জাতীয় দলে ফেরার জেদ থেকেই অদম্য রনি তালুকদার
![জাতীয় দলে ফেরার জেদ থেকেই অদম্য রনি তালুকদার জাতীয় দলে ফেরার জেদ থেকেই অদম্য রনি তালুকদার](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2023January/332563439_765820247940716_1029281323879670813_n-2303021138.jpg)
এক-দুটি নয়, গুণে গুণে আট বছরর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন পেয়েছেন রনি তালুকদার। বাংলাদেশ প্রিমিয়ায়র লিগে (বিপিএল) দ্যুতি ছড়িয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন ডানহাতি এই বিস্ফোররক ব্যাটসম্যান।
লম্বা সময়ে অনেক উত্থান পতন গেছে, হারিয়েছেন প্রিয় বাবাকে। কখনো পারফরম্যান্স এসেছে, কখনো আসেনি। কিন্তু কখনো হাল ছাড়েননি, হারাননি মনোবল রনি তালুকদার। জাতীয় দলে ফেরার এক লক্ষ্যে নিজেকে আবদ্ধ থেকে অধ্যাবসায় করে গেছেন।
এবার বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ১২৯.১৭ স্ট্রাইক রেটে ৪২৫ রান করেছেন। দলকে শিরোপা জেতাতে পারেননি রনি। কিন্তু নিজের লক্ষ্যে ঠিকই পৌঁছেছেন। জাতীয় দলে ফেরার চিন্তা দীর্ঘদিন ধরেই ঘুরছিল তার মাথায়। এবারের বিপিএলকে লক্ষ্য বানিয়েছিলেন। সেখানে দারুণ পারফর্ম করে তার জাতীয় দলে ফেরার দরজা খুলে গেছে।
রাইজিংবিডি-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে রনি তার দীর্ঘ অধ্যবসায়ের পর স্বপ্ন পূরণের গল্প শুনিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইফুল ইসলাম রিয়াদ।
আট বছর পর দলে ফিরেছেন…
রনি: অনেক ভালো লাগছে (হাসি) ।
ফেরার খবরটা শুরুতে কার থেকে শুনেছেন?
রনি: বাশার ভাইয়ের (হাবিবুল বাশার সুমন) কাছ থেকে পেয়েছি। বাশার ভাই ফোন দিয়ে বলেছে, ‘জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিস, ভালো খেলিস।’ শুভকামনা জানিয়েছে আর কি।
একটু বলবেন জাতীয় দলের বাইরে থেকেও কিভাবে নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য ফিট রেখেছেন? প্রক্রিয়াটা কি ছিল?
রনি: একজন খেলোয়াড় হিসেবে অবশ্যই আপনাকে ফিটনেস ঠিক রাখতে হবে। যদি খেলতেই হয় তাহলে আমাকে ফিট থাকতেই হবে। অনুশীলন করতে হবে। এই জিনিসগুলো আমি ধরে রেখেছি। কখনো সফল হইছি, কখনও সফল হইনি। ভালো খারাপের মধ্যে দিয়ে গেছি।
কেউ আপনাকে এ ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে?
রনি: গত বছর যেটা হয়েছে, আমি তো ইমরান স্যারের কাছে অনুশীলন করি ওনাকে আমার ব্যাটিংয়ের ভিডিও করে দেখাই। আমার যা সমস্যা তা ওনার সঙ্গে শেয়ার করি। এরপর স্যার কোনো কিছু ভুল থাকলে শুধরে দেন, টিপস দেন নানারকম। এইবার আমি মাইন্ড সেট আপ আগে ঠিক করছি। তাড়াহুড়ো করি নাই।
মানসিকভাবে নিজেকে কিভাবে ঠিক রেখেছেন?
রনি: বিশেষভাবে মনের মধ্যে কিছু ছিল না। অনুশীলন করে গেছি। প্রতিটা সংস্করণ অনুযায়ী অনুশীলন করছি এইবার। জাতীয় লিগে আমি এতোটা ভালো খেলিনি। তারপর বিপিএল আসলো, সেইভাবে অনুশীলন করছি। ফরম্যাট অনুযায়ী অনুশীলন করছি। প্রথমদিকে যেটা করেছি, মাইন্ড সেট ঠিক করেছি। কিভাবে বড় কিছু অর্জন করা যায়।
কোনো লক্ষ্য ঠিক করে এগিয়েছিলেন?
রনি: লক্ষ্য ছিল জাতীয় দল। একটা লক্ষ্য ছিল বলেই আমি পেরেছি। একটা খেলোয়াড যদি লক্ষ্য ঠিক না করে শুধু খেলে যায় তা হলে হবে না। ওই সময় দেখা যায় অনেকেই আগ্রহ হারায় ফেলে। আমাকে সিনিয়ররা অনেক সমর্থন দিয়েছে। বন্ধু বান্ধব অনেক সমর্থন করছে। পরিবার আমাকে সমর্থন করছে। সবাই বলতো এইভাবে খেলো, টি-টোয়েন্টিতে আরও একটা সুযোগ আসবে। ওনারা অনেক সাপোর্ট করতো। আমার পরিবারের সবসময় বলতো তুই চেষ্টা কর। তুই পারবি। ভালো খেলার চেষ্টা কর। আর ফিট তো থাকতেই হবে খেলোয়াড় হিসেবে।
এ সময়ে কখনও ভেঙে পড়েছেন?
রনি: না এমন কিছু (ভেঙে পড়া মানসিকতা) আসে নাই আমার মধ্যে। আমি যাই খেলি, প্রিমিয়ার লিগে বড় বড় দলে খেলি। প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি হয়েছে, সেখানেও কিন্তু প্রাইম ব্যাংকে খেলছি। আমি কিন্তু তিনটা ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছি সেখানে। আমার মধ্যে আসলে কখনও ভেঙে পড়া মানসিকতা আসে নাই। বললাম না আমার পরিবার অনেক সমর্থন করেছে।
জাতীয় দলে ফিরে লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। এবার লক্ষ্য কি থাকবে?
রনি: দেখেন আমি খেলি দলের জন্য। আমি খেলাটা কখনও নিজের জন্য খেলি না। আমি চিন্তা করি, আমি পারফর্ম করব যেন আমার দল জিততে পারে। আমার খেলার ধরনটাই এইরকম থাকে। জাতীয় দলেও এইভাবেই খেলব। আমি যদি ১০ রান করি, সেটা যেন জয়ের জন্য থাকে।
৮ বছর আগে সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি, এবার?
রনি: ধরে রাখার জন্য কাজ করতে হবে। যদি সুযোগ আসে, আমি চেষ্টা করব, ম্যাচ জয়ের জন্য… বললাম না, ১০ রানও যদি করতে হয়, সেটা করব। দলের জন্য আমি সবকিছুই করতে চাই।
আপনি টি-টোয়েন্টিতে ডাক পেয়েছেন, টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান থেকে কোনো বার্তা পেয়েছেন কি না?
রনি: সাকিব ভাই অনেক সমর্থন করে, অধিনায়ক, বড় ভাই ও খেলোয়াড় হিসেবে উনি সবসময় পজেটিভ কথা বলে। ওনার কাছ থেকে আমি কখনই নেগেটিভ কথা শুনিনি। আমি ওনার সঙ্গে ২০০৮-০৯ থেকে খেলি আবাহনীতে। উনি সিনিয়র আমার। ওনার কাছ থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছি। বিপিএলে ভালো করার পর শুধু বলেছে আমাকে বলেছে ‘ভালো খেলে যাও।’
ঢাকা/রিয়াদ/ইয়াসিন
আরো পড়ুন