ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে মানবিক যুবলীগ

এন আই আহমেদ সৈকত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ১০ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ১০:৫৭, ১১ নভেম্বর ২০২১
ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে মানবিক যুবলীগ

যুবশক্তি সমাজ এবং রাষ্ট্র পরিবর্তনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজ পরিবর্তনের জন্য চাই গতি, শক্তি ও প্রগতি। যারা পুরনো ধ্যান-ধারণা নিয়ে চলে এবং কূপমণ্ডূকতার আশ্রয় নেয়, তাদের দ্বারা সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই কালে কালে যুবকরাই উড়িয়েছে পরিবর্তনের বৈজয়ন্তী।

ইতিহাসের পাতায় লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বিশ্বে বিভিন্ন বিপ্লবের কারিগর যুবশক্তি যা এর যথার্থতা প্রমাণ করে। যুবকদের প্রসঙ্গে মাও সে তুং-এর তাৎপর্যপূর্ণ উক্তিটি উল্লেখ করলে যুবশক্তির তাৎপর্য তুলে ধরতে সহজ হবে। মাও সে তুং বলেন, যুবকেরাই হলো সমাজের সবচেয়ে সক্রিয় আর সবচেয়ে সজীব শক্তি। তবে অবশ্যই প্রবীণদের কাছ থেকে যুবকদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ যুবশক্তির সঠিক প্রয়োগে অভিজ্ঞদের সহায়তার প্রসঙ্গ টেনে মাও সে তুং এ শক্তির পূর্ণতা দিতে চেয়েছেন।

পৃথিবীতে যুগে যুগে যুবকরাই এগিয়ে এসেছে এবং বিভিন্ন বিপ্লব ঘটিয়েছে। যুবকেরাই দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ সকল অধিকার আদায়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। কয়েকটি উদাহরণ উল্লেখ করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে ভগৎ সিং ছিলেন পুরোধা ব্যক্তিত্ব। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি ছিলেন অন্যতম প্রভাবশালী বিপ্লবী। কৈশোরেই ভগৎ ইউরোপীয় বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে পড়াশোনা করেন এবং নৈরাজ্যবাদ এবং কমিউনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হন। জেলে ভারতীয় এবং ব্রিটিশ বন্দীদের সমানাধিকারের দাবিতে ৬৪ দিন টানা অনশন চালিয়ে তিনি সমর্থন আদায় করেন। প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা লাজপত রায়ের হত্যার প্রতিশোধে ব্রিটিশ পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট মিস্টার স্যান্ডার্সকে গুলি করে হত্যা করেন ভগৎ। বিচারে ভগৎ এর ফাঁসি হয়। তার দৃষ্টান্ত শুধুমাত্র ভারতীয় যুবসমাজকে স্বাধীনতা আন্দোলনে উদ্বুদ্ধই করেনি, ভারতে সমাজতন্ত্রের উত্থানেও সহায়তা করেছিল।

জনপ্রিয় ট্রেডিং সাইট আলিবাবা ডটকম-এর কর্ণধার এবং চীনের শীর্ষধনী ব্যক্তি জ্যাক মা। জ্যাক মা সবসময় তরুণ যুবকদের নিয়ে কথা বলেন এবং কাজের প্রতি উৎসাহ দেন। জ্যাক মা তরুণদের বলেন, হাল ছেড়ে দিলেই আপনার স্বপ্নটা ম্লান হয়ে যাবে, যদি আপনি স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চান, নিজেকে বাঁচাতে চান তাহলে কখনো হাল ছড়বেন না। ব্যক্তি জীবনেও জ্যাক মা নানান সংগ্রাম পার করে আলীবাবা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি কখনো হাল ছাড়েননি, অবশেষে পা দিতে পেরেছেন সফলতার সিঁড়িতে। যা তরুণ প্রজন্মকে সফলতার স্বপ্ন বুনতে অনুপ্রেরণা যোগায়।

বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং বঙ্গবন্ধুর অপর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী উভয়ে মিলে ‘ইয়াং বাংলা প্লাটফর্ম’-এর মাধ্যমে সারা বাংলার যুবসমাজকে নতুন নতুন কর্মসংস্থান, সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনী দিয়ে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করে চলেছেন। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমরা শুধু যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই না, চাই তারা নিজ উদ্যোগে কিছু করুক।

যুব সমাজের প্রচেষ্টা বদলে দিতে পারে বিশ্ব। যুবশক্তি অপার সম্ভাবনাময়। যুবশক্তির সম্পৃক্ততা ছাড়া বিশ্বের কোথাও কখনো কোনো সংগ্রাম, সংস্কার বা বিপ্লব সম্ভব হয়নি। ইতিহাসের পাতায় চোখ বুলালে ভেসে উঠবে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে এদেশের যুব সমাজই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া সিপাহী বিদ্রোহ, কৃষক বিদ্রোহ, নীলকরদের বিরদ্ধে বিদ্রোহ, তেভাগা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে এ দেশের যুবসমাজই এগিয়ে এসেছে। 

যুবশক্তির এই গুরুত্ব স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের চারটি জিনিসের প্রয়োজন তা হচ্ছে, নেতৃত্ব, ম্যানিফেস্টো বা আদর্শ, নিঃস্বার্থ কর্মী এবং সংগঠন। এই প্রয়োজনীয়তা থেকে তিনি যুব শক্তির গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেনশনের মাধ্যমে দেশের প্রথম এবং সর্ববৃহৎ যুব সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনির হাত ধরে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব থেকে প্রিয় রাজনৈতিক শিষ্য। বাংলাদেশের পললভূমিতে ‘ম্যাকিয়াভেলিয়ান প্রিন্স’ শেখ ফজলুল হক মনি। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক একজন সৃষ্টিশীল মানুষ। শেখ মনি মনেপ্রাণে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা গঠন করতে চেয়েছিলেন। শেখ ফজলুল হক মনি মনেপ্রাণে চেয়েছিলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী অস্থির যুবসমাজকে সৃজনশীল খাতে প্রবাহিত করতে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা অর্থাৎ সকল ধর্মের মানুষের স্ব স্ব ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের অধিকার তথা জাতীয় চার মূলনীতিকে সামনে রেখে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজের ন্যায্য অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের মধ্য থেকে স্বাধীনতা ও প্রগতিকামী যুবক ও যুব মহিলাদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তোলাই ছিল যুবলীগের মাধ্যমে তার উদ্দেশ্য।

শেখ ফজলুল হক মনি বিশ্বাস করতেন, নতুন দেশ ও সমাজের চিন্তা করলে পরিকল্পিত কার্যপন্থার বিকল্প নেই। সমসাময়িক বিশ্ব ও বৈশ্বিক রাজনীতির ওপর তার প্রগাঢ় জ্ঞান ছিল। তার লেখা প্রবন্ধ ‘বিপ্লবের পরে প্রতিবিপ্লব আসবে’ পড়লেই বোঝা যায় বিশ্ব রাজনীতির সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপট। স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যুবকদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত্ব ভাষণে ১৯৭৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ওয়াদা কর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবি।...আমি যেখানে আছি, সেখানে কেন তোরা উহা বন্ধ করিতে পারবি না।..চোখের আড়াল হলেই তোরা লটর-পটর করিস। কিন্তু তোরা লটর-পটর না করিলে আর কেহ লটর পটর করিতে পারিবে না। তাই আবার বলিতেছি, আমার বাণী যেন নীরবে নীভৃতে না কাঁদে। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেমিক যুবসমাজ হতে হলে, যোগ্যতা, দক্ষতার পাশাপাশি নীতি-নৈতিকতা, দায়িত্ব-কর্তব্যবোধসহ দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে।

যুবলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে চার দফা মূলনীতি: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা-সকল ধর্মের মানুষের স্ব স্ব ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের অধিকারের মতো বিষয় গুলোকে সংগঠনটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। পাশাপাশি বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্য দূরীকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজের ন্যায্য অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুবলীগ ছিল সব সময় সোচ্চার। সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তোলাই যুবলীগের উদ্দেশ্য। প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুবলীগের নেতা কর্মীরা দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করে।

সময়ের হাত ধরে আজ যুবলীগের দায়িত্বে শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে। সর্বশেষ যুবলীগের সপ্তম কাউন্সিল ২৩ নভেম্বর (২০১৯) ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়। ওই কাউন্সিলে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ ফজলুল হক মনি’র জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল। পিতার আদর্শিক চেতনায় যুবলীগ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দেশপ্রেম ও সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় মানবিক যুবলীগের সুখ্যাতি অর্জনে সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ কাজ করছেন। সকল বিতর্ক পেছনে ফেলে জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে শেখ মনির প্রতিষ্ঠিত যুবলীগ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে। বলা চলে, শেখ ফজলে শামস পরশের নেতৃত্বে এবার যুবলীগের নতুন যাত্রা শুরু। যে যুবলীগ এখন ‘মানবিক যুবলীগ’। এই যাত্রায় পরশের পাশে তারুণ্যনির্ভর ত্যাগীরা যুবলীগকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পেয়েছে।

চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই প্রথম অভিব্যক্তিতে সকলের মন জয় করে নেন শেখ ফজলে শামস্ পরশ। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘যুবলীগের চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থেকে কাজ করব। আপনারা আমার শক্তি হবেন। আমার বাবা মনি বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য এই সংগঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তার কন্যার দেশের প্রতি হৃদয়ের ভালোবাসা থেকে আমি সাহস পাই। তাই আজ আমি আপনাদের সামনে বলতে চাই, আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হচ্ছে আমি সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে পালন করব। অন্যদিকে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনিও যুবলীগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নতুন এ নেতৃত্ব যুবলীগকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যুবলীগ কর্মীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর চেতনা ফুটিয়ে তোলার পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নানামুখি কার্যক্রম শুরু করে। করোনা মহামারিতে আতঙ্কিত দেশ যখন ঘরবন্দি, ঠিক তখন মানবিক যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম খান নিখিল সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিলেন, সর্বস্ব নিয়ে অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা মেনে তৃণমূল থেকে শুরু করে সকল সাংগঠনিক পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা এ সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে অসহায়ের পাশে দাঁড়ান। কোন কোন জায়গায় রান্না করা খাবারও পথচারী ও উদ্বাস্তুদের মাঝে বিতরণ করতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফনে যখন পরিবার থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন পর্যন্ত পিছুপা হয়েছে, তখন  যুবলীগের নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসতে দেখা গেছে। দায়িত্ব নিয়েছে মৃতদেহের গোসল থেকে শুরু করে জানাজা এবং দাফনের। ২৪ ঘণ্টা নাগরিক সেবা দিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়া সমগ্র দেশে যুবলীগের ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন সেবা ও অসহায়দের  চিকিৎসা সহায়তা প্রদান সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

মুজিববর্ষ’র কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ‘গাছ লাগাই, জীবন বাঁচাই’- স্লোগানকে সামনে রেখে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করছে যুবলীগ। সংগঠনটির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে একটি করে ফলজ-বনজ ও ঔষধি, এ তিন রকম গাছ রোপণ করছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। এরইমধ্যে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা পাওয়ার পর মহানগর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়সহ সংগঠনের সকল সাংগঠনিক ইউনিটের নেতা-কর্মীরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন একটি মানুষও গৃহহীণ থাকবে না। এজন্য তিনি বিশ্বের নজিরবিহীন এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন ‘আশ্রয়ন প্রকল্প’। এর ধারাবাহিকতায় যুবলীগও গৃহহীণ মানুষদের ঘর করে দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাস্তে হাতে মাঠে নেমে পড়তে দেখা গেছে যুবলীগের নেতাকর্মীদের। ধানকাটা শেষে মাড়াই করে কৃষকের গোলায় ধান তুলে দিয়ে আসতে দেখা গেছে যুবলীগের নেতাকর্মীদের। অল্প সময়ে সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গায় পরিণত হওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর এমন দৃষ্টি আকর্ষণ নিঃসন্দেহে অনেক বড় অর্জন সংগঠনটির চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের জন্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আস্থা নিয়ে এ দু’জনকে যুবলীগের দায়িত্ব দিয়েছিলেন সেটা পূরণে তারা শতভাগ সফল হবেন বলে আমার বিশ্বাস। যার স্বাক্ষর তারা এরই মধ্যে রেখে চলেছেন। এ মুহূর্তে যে কোনো সমীকরণে পরশ-নিখিল নেতৃত্বে যুবলীগ তার চিরায়ত জনকল্যাণ মূলক রাজনৈতিক ধারায় রয়েছে, এটা দৃঢ়ভাবে বলা যায়। তুলে ধরতে পেরেছে সংগঠনের ঐতিহ্য ও গৌরব।

পরিশেষে বলতে চাই, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ শুরু থেকেই সকল বাধা চূর্ণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের জন্য যুবসমাজকে সংগঠিত করার দায়িত্ব পালনে যত্নবান ছিল। বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে এই শক্তিমান যুবশক্তিকে ব্যবহার করা ও সঠিক পথ নির্দেশ দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে। উদীয়মান যুবসমাজ অপটিক্যাল ফাইবারের সুবাদে সহজেই জ্ঞান সাগরে সাঁতার দিতে শুরু করেছে। কোনো বিপদ তাদের চলার গতিকে বাঁধাগ্রস্ত করতে পারে না। তারুণ্যের বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা-চেতনা এগিয়ে নেবে সোনার বাংলাকে।গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি যুব সমাজের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বর্তমান যুবসমাজ, যার নেতৃত্ব দেবে দেশের ঐতিহ্যবাহী যুব সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

লেখক: উপ-তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ
 

ঢাকা/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়