ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নারিকেলের খোলা দিয়ে আড়াই শতাধিক পণ্য তৈরি ইমদাদের 

সুকান্ত বিশ্বাস, রাজবাড়ী  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৩, ২৯ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১২:২৪, ২৯ আগস্ট ২০২১
নারিকেলের খোলা দিয়ে আড়াই শতাধিক পণ্য তৈরি ইমদাদের 

মো. ইমদাদ ইসলাম। রাজবাড়ী পৌর এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। একসময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। চাকরি জীবন শেষে যখন বেকার হয়ে পড়েন, তখন অভাবে দিন কাটতে থাকে তার। অভাব থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় সেই উপায় খুঁজতে খুঁজতে বেছে নেন কারুশিল্প। বর্তমানে তার তৈরি এই কারুশিল্প রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকাতে।

ইমদাদ ইসলাম জানান, তিনি কুষ্টিয়া ওয়েল মিল থেকে নারিকেলের খোলা (মালই) জোগাড় করা শুরু করেন। তারপর সেই নারিকেলের খোলা বিভিন্ন রকমভাবে কেটে এবং নকশা করে বাজারে বিক্রি করতে থাকেন। প্রথম দিকে সাড়া না পেলেও বর্তমানে তার তৈরি এসব পণ্যের চাহিদা রয়েছে বেশ।

গত ১০ বছর যাবৎ তিনি এই কাজ করে আসছেন। নারিকেলের খোলা দিয়ে বর্তামনে তিনি আড়াই শতাধিকের বেশি পণ্য তৈরি করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শোপিস, টেপিল ল্যাম্প, বৈদ্যুতিক লাইট দিয়ে জ্বালানো হারিকেন, ঝাড়বাতিসহ নানা পণ্য।

তিনি বলেন, এসব পণ্য তিনি নিজ হাতে তৈরি করেন। শুধু রাজবাড়ীর গোদার বাজার এলাকায় প্রতি শুক্রবার তিনি এসব পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। এছাড়া সারাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে এসব পণ্য তার কাছ থেকে কিনে নিয়ে যান। মাসে তার প্রায় লক্ষাধিক টাকার বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

শুক্রবার রাজবাড়ী গোদারবাজার এলকায় গিয়ে দেখা যায়, তার তৈরি পণ্য কিনতে মানুষের ভিড়। এসময় কথা হয় স্কুল শিক্ষক আব্দুল বারেক মন্ডলের সাথে। তিনি একটি প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি বলেন, এর আগেও আমি ইমদাদ ভাইয়ের কাছ থেকে ‌‌‘আল্লাহ্ লেখা’ একটি শোপিস কিনেছি। এবার একটি টেবিল ল্যাম্প কিনতে এসেছি।

আরেক ক্রেতা মুনিয়া ইসলাম বলেন, আমার এসব কারুশিল্পের প্রতি আগ্রহ রয়েছে। তাই আমি যেখানেই যাই, এই কারুশিল্পের পণ্য পেলে সংগ্রহ করি। একটি নৌকা দেখে আমার পছন্দ হয়েছে। সেটি কিনবো।

ফরিদপুর থেকে মামা বাড়িতে বেড়াতে আসা রাতুল একটি শোপিস দেখছেন। এতে লেখা রয়েছে ‘মা’। রাতুল জানায়, তার মা এসব কারুশিল্প পছন্দ করেন। সম্প্রতি তার মায়ের জন্মদিনে তিনি কোনো উপহার দিতে পারেননি। তাই এই শোপিসটি কিনে মাকে উপহার দেবেন।

স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মী নেহাল আহমেদ বলেন, এই শিল্প আমাদের জেলার জন্য অহংকার হতে পারে। জেলার সীমানা ছাড়িয়ে এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে এগুলো। সরকার এবং প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ থাকবে, এই শিল্পের মানোন্নয়নে যেন সুদৃষ্টি প্রদান করেন।

/মাহি/ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়