে। যা চব্বিশেও  করেছে। অধিকার আদায় এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে ভাষাশহীদরা আমাদের প্রেরণার উৎস। প্রকৃতপক্ষে এই মহান ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতিসত্ত্বার বিকাশে এবং একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রথম সোপান হিসেবে কাজ করেছে। ২১ ফেব্রুয়ারি শুধু মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার দিনই নয়, আমাদের স্বাধিকার, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রথম সংগ্রামের দিন। মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে ভাষাশহীদরা আত্মত্যাগের যে গৌরবদীপ্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।”

পেশাজীবীদের এই নেতা বলেন, “একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের মানবাধিকারের চিরন্তন ধারক ও বাহক। একুশ আমাদের মুক্তির চেতনা। কিন্তু এ চেতনা বাংলাদেশে বারবার হোঁচট খেয়েছে, এখনো খাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।”

তিনি বলেন, “মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে পতিত সরকার একুশের চেতনার রংকে বর্ণহীন ও ফিঁকে করে দিয়েছিল। জাতির মধ্যে তৈরি করেছিল বিভেদের পাহাড়সম দেয়াল, যা মহান একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। অপসংস্কৃতি আমদানি করা হয়েছিল। আমরা আর এটি দেখতে চাই না। ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিতে ফাটল সৃষ্টি হতে দেওয়া যাবে না। এতে ফ্যাসিবাদের দোসররা পার পেয়ে যাবে।”

ভাষা শহীদদের ত্যাগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তাদের আত্মত্যাগের ধারাবাহিকতায় গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনের পথ বেয়ে আমরা অবতীর্ণ হয়েছি স্বাধীনতাযুদ্ধে। প্রতিষ্ঠা করেছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। অধিকারবোধের চেতনা পরিপূর্ণতা দান করেছিল মহান ২১ ফেব্রুয়ারি। সেই চেতনা নস্যাৎ করে একদলীয় শাসনের জগদ্দল পাথর একটানা ১৭ বছর জনগণের কাঁধের ওপর চাপানো হয়েছে। কখনো ভোটারবিহীন নির্বাচন, কখনো মধ্যরাতের নির্বাচন, আবার কখনো ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে, যা ছিল খোলাখুলি কারচুপির এক নিকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত। আমরা সে পথ আর মাড়াতে চাই না। জনগণকে তার ভোটাধিকার ফেরত দিতে দেরি করলে জনগণের মধ্যে ভুল বার্তা যাবে।”

এ সময় বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, প্রফেসর ড.মোর্শেদ হাসান খান, প্রফেসর আবুল কালাম, জাহানারা বেগম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হানিফ, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, হাফিজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল ইসলাম জুয়েল, ইঞ্জিনিয়ার এনাম, ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়