ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস আজ

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস আজ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : চুড়ান্ত বিজয় অর্জনের ৫ দিন আগেই কুষ্টিয়ায় উড়েছিল বিজয় নিশান। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়া জেলাকে শত্রুমুক্ত করেন। একদিকে স্বজনের গলিত লাশ আর সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের আর্তনাদ সবকিছুকে ম্লান করে সেদিন বিজয়ের আনন্দে মানুষ রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছিল।

 

এই দিনের বেদনা ও উচ্ছসিত অনুভূতি তুলে ধরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কুষ্টিয়া জেলা কমান্ডার নাসিম আলী জানান, ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ ভোর রাতেই পাক হানাদারদের আক্রমনের শিকার হয় কুষ্টিয়া। প্রতিরোধ যুদ্ধের মুখে ১ এপ্রিল রাতে পাকবাহিনী কুষ্টিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর, দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়ে ১৬ দিন পর আবারো কুষ্টিয়া দখল করে নেয় পাকবাহিনী।

 

মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তুমুল লড়াই চলে। এরমধ্যে ২৬ নভেম্বর সবচেয়ে বড় সম্মুখ যুদ্ধ হয় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। ৯ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহর ছাড়া সমস্ত এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। এরপর শহর মুক্ত করতে শুরু হয় তুমুল লড়াই। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষের অসংখ্য নিহত হয়। ১১ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুব আলী বলেন, ৯ মাস ধরে যখন থেমে থেমে যুদ্ধ হয়, তখন বাঙ্গালী নিধন আর গণহত্যার উৎসবে মেতে উঠে পাকবাহিনী। ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ কুষ্টিয়া শহরের বিহারী কলোনির কোহিনুর ভিলার ১৬ জন শহীদ হন। এটি এ জেলার একটি পরিবারের উপর সংঘটিত সবচেয়ে বড় গণহত্যা।

 

প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল বলেন, ‘দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে পাকসেনাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করে যে সব বীরযোদ্ধারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের সমাধি হিসাবে কুমারখালী, বংশীতলা, বিত্তিপাড়াসহ জেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক গণকবর রয়েছে। এসব স্থানে নির্বিচারে গণহত্যা করা হয়েছে হাজারো ব্যক্তিকে।’

 

তিনি বলেন, ‘তবে যে আকাক্সক্ষা ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়ে দিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে লক্ষ প্রাণের বলিদান, সেই আকাক্সক্ষা  ও স্বপ্নপূরণ এখনও সুদুর পরাহত।’

 

বিজয়ের এ দিনটিকে উদযাপন করতে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। দিনটি স্মরণে বধ্যভূমিগুলিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কর্মসুচী পালিত হচ্ছে।

 

 

রাইজিংবিডি/ কুষ্টিয়া/১১ ডিসেম্বর ২০১৬/কাঞ্চন কুমার/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়