ঢাকা     শনিবার   ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পরিণত জাকিরে আস্থা সাকিবের, জয়কেও করছেন না চোখের আড়াল

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২০, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৮:২৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
পরিণত জাকিরে আস্থা সাকিবের, জয়কেও করছেন না চোখের আড়াল

এক সেঞ্চুরি ও এক হাফ সেঞ্চুরিতে ভারতের বিপক্ষে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ রাঙিয়েছেন জাকির হাসান। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে সিলেটের এ ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছিলেন জাতীয় দলে। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি তুলে নিজের সামর্থ‌্যের জানান দিয়েছেন ভালোভাবে। ঢাকায় ফিফটি তুলে নির্ভরতার ছবি এঁকেছেন।

টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে জাকিরের ওপর নজর ছিল দলের সবার। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো তরুণ ওপেনারের মাঝে তামিম ইকবালের ছায়া খুঁজে পেয়েছেন। তার শট নির্বাচন, খেলার ধরণ অনেকটা দেশসেরা ওপেনারের মতো বলেই বলেছিলেন। তামিম ইকবাল না থাকায় ওপেনিং নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

আরো পড়ুন:

আবার তার সঙ্গীর খোঁজেও দুশ্চিন্তা করতে হয়। জাকির হাসান সেই শূন‌্যস্থান পূরণ করতে পারবেন বলেই বিশ্বাস বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের, ‘ওকে (জাকির) খুব পরিণত মনে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, খুব ভালো টেম্পারমেন্ট আছে, টেস্ট ম্যাচের জন্য আদর্শ, যে ধরনের ব্যাটসম্যান আমরা খুঁজছিলাম। আমার মনে হয়, ও একটা বড় শূন্যস্থান পূরণ করার মতো সামর্থ্য রাখে। তবে এটা কেবলই শুরু। আশা করি, বাংলাদেশের হয়ে এমন ভালো ভালো ইনিংস ও খেলবে।’

জাকিরের ওপর সাকিব আস্থা রাখার পেছনে বড় কারণ, অভিজ্ঞতা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ঊনসত্তরটি ম‌্যাচ খেলে জাকির ঢুকেছেন জাতীয় দলে। সঙ্গে এইচপি, ‘এ’ দলেও ছিলেন বাঁহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে, লড়াই করে জাকির পৌঁছেছেন গন্তব‌্যে।

সেজন‌্য সাকিবের ভরসা ২৪ বছর বয়সী ওপেনারকে ঘিরে, ‘জাকিরের জন্য একটা সুবিধা হচ্ছে, ও কিন্তু নতুন ক্রিকেটার নয়। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ৭০টি ম্যাচ খেলেছে। খেলার মধ্যে ওই ব্যাপারটি দেখা যায়। যখন ১৯-২০ বছরের একটি ছেলে খেলবে, তার খেলার যে ধরন, আর একটা ৩০ বছরের ছেলে তার খেলার ধরণ অন‌্যরকম। জাতীয় দলের আশপাশ দিয়ে ও ছিল সবসময়, ৬০-৭০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে আসা ক্রিকেটার, তার টেম্পারমেন্ট দেখলেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন। আমি যেটা চাচ্ছি, এরকম ক্রিকেটাররা যদি আসে, ৫-৬-১০ বছর যে সার্ভিস দেবে বাংলাদেশকে, তাদের ভালো সার্ভিস দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’

জাকিরের আগে অমিত সম্ভাবনা নিয়ে এসেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। ভালো পারফর্মও করেছিলেন শুরুতে। কিন্তু শেষ দুই-তিন টেস্টে ভালো করতে না পারায় তাকে খেলানো হয়নি ভারতের বিপক্ষে। জয় রান পাননি ঘরোয়া ক্রিকেটে, ‘এ’ দলের প্রতিযোগিতায়ও।

জয় চোখের আড়াল হয়নি তা জানিয়েছেন সাকিব, ‘জয় কিন্তু প্রক্রিয়ার বাইরে নয়। অবশ্যই প্রক্রিয়ায় আছে। যখন ও ‘এ’ দলে রান পাওয়া শুরু করবে, ওর জন্য সুযোগ আসবে তখন, আমি চাই ও যেন ভালোভাবে নিতে পারে সুযোগটা, যেন ওর ক্যারিয়ারেও এরকম হয় যে ১০-১২-১৫ বছর খেলবে বাংলাদেশ দলে, ১০০ টেস্ট খেলবে।’

দীর্ঘ সাধনায় মেলে কাঙ্খিত সাফল‌্য। সামনে প্রত‌্যেককেই নতুন নতুন চ‌্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে ভালো করতে হতে হবে আরও শাণিত। এজন‌্য সাকিব জোর দিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে দুটি প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট হয়। একটি জাতীয় ক্রিকেট লিগ, যেটা দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা। আরেকটি বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল)। যেটা জাতীয় ক্রিকেট লিগের সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজন করা হয়।

জাতীয় লিগে সর্বোচ্চ ছয়টি, বিসিএলে সর্বোচ্চ চারটি ম‌্যাচ খেলার সুযোগ পান ক্রিকেটাররা। সাকিব আরও বেশি ম‌্যাচ আয়োজনের কথাও বললেন গণমাধ‌্যমে, ‘প্রথম শ্রেণির ম্যাচ আমাদের আরও বেশি খেলাতে হবে, যদি আমরা টেস্ট ক্রিকেটে সিরিয়াসলি উন্নতি করতে চাই। একজন ক্রিকেটারের ৫-৭-১০ ম্যাচের যে অভিজ্ঞতা, আর ৫০-৬০-৭০ ম্যাচ খেলার যে অভিজ্ঞতা, এটা অনেক পার্থক্য গড়ে দেয়। আমি নিশ্চিত, ভারতের যে ক্রিকেটাররা আসছে, ওদের প্রায় সবার এক’শ-এর ওপরে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা আছে। যেখানে আমিই হয়তো এতদিন ধরে আছি… হয়তো আমি অনেক দিন ঘরোয়া খেলি না, তবে অন্যান্য যারা খেলে, একটা মৌসুমে কয়টা ম্যাচ খেলে? ৬টা থেকে ৮টা হয়তো। যদি এরকম খেলে, ১০ বছরে হবে ৮০টা ম্যাচ। আমরা যদি ৮০টা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ কোনোভাবে ৫ বছরে খেলতে পারি, আমার কাছে মনে হয় অনেক ভালো টেস্ট ক্রিকেটার বের হবে।’

ইয়াসিন/আমিনুল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়