উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানোর নতুন উপায়

নীরব ঘাতক রোগ হিসেবে পরিচিত উচ্চ রক্তচাপ। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও বিপুল সংখ্যক মানুষ উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগে থাকেন।
একটি নতুন গবেষণা বলছে, বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনের উৎস খেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমতে পারে। গবেষণাটি সম্প্রতি হাইপারটেনশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। চীনের সাউদার্ন মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ১২,১১৭ জন প্রাপ্তবয়স্কের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন। ছয় বছর ধরে চলমান এই গবেষণায় খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে রক্তচাপের অবস্থা তুলনা করা হয়েছে।
গবেষণায় প্রোটিনের উৎসকে আটটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে: গোটা শস্য, পরিশোধিত শস্য, প্রক্রিয়াজাত মাংস, অপ্রক্রিয়াজাত মাংস, হাঁস-মুরগির মাংস, সামুদ্রিক খাবার, ডিম এবং বিচি ও ডাল জাতীয় খাবার (লেগিউম)। দেখা গেছে- যেসব লোকেরা চার বা ততোধিক প্রোটিনের উৎস খেয়েছেন তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি সেসব লোকেদের তুলনায় ৬৬ শতাংশ কম ছিল যারা একটি বা দুইটি উৎস থেকে প্রোটিন খেয়েছেন।
বেশি প্রোটিন যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এমনটাও নয়, বলেন গবেষণা লেখক জিয়ানহুই কিন। গবেষণা থেকে ধারণা পাওয়া গেছে, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন খেতে হবে। গবেষকরা দেখেছেন- যারা খুব বেশি ও খুব অল্প প্রোটিন খেয়েছেন তাদের তুলনায় পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন খেয়েছেন এমন লোকেদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কম ছিল। ডা. কিন বলেন, ‘কেবল একটি উৎসের প্রোটিন না খেয়ে বিভিন্ন উৎসের প্রোটিন খেলে উচ্চ রক্তচাপ রোগ প্রতিরোধ হতে পারে।’
প্রোটিনে যত বৈচিত্র্য আনবেন তত বেশি পুষ্টি পাবেন, যেমন- ফাইবার, ভিটামিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। নতুন এই গবেষণার বড় সীমাবদ্ধতা হলো এটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা। এটি শুধু ধারণা দিয়েছে। প্রোটিনের বৈচিত্রতায় উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ হয় কিনা তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে।
গবেষকদের তাত্ত্বিক মত হলো, কেউ রক্তচাপকে স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রাখতে প্রোটিনের বিভিন্ন উৎস খেতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের খাবার বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিও যুগিয়ে থাকে, যা শরীরের অন্যান্য উপকারেও আসে।
আগের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোটিনের উদ্ভিজ্জ উৎস যেমন বিচি/ডাল জাতীয় খাবার ও গোটা শস্যের মতো খাবার বেশি করে খেলে হার্টের স্বাস্থ্য উপকৃত হয়, যেখানে রক্তচাপও অন্তর্ভুক্ত।
কিছু সাম্প্রতিক গবেষণা ধারণা দিয়েছে যে, ডিম ও মাছের মতো প্রোটিনের প্রাণীজ উৎসও রক্তচাপের জন্য উপকারী। মাছ হলো ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের চমৎকার উৎস এবং ডিম থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়, যেমন- ভিটামিন ডি।পরিমিত পরিমাণে মাংস খেলেও রক্তচাপ অনুকূলে থাকে। প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, তাই যথাসম্ভব অপ্রক্রিয়াজাত ও চর্বিহীন মাংস খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি হাঁস-মুরগির মাংসও খেতে পারেন।
তথ্যসূত্র: ইনসাইডার
/ফিরোজ/
আরো পড়ুন