ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ: ২ জনের যাবজ্জীবন

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৩, ১৯ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ: ২ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : রংপুরে ভুয়া জন্ম দিন পালনের কথা বলে বোরখা পড়ে ছাত্রীনিবাসে ঢুকে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ ও সহায়তার দায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন তাজকীর হোসেন (৩২) এবং দুলালী আকতার (২৮)।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন টাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. জাবিদ হোসেন আসামিদের উপস্থিতিতে রায় দেন। অভিযুক্ত তাজকীর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মাদারপুর খিয়ারছড়া এলাকার হারুন অর রশিদের ছেলে এবং দুলালী একই এলাকার খিয়াচড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে। যাবজ্জীবনের পাশাপাশি আসামিদের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, রংপুর নগরের লালবাগ খামারপাড়া এলাকায় শাকিব টাওয়ারে একটি বেসরকারি ছাত্রীনিবাসে থেকে রংপুর সরকারি কলেজে বাংলা তৃতীয়বর্ষে পড়ালেখা করতেন দুলালী আকতার। কারমাইকেল কলেজে অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র তাজকীর হোসেনকে পছন্দ করতেন দুলালী। কিন্তু তাজকীর হোসেন দুলালীর বান্ধবী কারমাইকেল কলেজের বাংলা তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর কাছে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়। পরবর্তীতে তাজকীর দুলালীর ওই বান্ধবীকে ধর্ষণে সহায়তার শর্তে দুলালীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে রাজি হয়।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের ভুয়া জন্ম দিন পালনের কথা বলে ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর দুপুরে দুলালী তার বান্ধবী ওই ছাত্রীকে তার কক্ষে ডেকে আনেন। শীতকালীন ছুটির কারণে ওই সময় ছাত্রীনিবাসে দুলালী ছাড়া আর কেউ ছিল না। কিছুক্ষণ পর সেখানে বোরখা পড়ে ছাত্রীর ছদ্মবেশে আসেন কারমাইকেল কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স শ্রেণির ছাত্র তাজকীর হোসেন।

দুইজনকে কক্ষে রেখে দুলালী বাইরে বেরিয়ে এসে দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পাহারা দেন। এ সুযোগে তাজকীর ওড়না দিয়ে ছাত্রীর মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেন এবং গোপনে ওই দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করা হয়। ঘটনা কাউকে জানালে ভিডিও চিত্র বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান তাজকীর।

লোকলজ্জার ভয়ে ধর্ষিতা বিষয়টি কাউকে জানাননি। পরের দিন তাজকীর ফের ধর্ষণের প্রস্তাব দিলে নির্যাতিতা ওই ছাত্রী রংপুর কোতোয়ালি থানায় তাজকীর ও দুলালীসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই নজরুল ইসলাম তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৭ মার্চ তাজকীর ও দুলালী আকতারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিলে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।

দীর্ঘ ৭ বছরেরও বেশি সময় মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকার পর রায় ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রফিক হাছনাইন এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল হক প্রামাণিক।



রাইজিংবিডি/রংপুর/১৯ জুলাই ২০১৮/নজরুল মৃধা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়