ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ভোটের সাড়ে ৪ বছর পর...

গাজী হানিফ মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০২, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভোটের সাড়ে ৪ বছর পর...

নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীতে সাড়ে চার বছর আগে অনুষ্ঠিত রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের একটি কেন্দ্রের ভোট গণনায় কারচুপি অবশেষে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থী সরকার হাফিজুর রহমান শাহেদকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন আদালত। পাশাপাশি মো.সিরাজুল হককে বিজয়ী ঘোষণা করে আগের প্রকাশিত গেজেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

 

বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে এমন জয়-পরাজয় আছে বলে জানা নেই। ‘বিরল’ ২০১১ সালে নির্বাচনের পর থেকেই দুই প্রার্থী সরকার হাফিজুর রহমান শাহেদ ও মো.সিরাজুলের সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচর পরবর্তী একাধিকবার টেঁটাযুদ্ধসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে দুই ব্যক্তি নিহতসহ শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। তাই রায় ঘোষণার পর যাতে আবারও পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সে জন্য উপজেলা প্রশাসন দুই পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠক করেন।

 

গত মঙ্গলবার নরসিংদীর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মো. মোস্তফা শাহারিয়ার খান এই রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে নির্বাচনে কারচুপি প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার সব্দর আলী খাঁন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষাক মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করেন। এ-সংক্রান্ত রায়ের কপি প্রধান নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

 

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে ১৮ জুন রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ঘোষিত ফল অনুযায়ী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ২ হাজার ৯৫১ ভোট পেয়ে তৎকালীন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. সিরাজুল হক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরকার হাফিজুর রহমান শাহেদ পান ২ হাজার ৯২৮ ভোট।

 

তবে পরাজিত প্রার্থী সরকার হাফিজুর রহমান শাহেদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ভোটকেন্দ্রে বাঁশগাড়ি নিউ মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রের ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনর্গণনার দাবি জানান। কিন্তু রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা আমলে না নেওয়ায় তিনি নরসিংদী জেলা জজ আদালতের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ২০১১ সালে ২৩ আগাস্ট একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে গত সোমবার জেলা আদালতে বিতর্কিত কেন্দ্রের ভোট গণনা করা হয়। নতুন গণনায় সরকার হাফিজুর রহমান শাহেদ পেয়েছেন ২ হাজার ৯২৭ ভোট। আর আগের বিজয়ী প্রার্থী মো.সিরাজুল হক পেয়েছেন ২ হাজার ৭৯৭ ভোট। ফলে আদালত সরকার হাফিজুর রহমান শাহেদকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

 

সাড়ে ৪ বছর পর রায় পেয়ে সরকার হাফিজুর রহমান শাহেদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি শতাধিক ভোটে পাস করার পর যখন বিজয় মিছিল নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, তখন বিরোধী প্রার্থী কারচুপির মাধ্যমে ফল ছিনিয়ে নেয়। তবে শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে সত্যের জয় হয়েছে।

 

 

রাইজিংবিডি/নরসিংদী/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/গাজী হানিফ মাহমুদ/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়