চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের যাত্রা
ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ডামডোল শুরু হয়ে গিয়েছে গতকালই। আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) দ্বিতীয় দিনেই মাঠে নামছে টাইগাররা। গ্রুপ ‘এ’তে ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে নজর দেওয়া যাক টাইগারদের প্রস্তুতির দিকে।
তিক্ত সত্যটা হচ্ছে টুর্নামেন্টের বাকি দল গুলোর তুলনায় বাংলাদেশের প্রস্তুতিটাই সবচেয়ে কম। অন্য দলগুলো যেখানে পরিকল্পনা করে এগিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেবল বিপিএল। ভারত-ইংল্যান্ড ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে। স্বাগতিক পাকিস্তান ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করেছে নিউ জিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে শ্রীলঙ্কার মাটিতে এসে। কেবল আফগানিস্তান আর বাংলাদেশই কোন সংস্করণেই মাঠে নামেনি প্রস্তুতির জন্য।
এখন পর্যন্ত আটটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর হয়েছিল। যেখানে বাংলাদেশ সবগুলো খেলার সুযোগ পায়নি। অন্যদিকে ক্রিকেট টি-টোয়েন্টি যুগে প্রবেশ করার পর ধীরে-ধীরে কমতে শুরু করেছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জৌলুস। তাই শেষ ১৫ বছরে কেবল দুই বারই আয়োজিত হয়েছিল আইসিসির এই বৈশ্বিক আসর।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ কখনোই ভালো করেনি। ঘরের মাঠে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা হয়েছিল, বাংলাদেশ সেখানে কোয়ালিফাই করেনি। এরপর কেনিয়াতে অনুষ্ঠিত ২০০০ সালের আসরে বাংলাদেশ প্রি কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। ২০০২ সালের আসর শ্রীলঙ্কায় গড়ায়, সেখানে গ্রুপে স্টেজ থেকে বাদ পড়ে টাইগাররা।
এরপর ২০০৪ সালেও গ্রুপ স্টেজ থেকে বাদ পড়ে হাবিবুল বাশারের বাংলাদেশ। ভারতে অনুষ্ঠিত ২০০৬ সালের আসরেও গ্রুপ স্টেজ থেকে ছিটকে যেতে হয় টাইগারদের। তবে সেবার একটা ম্যাচ জিতেছিল লাল সবুজের দল; দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেটাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের একমাত্র জয়।
ভারতের আসরটির পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দুই বছরের পরিবর্তে ৪ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় ৩ বার। তবে ২০০৯ সাল থেকে টুর্নামেন্ট আয়োজিত হচ্ছে র্যঙ্কিংয়ের সেরা ৮ দল নিয়ে। র্যঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকার কারণে বাংলাদেশ ২০০৯ আর ২০১৩ সালের দুই আসরে অংশগ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়।
এরপরই ধীরে-ধীরে ওয়ানডে সংস্করণে বদলে যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট। ২০১৭ সালের ইংল্যান্ড আসরে বাংলাদেশ ব্যাট-বলে সবচেয়ে উজ্জল পারফরম্যান্স করে নিজেদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে। যদিও মাত্র একটা ম্যাচ জিতে শেষ চারে উঠে টাইগাররা। তবেও প্রতি ম্যাচেই তিনশ ছাড়ানো বা কাছাকাছি রান করতে পেরেছিল মাশরাফির বিন মর্তুজার দল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা বৃষ্টির গর্ভে যাওয়ায়, ১ পয়েন্ট পেয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়টা অবিস্মরণীয়। এই ম্যাচটিকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসের বিশেষ এক ম্যাচ হিসেবে চিহ্নিত করে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
ভারতের বিপক্ষে সেমি ফাইনাল হেরে শেষ হয় বাংলাদেশের স্বপ্নের ২০১৭ সালের আসরটি। সুদীর্ঘ ৮ বছর পর আজ আবারও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেই ভারতেরই মুখোমুখি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ক্রিকেট কতটুকু এগিয়েছে তার পরীক্ষা হবে এই আসরের মাধ্যমে।
ঢাকা/নাভিদ