বিশ্বকাপের দল পরিচিতি : ওয়েস্ট ইন্ডিজ
নেছার || রাইজিংবিডি.কম
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল
নেছার উদ্দিন : ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য ১৪টি দলের পরিচিতি নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের আলোচ্য দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবিয়ান দলটির খুঁটিনাটি তুলে ধরা হলো-
যেভাবে বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ানরা : টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার টিকিট পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বিশ্বকাপে তাদের অতীত ইতিহাস : ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের প্রথম দুটি বিশ্বকাপ জিতে ক্রিকেট-বিশ্বে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯৮৩ সালেও তারা দোর্দণ্ড প্রতাপের সঙ্গেই ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতের কাছে নতজানু হয় ক্যারিবিয়ানদের।
ক্রিকেট সাম্রাজ্যে তাদের পতন সেখানেই। ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপে তারা প্রথম রাউন্ডের গণ্ডি পেরুতে পারেনি। সেবার গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ খেলে সবকটিতে হেরে দেশের বিমান ধরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯৯২ সালেও তাদের একই পরিণতি। রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে ষষ্ঠ স্থানে থেকে অস্ট্রেলিয়া ছেড়েছিলেন ক্যারিবিয়ানরা। আট ম্যাচ খেলে চারটি জয় পেয়েছিলেন তারা।
১৯৯৬ সালে এশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অবশ্য ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু তাদের দৌড় থেমে যায় শিরোপা থেকে দুই ধাপ দূরে, অর্থাৎ সেমিফাইনালেই।
১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপে ঘটে করুণ পরিণতি। প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয়।
২০০৭ সালে তাদের ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ। কিন্তু নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়েও ভক্তদের তেমন ভালো কিছু উপহার দিতে পারেননি গেইলরা। সুপার সিক্স থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয় তাদের।
২০১১ বিশ্বকাপে অবশ্য কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে লজ্জাজনক হার নিয়েই বিদায় ঘণ্টা বাজে ক্যারিবিয়ানদের।
বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তি : দলে বেশ কয়েকজন হার্ড-হিটার ব্যাটসম্যান আছেন। যারা যে কোনো দলের বিপক্ষে ঝড় তুলতে পারেন। তাদের মধ্যে ক্রিস গেইল, মারলন স্যামুয়েলস উল্লেখযোগ্য। বল হাতে অপ্রতিরোধ্য উঠবেন কেমার রোচ আন্দ্রে রাসেল, ড্যারেন স্যামি, জেরম টেলররা! এই পেস বোলিংই তাদের প্রধান হাতিয়ার। যা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের পিচের জন্য বড়ই জুতসই।
বিশ্বকাপে দুর্বলতা : ক্যারিবিয়ানদের দলীয় কোন্দল আসন্ন বিশ্বকাপে তাদের বেশ ভোগাবে। স্কোয়াডে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ানদের পিছিয়ে রাখবে।
এ ছাড়া দলের অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের বয়স মাত্র ২৩ বছর। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা তার খুবই কম। যা ক্যারিবিয়ানদের ভোগাতে পারে।
বিশ্বকাপে বাজির ঘোড়া : আসন্ন বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ানদের বাজির ঘোড়া ক্রিস গেইল। তার ওপর চোখ রাখবেন ভক্তরা। প্রতিপক্ষের আতঙ্কের কারণ হবেন তিনি। আসন্ন বিশ্বকাপে গেইল চার-ছক্কার বন্যায় ভাসাবেন, এমন প্রত্যাশা থাকবে ভক্তদের। যা বিশ্বকাপকে করে তুলবে আরো আকর্ষণীয়!
বিশ্বকাপ খেলেছে : ১০ বার
শিরোপা : দুই বার
আইসিসি র্যাংকিং : অষ্টম
বিশ্বকাপের অধিনায়ক : জেসন হোল্ডার
বিশ্বকাপের কোচ : রিচি রিচার্ডসন
বিশ্বকাপের গ্রুপ : আসন্ন বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পড়েছে ‘বি’ গ্রুপে।
বিশ্বকাপে তাদের প্রতিপক্ষ : ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেলতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
সেরা পারফরম্যান্স : প্রথম দুটি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ঠিক পরের আসরেও তারা স্বপ্নের ফাইনালে উঠেছিলেন ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু ভারতের কাছে শিরোপা বিসর্জন দেন তারা।
প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার : ভিভ রিচার্ডস, ব্রায়ান লারা, কার্টলি অ্যামব্রোস, গ্যারি সোর্বাস প্রমুখ।
আসন্ন বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ানদের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড : জেসন হোল্ডার, মারলন স্যামুয়েলস, সুলাইমান বেন, ড্যারেন ব্রাভো, জনাথন কার্টার, সেলডন কটরেল, ক্রিস গেইল, নিকিতা মিলার, দিনেশ রামদিন, কেমার রোচ, আন্দ্রে রাসেল, ড্যারেন স্যামি, লেন্ডন সিমন্স, ডোয়াইন স্মিথ ও জেরম টেলর।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/নেছার/নওশের
রাইজিংবিডি.কম