মিঠাপানিতে বাগদা চিংড়ি চাষে সাফল্য
শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা || রাইজিংবিডি.কম

সাতক্ষীরার চিংড়ি প্রদর্শনী খামারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা মিঠাপানিতে রপ্তানিজাত বাগদা চিংড়ি উৎপাদন করে সাফল্য পেয়েছেন। সাদা মাছের সঙ্গে বাগদা চিংড়ির মিশ্র চাষের মাধ্যমে এ সফলতা এসেছে।
খামার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, লবণ পানির চেয়েও চিংড়ির গ্রোথ ভালো হয়েছে মিঠাপানিতে। আর এসব চিংড়ি প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার এল্লারচর এলাকায় অবস্থিত সরকারি চিংড়ি প্রদর্শনী খামারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসাহক আলী এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইসাহক আলী বলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলার মাটিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। যা বাগদা চিংড়ি উৎপাদনে খুবই উপযোগী। ৫০ একর খামারের ছয়টি মিঠাপানির পুকুরে সাদা মাছের সঙ্গে বাগদা চিংড়ির মিশ্র চাষ করে সফল এসেছে। শুধু তাই নয় লবণ পানির উৎপাদিত চিংড়ির চেয়েও মিঠাপানিতে চাষ করা চিংড়ির গ্রোথ ভালো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরার যে কোনো ঘেরে বা মিঠাপানির পুকুরে বাগদা চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব। এ জন্য প্রথমেই ভালোভাবে পুকুর বা ঘের তৈরী করতে হবে। পুকুরের তলা ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর পানি উঠিয়ে চুন প্রয়োগ করার পর পানির পিএইচ ও এ্যামোনিয়া পরীক্ষা করে বাগদা রেনু পোনা ছাড়তে হবে। দিনে দুইবার পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। তাহলে মাছের মৃতুর হার রোধ হবে এবং ভালো গ্রোথও পাওয়া যাবে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের একটি পুকুরের মিঠাপানিতেও চিংড়ি চাষ হয়েছে। ওই পুকুরের মালিক ও মাছ চাষি কওছার আলী বলেন, তার ১০ বিঘার মিঠাপানির ঘের রয়েছে। সেখানে তিনি রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ চাষ করেন। কিন্ত চলতি মৌসুমে সাদা মাছের সঙ্গে পরীক্ষামূলকভাবে ১০ হাজার বাগদা চিংড়ি ছাড়েন তার ঘেরে। তিন মাস পর জাল দিয়ে চিংড়ি ধরা শুরু করেন। বর্তমানে প্রতি কেজি বাগদা চিংড়ি ৯০০ থেকে ৯৫০ দরে বিক্রি করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলায় যে কোনো মাছ উৎপাদনে খুবই সম্ভবনাময়। জেলার চাষিরা লবণপানির চিংড়ির সঙ্গে সাদা মাছ উৎপাদন করছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরে প্রচুর পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয় এ জেলায়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। তাছাড়া দেশের বাইরে চিংড়ি ও সাদা মাছ রপ্তানি করেও উল্লেখযোগ্য হারে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে।
মাসুদ
আরো পড়ুন