ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বোয়াল-চিতলের কেজি ২০০০ টাকা

আমিরুল ইসলাম, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫২, ২১ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৫:০১, ২১ নভেম্বর ২০২২
বোয়াল-চিতলের কেজি ২০০০ টাকা

রংপুর নগরীতে কাঁধে মাছ বিক্রি করছেন কাজল।

প্রতি সপ্তাহে কুড়িগ্রামের ধরলা নদী থেকে বড় বড় চিতল ও বোয়ার মাছ কিনে আনেন কাজল চন্দ্র রায়। পরে সেই মাছগুলো রংপুর নগরীতে কাঁধে ফেড়ি করে বিক্রি করেন তিনি। ৫৫ বছর বয়সী এই মাছ বিক্রেতা তারা কাছে থাক চিতল আর বোয়াল প্রতি কেজি বিক্রি করেন দুই হাজার টাকা দরে।

কাজল চন্দ্র রায়ের বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরের খানপাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম ঝন্ডু চন্দ্র রায়।

আরো পড়ুন:

সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রংপুর নগরীর লালবাগ এলাকায় কাঁধে করে মাছ বিক্রি করতে দেখা যায় কাজলকে। এসময় কথা হলে তিনি বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে কুড়িগ্রামের ধরলা নদীতে জেলেদের জালে বড় আকৃতির চিতল ও বোয়াল মাছ ধরা পড়ে। ওইসব মাছ কিনে ভোরেই রওনা হই রংপুরের দিকে। আজও এসেছি। গত ৩৫ বছর ধরে এই আসা যাওয়া আমার।’ 

মাছের ওজন ও দামের কথা জিজ্ঞেস করলে কাজল বলেন, ‘আমার কাছে থাকা একেকটি চিতলের ওজন ৮ থেকে ১০ কেজি। একটি বোয়াল আছে সেটির ওজন ১৩ কেজি। বোয়াল ও চিতলের একই দাম। প্রতি কেজি দুই হাজর টাকা।’ 

মাছ বিক্রির টাকায় সংসার চালান কাজল

দামি এই মাছের ক্রেতা কোনো শ্রেণির মানুষ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রেতা দেখলে বুঝতে পারি বাপু কারা এই মাছ কিনতে পরবে। প্রায় এক মণ ওজনের এই চারটি মাছ নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় শত শত মানুষ অযথা আমারে দাঁড় করিয়ে দাম জিজ্ঞেস করে। তারা ছবিও তোলে। কষ্ট হলেও বলতে হয় এবং দাঁড়াইতে হয়। এই কষ্ট করতে করতে এখন সয়ে গেছি বাবা। তবে আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় এই মাছ কিনে নেয় বড় বড় চাকরিজীবী ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও বড় বিল্ডিংয়ে থাকেন এমন নারীরাও দুই তিনজন মিলে একটি মাছ কিনে নেন। পরে তারা মাছটি কেটে ভাগ করে নেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘যারা এই মাছ কিনতে পারবেন তাদের খোঁজে সকাল থেক বিকেল পর্যন্ত পুরো নগরী ঘুরে বেড়াই। অনেকে আমার ফোন নম্বর নিয়েছে তারাও ফোন করে মাছের অর্ডার দেন।’

চারটি করে মাছ কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর তীর থেকে জেলেদের কাছে সর্বোচ্চ হাকডাকে কিনে এনে বিক্রি করে দিনে  দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা আয় হয় বলেও জানান কাজল। 

তিনি বলেন, ‘এই মাছ বিক্রির টাকায় আমিসহ আমার পরিবারের সবার আহার জোটে।’ 

৩৫ বছর ধরে কুড়িগ্রাম থেকে মাছ নিয়ে কাজল রংপুরে আসেন বিক্রি করতে।

লালবাগ থেকে খামাড় মোড়ের দিকে যেতে দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী সামছুল ও আমিন কাজলকে দাঁড় করিয়ে চিতল মাছ দাম করলেন ১ হাজার টাকা কেজি। এতে রাজি হলেন না কাজল। 

খামাড়ে মোড়ের এক মুদির দোকানদার বেল্লাল মিয়া বলেন, ‘আমি ৮-১০ বছর ধরে দেখি লোকটি এই পথ মাছ বিক্রি করে চলেছেন। আমার দোকনের সামনে দুইমাস আগে এক ব্যক্তি তার নাম ধরে ডেকে বসিয়ে মাছ কিনে নিয়ে গেছে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে। ধরলার এই মাছ অনেক স্বাদের সেই ক্রেতা লোকটিই বলেছিলেন।’

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়