ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

প্রধান শিক্ষককে পেটালেন স্কুল কমিটির সভাপতি

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৪, ২১ এপ্রিল ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রধান শিক্ষককে পেটালেন স্কুল কমিটির সভাপতি

আটক তপন কুমার ঘোষ

মাগুরা প্রতিনিধি : স্কুলের নারী শিক্ষকদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণের প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন কমিটির সভাপতি। তার ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষকদের বিদ্যালয়ের কক্ষে আটকে রেখে তালা মেরে চাবি নিয়ে চলে যান তিনি। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

 

আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে  মাগুরার মহম্মদপুরের বাবুখালীর পাড়ুয়ারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

 

হামলাকারী ও ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি তপন কুমার ঘোষকে পুলিশ দুটি ধারালো অস্ত্রসহ আটক করেছে। প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী ফকিরকে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তপন স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে প্রধান শিক্ষক জানান। তিনি পার্শ্ববর্তী রামকৃষ্ণপুর গ্রামের অধির কুমার ঘোষের ছেলে।

 

হাসপাতালে ভর্তি প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী ফকির জানান, পাড়ুয়ারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি তপন কুমার ঘোষ বিদ্যালয়ে এসে দুই নারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন ও কাজলরেখার সঙ্গে প্রায়ই অশ্লীল গালাগাল ও কুরুচিপূর্ণ আচরণ করতেন।

 

ঘটনার সময় বেলা ৩টার দিকে সভাপতি তপন স্কুলে এসে শিক্ষক কাজলরেখাকে গালাগাল করতে থাকেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ অন্য তিনজন শিক্ষক তাকে বাধা দেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তিনি ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রধানশিক্ষকের ওপর হামলা চালান। তার হামলায় প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী গুরুতর আহত হন।

 

একপর্যায়ে তপন সকল শিক্ষককে স্কুলের একটি কক্ষে আটকে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চাবি নিযে চলে যান। এ সময় স্কুলের দুই নারী শিক্ষক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা বই-খাতা নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘণ্টা খানেক পর খবর পেয়ে এলাকার লোকজন বাবুখালী পুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতায় শিক্ষকদের মুক্ত করেন। পরে তপন কুমার ঘোষকে পুলিশ দুটি ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

 

এদিকে অভিযুক্ত তপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর সঙ্গে জমি নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।’

 

বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক কাজলরেখা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সভাপতি তার সঙ্গে প্রায়ই অশ্লীল আচরণ করতেন। আজও তিনি অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন।’

 

মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোকছেদুল মোমিন বলে, ‘প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে বেদম মারধর করা হয়েছে।’

 

মহম্মদপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, ‘এ বিষয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

 

মহম্মদপুর থানার ওসি আতিয়ার রহমান বলেন, ‘মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ তদন্ত করছে।’

 

 

রাইজিংবিডি/মাগুরা/২১ এপ্রিল ২০১৫/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/কমল কর্মকার

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়