ঢাকা     মঙ্গলবার   ২১ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

জনগণ সরকারের সঙ্গে নেই: মান্না

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৭, ১০ মে ২০২৪  
জনগণ সরকারের সঙ্গে নেই: মান্না

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন মাহমুদুর রহমান মান্না

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রমাণ করেছে, জনগণ সরকারের সঙ্গে নেই।

শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে  ‘নাগরিক অধিকার আন্দোলন’র উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষ এই সরকারকে ভোট দেয়নি, এখনো দেয় না। এই যে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন হয়ে গেলো, আপনারা দেখেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে উপজেলা নির্বাচনে এত কম ভোট কখনো পড়েনি। এটা ভোটের সরকারি হিসাব, পত্র-পত্রিকায় লিখেছে।

তিনি বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধানমন্ত্রী সংসদে তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘কোনো কিছু তোয়াক্কা করি না, জনগণ আমার সঙ্গে আছে’। এই জনগণ মানে কী? কোন জনগণ আছে আপনার সাথে? সাথে থাকলে তারা ভোট দিতে যায় না কেন? সত্যি বলতে কী, আপনার দলের লোকজনও তো আপনার সাথে নাই। যদি থাকত, তাহলে ৭ জানুয়ারি ভোট দিতে যেত, উপজেলা নির্বাচনে তারা ভোট দিতে যেত।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম সরকার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না, বিদ্যুতের দাম কমাতে পারে না। বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এখন ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ওই ঋণের টাকা শোধ করার জন্যে আবার বিশেষভাবে অর্থনৈতিক কাউন্সিলের বৈঠক বসায়। বাইরের যেসব দেশ আছে, যারা আমাদের টাকা দেওয়ার কথা বলেছে, তারা যদি তাড়াতাড়ি আমাদেরকে টাকা দেয়, তাহলে হয়ত রক্ষা। আর তা না হলে তো কোনো টাকা সরকার শোধ দিতে পারবে না। সব দেখে মনে হয়, দেশে আসলে কি সরকার আছে?

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আমদানি করবার টাকা নেই সরকারের কাছে। মে মাসের পর কী করবে? রিজার্ভ বাড়াতে পারবে? বিদেশ থেকে প্রবাসীরা টাকা পাঠাচ্ছে দেশে। সে টাকাও সরকারের কাছে যাচ্ছে না। ওরা জানে, সরকারিভাবে টাকা পাঠানো নিরাপদ নয়। তাই, তারা ভিন্নভাবে টাকা পাঠায়। আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির আর কোনো সুযোগ নেই। 

বিরোধী দল নয়, বরং সরকার দুর্বল হয়ে পড়েছে, দাবি করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা মনে করেন বিরোধী দল দুর্বল হয়েছে ও সরকার আরও শক্তিশালী হয়েছে, তাদেরকে বলি দেশের অর্থনৈতিক চিত্র দেখার জন্য। বিরোধী দল দুর্বল হয়নি, আমরা সবাই আমাদের দলেই আছি। যখন ডাক দিচ্ছি, মানুষ রাজপথে আসছে। অপেক্ষা করুন, সহসাই মানুষ আবার রাজপথে নামবে। আর জনগণকে বলছি, আপনাদের কষ্ট যদি লাঘব করতে চান, এই সরকারকে দিয়ে তা হবে না। ভোট কেড়ে নিয়েছে, জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, আপনার- আমার মাথায় ঋণের বোঝা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই, এই সরকারকে হটাতে হবে, ওদের সাথে কোনো আপস নাই। গরম একটু একটু করে কমছে। গরম যত কমবে আমরা আরো বড় আকারে রাস্তায় আসব, এরকম চিন্তা করছি। দেখি শেষ পর্যন্ত কী হয়।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে। তিনি ভীষণ অসুস্থ। চিকিৎসা পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার আইনের দোহাই দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা পথ রুদ্ধ করে রেখেছে। আইনমন্ত্রীকে বলব, জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। তাকে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন, নইলে আপনাদের এই প্রতিহিংসার জবাব জনগণই একদিন দেবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, হঠাৎ করে রেলের ভাড়া বাড়ানো হলো। কারো কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করা লাগল না। হঠাৎ করে দেখবেন তেলের দাম, পেট্রোলের দাম, অকটেনের দাম বাড়ানো হলো। হঠাৎ করে দেখবেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো। আগে গণশুনানি হতো এনার্জি রেগুলেটারি কমিশনে। আমরা যেতাম বিএনপির পক্ষ থেকে। এখন সেই গণশুনানির ব্যবস্থাটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মাওলানা শাহ নেছারুল হক, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

এমএ/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়