ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাট নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ীরা ভাল নেই

মো. মনিরুল ইসলাম টিটো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১৫ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাট নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ীরা ভাল নেই

ফরিদপুর প্রতিনিধি: মাওয়া ঘাটের জলদস্যুদের কাছে জিম্মি ফরিদপুরের সিএন্ডবি ঘাট নৌ-বন্দরের কয়েকশ’ ব্যবসায়ী। তাদেরকে মাসোহারা না দিলে সিএন্ডবি ঘাটে আসতে পারছেনা কোন পণ্যবাহী কার্গো-ট্রলার ।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মুন্সীগঞ্জের বাইদের ট্যাক ও শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাওয়া পুরান ঘাট এলাকায় জলদস্যুদের চাঁদা না দিলে কোন পণ্যবাহী কার্গো-ট্রলার ফরিদপুর সি এন্ড বি ঘাটে আসতে দেওয়া হচ্ছেনা।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, তারা এ বিষয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল আসেনি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে নাবিক ও মাঝিদের মারধর করে কাছে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা নিয়ে যায়। কখনোবা নৌ-যান আটকে রেখে মাঝিদের জিম্মি করে মালিক পক্ষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে জলদস্যুরা ব্যবসায়ীদের নৌ-যানে হামলা করে অর্থ আদায় করছে বলেও অভিযোগ তাদের।

অত্যাচারে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাট নৌ-বন্দরের বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন এ বিষয়ে নৌপুলিশের ডিআইজি, মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার ও লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন মাওয়া ঘাট থেকে দেড় কিলোমিটার ভাটিতে বাদিয়ার ট্যাক নামক স্থানে এই রুটে সমস্ত নৌ-যান থেকে জোরপূব্র্বক চাঁদা আদায় করছে এসব জলদস্যু। আর চাহিদানুযায়ী চাঁদা না দিতে পারলে ট্রলার বা কার্গোতে থাকা লোকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করছে। সে কারণে নাবিক ও মাঝিরা নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ থেকে ফরিদপুরে পণ্য নিয়ে আসতে চায় না। এতে একদিকে যেমন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ভূক্তভোগি মাঝি মো. সেলিম হোসেনসহ কয়েকজন জানালেন, প্রায়েই তারা জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। মারপিট করে সবকিছু নিয়ে যাচ্ছে জলদস্যুরা। পরে মালিক পক্ষ টাকা দিলে মুক্তি মিলছে।

সিএন্ডবি ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ মনোয়ার হোসেন জানান, ওদের চাঁদা না দিলে ঘাটে নৌকা আসতে দেয়না। তাছাড়া এ বিষয়ে অভিযোগ করলে আরও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।

কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রেমিক ইউনিয়ন ফরিদপুরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতিয়ার রহমান শিরু বলেন, ‘দুটি জলদস্যু বাহিনীর কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। ডাকাতি চাঁদাবাজিসহ নানা অত্যাচারের মধ্যে রয়েছে আমাদের নৌ-পরিবহণ ব্যবস্থা। পুলিশের কাছে বারবার অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছিনা। এরা প্রতিদিনই জাজিরা পালের চর ও বাইদার ট্যাকসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। আমরা অবিলম্বে এই চাঁদাবাজ জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি চাই। ’

সিএন্ডবি নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ী ও পণ্যবাহী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ হেলাল শেখ জানান ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকলে এক সময় এ ঘাট দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এতে নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মহীন হবে কয়েক হাজার শ্রমিক।’

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ লোহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনির হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। জলদস্যুদের উৎখাত করে নদীপথ নিরাপদ রাখতে কাজ করছে স্থানীয় পুলিশ।




রাইজিংবিডি/ ফরিদপুর/১৫ এপ্রিল ২০১৯/মো. মনিরুল ইমলাম টিটো/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়