ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পলাশ নিজ গ্রামে সমাহিত

সৌরভ পাটোয়ারী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ২০ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পলাশ নিজ গ্রামে সমাহিত

সৌরভ পাটোয়ারী, সোনাগাজী থেকে ফিরে : ফেনীর মতিউর রহমান পলাশের বাড়ি সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আউরারখিল গ্রামের বাড়িতে রাতভর ছিল বেদনার্ত হাহাকার।

আগের দিন বিকেলে স্বজনরা ঢাকা থেকে তার লাশ বুঝে নিয়ে রাত ১১টায় রওনা হয়ে মঙ্গলবার ভোর রাত সাড়ে ৪টায় বাড়িতে পৌঁছে। সকাল থেকে দূর-দূরান্তের আত্মীয়-স্বজনের ভিড় জমে পলাশের বাড়িতে। উপস্থিত হন সরকারি কর্মকর্তারাও।

সকাল সাড়ে ১০টায় সবাইকে কাঁদিয়ে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পলাশকে সমাহিত করা হয়। মায়ের ইচ্ছামতো শুধু তিনিই নিজের নাড়িছেঁড়া ধনকে দেখলেন শেষবারের মতো। আর কাউকে তার লাশ দেখতে দেওয়া হয়নি। যদিও নিহত পলাশের চেহারা তেমন বিকৃতি ঘটেনি।

সকাল থেকে নিহতের গ্রাম আউরারখিলের বাতাস যে বেদনায় ভারী তা স্বজনদের মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছিল। সবার ভেতর চলছিল এক গভীর শোকের মাতম।

সকাল ১০টায় আলোচিত বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পলাশের (২৯) জানাজায় উপস্থিত ছিলেন সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, বগাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এছহাক খোকন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াছ। এ সময় পরিবারের পক্ষে কথা বলেন পলাশের বড় ভাই শহীদুল্লা মিন্টু ও সেজো ভাই মকসুদুর রহমান মনজু। প্রায় দু’হাজার লোক জনাজায় অংশ নেয়। পলাশের  জানাজা পড়ায় তার আত্মীয় মাওলানা হারুন অর রশিদ।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পলাশের মৃতদেহ মঙ্গলবার ভোর ৪টায় ফেনীর লালপুলে পৌঁছলে সোনাগাজী থানা পুলিশ লাশ বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। এর আগে সোমবার বিকেল ৪টার পর ঢাকায় আর্মি স্টেডিয়ামে সরকারি আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে পলাশের লাশ বুঝে নেয় তার সেজো ভাই মকসুদুর রহমান মনজু ও নেপালে লাশ শনাক্তকারী ভাগ্নে আশরাফুল ইসলাম জীবন। সেখান থেকে পলাশকে নেওয়া হয় তার কর্মস্থল তেজগাঁওয়ে রানার অটোমোবাইল কোম্পানিতে। পলাশ এ প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার ছিল। সেখানে পুনরায় জানাজা ও বিদায়ী শ্রদ্ধার পর ওই বেসরকারি কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পলাশের ভাই, ভাগ্নেসহ সাত স্বজনকে ফেনীতে পৌঁছে দেয়। এ সময় কোম্পানির এক কর্মকর্তাকেও সঙ্গে দেয়।

জানা গেছে, এ কোম্পানির আরো দুজন এ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। লাশবাহী গাড়ির ব্যবস্থাপনায় ছিল বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

মতিউর রহমান পলাশ ঢাকায় বেসরকারি কোম্পানি রানার অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার অফিসার হিসেবে চাকরি করতেন। কোম্পানির প্রয়োজনেই তাকে সেদিন ঢাকা থেকে নেপাল যেতে হয়েছিল। পলাশ আউরারখিল গ্রামের মৃত মো. আমিন উল্ল্যাহ মিয়ার ছেলে। ৫ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে পলাশ সবার ছোট। ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডিপ্লোমা পাস করে ঢাকায় চাকরি নেন। পরিবার সম্প্রতি তার বিয়ের উদ্যোগ নিচ্ছিল।



রাইজিংবিডি/ফেনী/২০ মার্চ ২০১৮/সৌরভ পাটোয়ারী/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়