ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

মাশরুম চাষে ঘুচছে বেকারত্ব, মাসে আয় লাখ টাকা

মো.ইমরান, কলাপাড়া, পটুয়াখালী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৪, ২২ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৩:২৮, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
মাশরুম চাষে ঘুচছে বেকারত্ব, মাসে আয় লাখ টাকা

ছবি: রাইজিংবিডি

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষে ভাগ্য ফিরেছে এক যুবকের। বর্তমানে তার খামারে ১ হাজার খড়ের স্পন প্যাকেট রয়েছে। আর এ স্পন থেকে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো মাশরুম বিক্রি করে মাসে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা। এই যুবকের সাফল্য পুরো এলাকায় সাড়া ফেলেছে। বলছি সৌমিত্র মজুমদার শুভর কথা। 

শুভ পটুয়াখালী পৌর শহরের দক্ষিণ কালিকাপুর এলাকার সুশান্ত মজুমদারের ছেলে। ২০১৭ সালে এলএলবি পাস করে ঢাকায় এক আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে তেমন একটা আয় না থাকায় এলাকায় ফিরে আসেন তিনি। বেশ কিছুদিন বেকার থাকার পর জার্মানি প্রবাসী খালাতো বোনের পরামর্শে আগ্রহী হন মাশরুম চাষে। পরে সাভারের জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টারে দুই মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। 

এ বছরের এপ্রিল মাসে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ গ্রামে খালার বাড়িতে ৫০টি স্পন প্যাকেট দিয়ে শুরু করেন মাশরুম চাষ। ফলন ভালো হওয়ায় ওই বাড়ির ২০ শতাংশ জমিতে দুটি সেড তোলেন। সেখানে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন মাশরুম খামার। এখন খামার থেকে প্রতিদিন ১৫ কেজি করে মাশরুম পাচ্ছেন তিনি। তাতেও মেটাতে পারছেন না স্থানীয় চাহিদা। তবে সরকারি সহায়তা ও স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা পেলে এ খামার বৃদ্ধির মাধ্যমে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।


 
সৌমিত্র মজুমদার শুভ বলেন, খড়, কাঠের গুঁড়া, গমের ভূষি, তুষ ও চুন দিয়ে আমরা নিজেরাই মাশুরুমের বীজ তৈরি করি। পরে বীজের সঙ্গে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টার থেকে আনা টিস্যু কালচার যুক্ত করে সঠিক পরিচর্যা করি। দিনে তিনবার স্প্রের মাধ্যমে পানি দেই। ২০ দিনের মাথায় শুরু হয় ফলন। এ কাজে তেমন একটা পরিশ্রম নেই। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ কেজির মতো অর্ডার আসে। তবে বেশির ভাগ অর্ডার অনলাইনেই আসে। খামার আরও বড় করতে পারলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে পারতাম। আমার প্রয়োজন কৃষি ঋণ বা সরকারি সহায়তা। 

শুভর জার্মানি প্রবাসী খালাতো বোন রত্না বিশ্বাস বলেন, বিদেশে নিত্যদিন সবাই মাশরুম খেয়ে থাকেন। এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। তবে এ দেশের মানুষ মাশরুমের গুণ সম্পর্কে তেমন একটা জানে না। শুভ যখন বেকার দিন কাটাচ্ছিল, তখন ওকে মাশরুম চাষের পরামর্শ দিয়েছিলাম। দেশে এসে দেখলাম ও ভালোই খামার করেছে। এবং অনেক টাকা আয় করছে। ওকে নিয়ে গর্ববোধ হচ্ছে। 

শুভর খালাতো ভাই জীবন বিশ্বাস বলেন, মাশরুম চাষে আগ্রহী হওয়ার পরই শুভকে আমাদের পরিত্যক্ত জমিতে খামার করতে বলি। শুভ ২০ শতাংশ জমির উপর দুইটি সেড তৈরি করে মাশরুম চাষ করছে। দেখে বেশ ভালো লাগছে। 

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, মাশরুম চাষ একটি লাভজনক পেশা। এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। মাশরুম চাষি শুভকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, এই এলাকার কোনো যুবক মাশরুম চাষে আগ্রহী হলে তাকে সব ধরনের সহযোহিতা করা হবে। আমরা চাই কলাপাড়ায় মাশরুম চাষের বিপ্লব ঘটুক। 

/মাহি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়