ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কঙ্গনার সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন হৃতিক

মারুফ খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৭, ৫ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কঙ্গনার সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন হৃতিক

বিনোদন ডেস্ক : গত বছর বলিউডের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল অভিনেতা হৃতিক রোশান ও অভিনেত্রী কঙ্গনা রাণৌতের মধ্যে দ্বন্দ্ব। যা আইনি নোটিশ পর্যন্ত গড়ায়। এই বিবাদের কারণে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সবার সামনে আসতে শুরু করে। হৃতিকের বিরুদ্ধে প্রেমের সম্পর্ক ও ই-মেইল আদান-প্রদানের অভিযোগ তোলেন কঙ্গনা।

এরপর বিষয়টি নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। এ বিষয়ে অনেকবারই কথা বলেছেন কঙ্গনা। বিপরীতে এবারই প্রথম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন হৃতিক। এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।  সেখানে লিখেছেন:

‘আমি সৃজনশীল, গঠনমূলক পথ বেছে নিয়েছি। এর বাইরে সবকিছু আমি উপেক্ষা করি এবং বিক্ষিপ্ত বিষয় হিসেবে এড়িয়ে চলি। আমি মনে করি, এড়িয়ে চলা, কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানো এবং মর্যাদার পথ অবলম্বন করা অনাকাঙ্খিত অনুপ্রবেশ নিরুৎসাহিত করার সবচেয়ে ভালো উপায়। কিন্তু বিরক্তিকর অসুখের মতো কিছু এড়িয়ে চলা বিষয় মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, এই পরিস্থিতিও দুর্ভাগ্যবশত আমার জন্য মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মনে হচ্ছে, এ বিষয়টি মিডিয়াও কোনোভাবে হাত ছাড়া করতে চাইছে না।

আর যে বিষয়টির সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না এমন পরিস্থিতিতে আমার চরিত্র রক্ষার সাক্ষী দিয়ে এই সার্কাসে যোগ দেওয়ার কোনো অনুগ্রহ আমি দেখাচ্ছি না। অনিচ্ছা সত্বেও আমাকে এরকম বাজে বিকৃত বিষয়ে টেনে আনা হয়েছে। এটা এমন একটি বিষয় যা আমার তৈরিও নয়।

সত্যটা হচ্ছে, আমি জীবনে কখনো একা এই নারীর সঙ্গে কথা বলিনি। হ্যাঁ, আমরা একসঙ্গে অভিনয় করেছি, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে কখনো দেখা করিনি। দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন, এটাই সত্য। আমি কোনো সম্পর্কের অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। অথবা, ‘ভালো মানুষ’ হিসেবে নিজেকে বহাল রাখার ছেলেমানুষিও করছি না। আমার দোষগুলো সম্পর্কে আমার জানা রয়েছে, আমি একজন মানুষ।   

আমি এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, স্পর্শকাতর এবং ধ্বংসাত্মক বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি। দুঃখজনকভাবে খুব কম মিডিয়াই সত্যটা জানতে ইচ্ছুক। এটা আমার জন্য একটি চরম শিক্ষা। যদিও মানুষ একটি মিথ্যা বিষয়ে স্বস্তিবোধ করে কারণ এতে তাদের চেনা পৃথিবী, যেখানে একটি মেয়ে পরিস্থিতির শিকার হয় এবং একজন পুরুষ আক্রমণকারী হয়। এতে যদি কোনো প্রভাব না পড়ে তাহলে আমারও কোনো সমস্যা নেই।

শত শত বছর ধরে পুরুষের হাতে নারীরা অমানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং এটি আমাকে ক্ষুব্ধ করে। কিছু মানুষ এতটাই নিষ্ঠুর হন যে কঠিন শাস্তি তাদের প্রাপ্য। কিন্তু এই যুক্তিতে যদি এটিই প্রমাণিত হয় যে, একজন পুরুষ কখনোই আক্রমণের শিকার হবে না এবং একজন নারী কখনোই মিথ্যা বলবে না তাহলে এই বিষয়েও আমার কোনো সমস্যা নেই।

বড় দুই তারকার মধ্যে সাত বছরের অন্তরঙ্গ সম্পর্কের অভিযোগ, কিন্তু এর কোনো প্রমাণ নেই। কোনো তথ্য, পাপারাজ্জিদের ছবি, কোনো সাক্ষী, এমনকি ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে প্যারিসে যে বাগদানের অভিযোগ উঠেছে সেই মুহূর্তের একটি সেলফিও নেই। কোনো কিছু বিনিময় হয়নি এবং এই রোমান্টিক সম্পর্কের কোনো প্রমাণ নেই। তারপরও আমরা অন্য পক্ষকে সমর্থন করছি কারণ একটি মেয়ে কেন মিথ্যা বলবে? আমার পাসপোর্টের বিবরণ অনুযায়ী ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে আমি দেশের বাইরে যাইনি। অথচ সেই তারিখে আমি প্যারিসে বাগদান সেরেছি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই ‘সম্পর্কের’ একটাই প্রমাণ দেয়া হয়েছে তা হলো মিডিয়ার ফটোশপ করা একটি ছবি। যেটি আমার স্ত্রীর সঙ্গে পরদিনই আমার বন্ধু প্রকাশ করেছে।

এ বিষয়ে কোনো প্রশ্নও করা হয়নি কারণ আমাদের নারীদের সুরক্ষার শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাদের এটা অবশ্যই করতে হবে। আমিও আমার পিতামাতা ও আমার সহযোগী অসাধারণ নারীর কাছ থেকে এ ধরনের শিক্ষাই পেয়েছি। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আমার ছেলেদেরকেও একই ধরনের শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করব। এবং অবশ্যই তাদের সব সময় নারীদের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেব।

তিন হাজার এক তরফা ইমেইল রয়েছে যেগুলো হয় আমি নিজেই নিজেকে পাঠিয়েছি অথবা যে নারীকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই সাইবার ক্রাইম বিভাগ তা প্রমাণ করবেন। এই উদ্দেশ্যে আমি আমার ল্যাপটপ, ফোন জমা দিয়েছি যেগুলো এখনো সাইবার সেলে পড়ে আছে, কিন্তু অন্যপক্ষ তা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তদন্ত শেষ হয়েছে।   

আমি পুনরায় বলছি, এটি কোনো প্রেমিক-প্রেমিকার ঝগড়া নয়। আমি সবার কাছে অনুরোধ করছি, এটিকে প্রথম অথবা দ্বিতীয়বার চেষ্টা- এ ধরনের তকমা লাগাবেন না এবং প্রকৃত সত্যটা দেখার চেষ্টা করুন। আমি চার বছর ধরে অপমানিত হচ্ছি এবং সম্ভবত নারীর প্রতি সমাজের পক্ষপাতিত্বের কারণে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে গিয়ে অসহায়বোধ করছি।

আমি রাগান্বিত নই, আমার জীবনে খুব কম সময় রেগেছি। জীবনে কোনো নারী বা পুরুষের সঙ্গে আমার লড়াই হয়নি। এমনকি আমার বিচ্ছেদের সময়ও কোনো লড়াই হয়নি। আমি এবং আমার চারপাশের সবাই শান্তিকামী। আমি এখানে কাউকে দোষারোপ বা বিচার করতে আসিনি। কিন্তু এখন সত্যকে রক্ষার সময় এসেছে। কারণ যদি সত্য কষ্ট পায় তাহলে সামাজিক চেতনা কষ্ট পাবে। সভ্যতা কষ্ট পাবে। পরিবার কষ্ট পাবে। সন্তানরা কষ্ট পাবে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ অক্টোবর ২০১৭/মারুফ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়