ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘আমার সোনার বাংলা’ জাতীয় সঙ্গীত হলো যেভাবে..

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ৩ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আমার সোনার বাংলা’ জাতীয় সঙ্গীত হলো যেভাবে..

স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠের পর শপথ পাঠ

শাহ মতিন টিপু: আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি যেদিন জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচিত হলো সেই দিনটি ছিল ৩ মার্চ।

১৯৭১ সালের এইদিনে পল্টনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ অনুষ্ঠানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচিত করা হয়।

এদিন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ও উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে পল্টনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

ইশতেহারে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ অনুষ্ঠানটি ছিল আমাদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন।

ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

একাত্তরে ১ মার্চ থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যে আন্দোলন শুরু হয়, তার রেশ ছড়িয়ে পড়ে দেশের সর্বত্র। দিন যতই গড়াচ্ছিল, স্বাধীনতা প্রশ্নে মুক্তিপাগল বাঙালী জাতির আন্দোলন ততই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৩ মার্চের এই জনসভাতেও স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। সভাতে তিনি না থাকলেও বাঙ্গালির স্বাধীনতার আন্দোলন যেন না থেমে থাকে সেজন্য তিনি সবার প্রতি আহবান জানান।

জনসভায় বঙ্গবন্ধু অহিংস-অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে তাঁর বক্তৃতায় অবিলম্বে সামরিক আইন প্রত্যাহার, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি করেন। আর জনতার উদ্দেশে অফিস-আদালত বন্ধ রেখে, খাজনা-ট্যাক্স না দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি মরে গেলেও ৭কোটি মানুষ দেখবে দেশ সত্যিকার স্বাধীন হয়েছে। তিনি বলেন, হয়তো এটাই আমার শেষ ভাষণ। আমি যদি নাও থাকি আন্দোলন যেন থেমে না থাকে। বাঙ্গালির স্বাধীনতার আন্দোলন যাতে না থামে।’

জনসভায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার কথা বলায় উদ্বেলিত মানুষ ‘বীর বাঙ্গালি অস্ত্র ধর. বাংলাদেশ স্বাধীন কর, গ্রামে গ্রামে দূর্গ গড়: মুক্তিবাহিনী গঠন কর শ্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে।

পরদিন ৪ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাক এবং দৈনিক আজাদে সভার বিস্তারিত ছাপা হয় ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মার্চ ২০১৯/ টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়