ক্ষমতা দেওয়ার তোমরা কে, ক্ষমতা দেবে জনগণ: আব্বাস

জেলা প্রশাসক ও বিচারকদের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সম্প্রতি প্রজাতন্ত্রের এক কর্মচারী (ডিসি) বলছেন, বিএনপির হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া যায় না। একজন বিচারক বললেন, বিএনপির হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া যায় না। আরে ভাই তোমরা এসব বলার কে? জনগণ কার হাতে ক্ষমতা দেবে, সেটা জনগণ নির্ধারণ করবে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কেরানীগঞ্জে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের এক দফা দাবিতে এই সমাবেশে প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার সমালোচনা করে আব্বাস বলেন, কোর্টে চোর-ডাকাতের বিচার নাই। বিচার হচ্ছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের। ভেবেছেন পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করবেন, আর কোর্ট-কাচারিতে বিচার করবেন? এভাবে হয় না। মুসোলিনি, আইয়ুব খানও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নাই, আপনারাও পারবেন না।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকারের পদত্যাগ কিংবা অপসারণ-সময়ের ব্যাপার মাত্র। যাই-যাই করছে, বড় ভয়ে আছে এই সরকার। দেশ যে অবস্থায় আছে, এই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে, জাতিকে মুক্ত করতে হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দরকার। আমরা এমন দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব, আমরা ঢাকা শহরসহ সারাদেশে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি করব যে, এই সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। সেই দিনের জন্য আপনারা প্রস্তুতি নিন, আপনারা কেউ ঘরে বসে থাকবেন না।
‘এক রাতে আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে যাবে’—সরকার দলের পক্ষ থেকে আসা এমন ধারণা প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা কী এমন অপরাধ করলেন যে এক রাত্রে শেষ হয়ে যাবেন? আপনারা কি নিজেরা বিষ খাবেন নাকি? আমি তো বুঝলাম না! আমরা তো লাঠি, দা, কাঁচি নিয়ে বসে নাই। আমরা দেশকে মুক্ত করতে চাই আপনাদের হাত থেকে। আপনাদের ওপর আমরা কোনো অত্যাচার করতে চাই না। কিন্তু মনে হচ্ছে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আপনারা সবাই বিষ খেয়ে মারা যাবেন। খালি বারবার বলেন, এক রাত্রে সব শেষ হয়ে যাবে।’
এ সময় সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, যদি জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চান, জনগণ জোর করেই আপনাদের ক্ষমতা থেকে নামাবে। ক্ষমতা না ছাড়লে আপনারা আন্দোলনের নামে যা যা করেছেন, আমরাও রাজপথে তাই করব। তবে আমরা সেই পথে যেতে চাই না। সোজা আঙুলে কাজ না হলে বাঁকা করতে হবে।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই বৃষ্টির শুরু হয়। ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সমাবেশ শুরু হয় দেরিতে। সমাবেশ শেষ হওয়ার আগে আবারও বৃষ্টি। তবে বৃষ্টি বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে অবস্থান করেন। বিএনপির এই সমাবেশকে ঘিরে সমাবেশ স্থলে পুলিশের সতর্ক অবস্থান লক্ষ করা গেছে।
/মেয়া/এসবি/
আরো পড়ুন