ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নাদাল-ফেদেরার এক বিন্দুতে, মেয়েদের ইতিহাস

ফাহিম হোসেন মাজনুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩২, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৩:৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১
নাদাল-ফেদেরার এক বিন্দুতে, মেয়েদের ইতিহাস

বলতে গেলে ২০২০ সালটা নিজের করে নিয়েছে করোনাভাইরাস। তার মধ্যে থেমে থেমে জীবন চলেছে আপন গতিতে, যেখানে ছিল না সতেজতা। প্রাণচাঞ্চল্য ছিল না ক্রীড়াঙ্গনেও। যদিও করোনা আতঙ্ক নিয়েই খেলোয়াড়রা মাঠে নেমেছিলেন সাফল্যের ক্ষুধা নিয়ে। ব্যতিক্রম ছিল না টেনিস কোর্টও। এই বছর কেমন ছিল র‌্যাকেট আর টেনিস বলের লড়াই, তা-ই নিয়েই ফিরে দেখা ২০২০-  

জোকোভিচের অষ্টম

তখনও করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা ছড়ায়নি। নোভাক জোকোভিচ নেমেছিলেন তার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শিরোপা ধরে রাখার মিশনে। ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন রজার ফেদেরারকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে পান অস্ট্রিয়ান প্রতিপক্ষ ডোমিনিক থিয়েমকে।

প্রথম সেট জিতে নেন। কিন্তু পরের দুই সেটে হেরে যেন ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই শিরোপা খোঁয়াতে বসেছিলেন সার্ব তারকা। কারণ আগের যে সাতটি ফাইনালে দুটি সেট হেরেছিলেন, তা কখনও জিততে পারেননি। এবার ভিন্ন রূপে হাজির জোকোভিচ। শেষ দুটি সেটে দুর্দান্ত খেলে অষ্টমবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন হন এবং রাফায়েল নাদালের কাছ থেকে কেড়ে নেন র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান। ওটা ছিল জোকোভিচের ১৭তম গ্র্যান্ড স্লাম ট্রফি।

শারাপোভার অবসর

২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে নির্বাসিত হন পাঁচটি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী মারিয়া শারাপোভা। র‌াশিয়ান এই গ্ল্যামার গার্ল ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে পরের বছর এপ্রিলে ফিরলেও কোর্টে সুবিধা করতে পারেননি। ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে খেলতে খেলতে ক্লান্ত শারাপোভা এ বছরের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডে বিদায় নেন। টানা তৃতীয় গ্র্যান্ড স্লাম প্রথম রাউন্ডেই শেষ হওয়ার হতাশা থেকে ৩২ বছর বয়সে বিদায় জানান টেনিসকে।

উইম্বলডনে করোনার থাবা

করোনাভাইরাসে জুবুথুবু বিশ্বে একের পর এক টুর্নামেন্ট স্থগিতের খবর আসতে থাকে। বাদ পড়েনি বছরের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম উইম্বলডনও। ১ এপ্রিল এক ঘোষণায় জানানো হয়, এ বছর হবে না অল ইংল্যান্ড ক্লাবের টুর্নামেন্টটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবার বাতিল হয় উইম্বলডন।

নাদাল-ফেদেরারহীন ইউএস ওপেন

ইনজুরিতে রজার ফেদেরার, আর করোনা আতঙ্ক ও ঠাসা সূচিতে রাফায়েল নাদাল সরে দাঁড়ান এই বছরের ইউএস ওপেন থেকে। তাতে ১৯৯৯ সালের পর প্রথমবার কোনও গ্র্যান্ড স্লামে দেখা যায়নি ফেদেরার-নাদালের কাউকেই। তাতে চতুর্থবার ইউএস ওপেন জয়ের স্বপ্ন ভালোভাবে দেখতে শুরু করেন জোকোভিচ। কিন্তু কপাল খারাপ ছিল তার। চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে এক লাইন অফিসিয়ালের গলায় দুর্ঘটনাবশত বল মেরে ডিসকোয়ালিফাইড হন সার্ব তারকা।

বিগ থ্রির কেউ না থাকার সুযোগে তিনবার গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালে খেলে ব্যর্থ হওয়া ডোমিনিক থিয়েম ঘরে তোলেন প্রথম বড় শিরোপা। ফাইনালে প্রথম দুই সেট হারলেও আলেক্সান্দার জভেরেভের বিপক্ষে জিতে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হন তিনি।

ফেদেরারের পাশে নাদাল

প্রথা ভেঙে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্লাম হিসেবে এ বছর কোর্টে গড়ায় ফ্রেঞ্চ ওপেন। আর লাল দুর্গে নিজের রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য দারুণ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন রাফায়েল নাদাল। যার প্রতিফলন ঘটে তার পারফরম্যান্সে। পুরো টুর্নামেন্টে একটি সেটও হারেননি স্প্যানিশ তারকা, যা তার ক্যারিয়ারে চতুর্থবার এবং ফ্রেঞ্চ ওপেনের ইতিহাসে প্রথম।

রোলাঁ গারোর ফাইনালে নাদালের কাছে পাত্তাই পাননি জোকোভিচ। টানা চতুর্থ ও ত্রয়োদশ ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে নেন স্প্যানিশ তারকা। তার চেয়েও বড় অর্জন- সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী হিসেবে নাদাল বসেন ফেদেরারের পাশে। দুজনেই জিতেছেন ২০টি করে গ্র্যান্ড স্লাম।

মেয়েদের টেনিসে উড়েছে নতুনের নিশান

মেয়েদের টেনিসে এ বছরের গ্র্যান্ড স্লামে দেখা গেছে একাধিক নতুন মুখ। আমেরিকান সোফিয়া কেনিনের হাতে ওঠে বছর শুরুর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ট্রফি। ২০০২ সালে সেরেনা উইলিয়ামসের পর কনিষ্ঠতম আমেরিকান হিসেবে কোনও গ্র্যান্ড স্লাম জেতেন ২১ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়।

ফ্রেঞ্চ ওপেনেও ফাইনালের মঞ্চে পা রাখেন সোফিয়া। কিন্তু তাকে হটিয়ে পোল্যান্ডের টেনিস ইতিহাসে প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জেতেন ইগা সিয়াটেক। এই বছরের আরেক বড় প্রতিযোগিতা ইউএস ওপেনের ফাইনালে ভিক্টোরিয়া আজারাঙ্কাকে হারিয়ে টানা তিন বছর তৃতীয় গ্র্যান্ড স্লাম জেতেন নাওমি ওসাকা। ২০১৮ সালে প্রথম ইউএস ওপেন জিতেছিলেন তিনি। পরের বছরও শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে।

ঢাকা/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়