ঢাকা     সোমবার   ২৪ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১১ ১৪৩১

ছাত্র আন্দোলন, বন্যাসহ নানা সমস্যায় মানুষ : রওশন এরশাদ

জ্যেষ্ঠ প্রতি‌বেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৩, ১৪ জুলাই ২০২৪  
ছাত্র আন্দোলন, বন্যাসহ নানা সমস্যায় মানুষ : রওশন এরশাদ

ছাত্র আন্দোলন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব, ঘুষ-দুর্নী‌তি ও মাদকের বিস্তার, বন্যায় দুর্গ‌তিসহ দে‌শের মানুষ নানা সমস্যার ম‌ধ্যে দিনযাপন কর‌ছে ব‌লে মন্তব্য ক‌রে‌ছেন সা‌বেক বি‌রোধীদলীয় নেতা জাতীয় পা‌র্টির একাং‌শের চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে তি‌নি এ মন্তব্য করেন। 

রওশন এরশাদ বলেন, দেশে এখন নানাবিধ সমস্যা বিরাজ করছে। ঘুষ দুর্নী‌তি ও মাদ‌কের বিস্তার তো আ‌ছেই। তার ম‌ধ্যে ছাত্র-শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। দেশে বেকার সমস্যা বেড়েই চলছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া। দে‌শের মানুষ‌কে এসব সমস্যা থে‌কে স্থায়ীভা‌বে মু‌ক্তি দি‌তে হ‌বে।

‘আমি মনে করি, দেশের সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক আছেন। কিন্তু সমাধানের পদক্ষেপগুলো যথার্থ নয়। ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলন শুরু হতে না হতেই সরকারের উচিৎ ছিলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা। সরকার চাই‌লে সেটা এখনো করতে পারে।’

দেশে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের দুর্গতি বেড়েই চলেছে জা‌নি‌য়ে জাতীয় পা‌র্টির চেয়ারম্যান ব‌লেন, দেশের এই পরিস্থিতির মধ্যে পল্লীবন্ধু এরশাদ বেঁচে থাকলে তিনি ঘ‌রে বসে থাকতেন না। বন্যাদুর্গত মানুষের কাছে ছুটে যেতেন।

এরশা‌দের জাতীয় পা‌র্টি‌তে থে‌কে এম‌পি মন্ত্রী হ‌য়ে অ‌নে‌কেই দ‌লের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হু‌সেইন মুহম্মদ এ‌রশাদের নাম আদর্শ মু‌ছে ফেলার ষড়যন্ত্র কর‌ছেন জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ক‌রে রওশন এরশাদ ব‌লেন, আমাদের পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদ নেতাকর্মীদের কত ভালোবাসতেন এবং কত আদর করতেন। আপনারা কি কেউ তাকে ভুলতে পারবেন? অথচ অনেকে আছেন যারা জাতীয় পার্টিতে থে‌কে এম‌পি মন্ত্রী হ‌য়ে এরশাদকে মুছে ফেলতে চাইছেন।

তি‌নি ব‌লেন,  বিগত নির্বাচনে পল্লীবন্ধুর নাম মুখে নেয়া হয়নি। নির্বাচনী ইশতেহারে পল্লীবন্ধুর ছবিটা পর্যন্ত রাখা হয়নি। এরশাদকে যারা ভালোবাসেন তারা তা মানতে পারেনি। তাই যেখানে একক নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, সেখানে এবার মাত্র ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে। তাও জাতীয় পার্টির ভোট নয়- ওটা ছিলো সমঝোতার ভোট।

‘আমরা এরশাদের নিজ হাতে গড়া জাতীয় পার্টিকে শেষ হয়ে যেতে দিতে পারি না। জাতীয় পার্টির মধ্যে কোনো দ্বিধা-বিভক্তি হতে দেব না। তাহলে পল্লীবন্ধুর আত্মা কষ্ট পাবে। আমরা সবাই পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রবর্তিত শান্তি, সমৃদ্ধি, উন্নয়ন এবং ইতিবাচক ধারার রাজনীতি করতে চাই ব‌লেও জানান তি‌নি।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টির এই নেতাকর্মীরা পার্টির জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বিগত নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টিতে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। কর্মী-সমর্থকদের মন ভেঙ্গে যায়। তাদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে। সেই অবস্থায় এই নেতৃবৃন্দ আবার পার্টির হাল ধরেছেন। পার্টিকে চাঙ্গা করে তুলেছেন। আমি পার্টির যে কোনো দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছি। তাদের সাহস দিয়েছি এবং পার্টিকে সংগঠিত রেখেছি। এবারও তাই করেছি।

আপনারা কেউ হতাশ হবেন না। জাতীয় পার্টিকে আবার সুসংগঠিত করে এরশাদের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করবো। প্রিয় নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার- ব‌লেন তি‌নি।

স্মরণসভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছি‌লেন জাতীয় পার্টি জেপি) মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, বিএলডিপির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী নাজিমুদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিন।

বক্তব্য রা‌খেন, পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, দ‌লের কো চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাবেক রাষ্ট্রপতির ফটোগ্রাফার ইকবাল চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, সুনীল শুভরায়, এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, ইয়াহিয়া চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, হাজী তুহিনুর রহমান নুরু হাজী, খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, এম এ কুদ্দুস খান, পীরজাদা সৈয়দ জুবায়ের আহমেদ, উপদেষ্টা হাফছা সুলতানা, ভাইস চেয়ারম্যান হাজী নাসির সরকার, শারফুদ্দিন আহমেদ শিপু, মিজানুর রহমান দুলাল, শাহ আলম তালুকদার, যু্গ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, শেখ মাসুক রহমান, সৈয়দ ওয়াহিদুল ইসলাম তরুণ, সুজন দে, এসএম হাশেম, এডভোকেট সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, এসএম আল জুবায়ের, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আবু সালেহ, শাহনাজ পারভীন, জাফর ইকবাল নীরব, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাহিন আরা সুলতানা রিমা, প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট এমদাদ, সমবায় সম্পাদক পারবেজ আলম মীর, সংস্কৃতি সম্পাদক নাজমুল খান, পরিবার পরিকল্পনা ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সম্পাদক জহির উদ্দিন লিটন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক সায়িকা হক, শিক্ষা সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিজ মাহবুব, যুগ্ম কৃষি সম্পাদক মেহবুব হাসান, যুগ্ম সমবায় সম্পাদক চিশতী খায়রুল আবরার শিশির, যুগ্ম সংস্কৃতি সম্পাদক মোঃ তৌহিদুল আলম খান, যুগ্ম তথ্য গবেষণা সম্পাদক মোঃ ইদ্রিস আলী, যুগ্ম মহিলা সম্পাদিকা মিস নাসরিন ইসলাম প্রমুখ। 

নঈমুদ্দীন/তারা


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়