ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রোগমুক্তির দাওয়াই ইঞ্জিল অয়েল

ফাতিমা রুনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৫৯, ২০ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রোগমুক্তির দাওয়াই ইঞ্জিল অয়েল

ফাতিমা রুনা : প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। সকল প্রকার রোগকে জয় করার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসাবিজ্ঞান মানুষকে রোগমুক্তির প্রায় সব ব্যবস্থা করে রেখেছে। কিন্তু এরপরও নানা সময় চিকিৎসার নামে বিচিত্র সব পদ্ধতি ব্যবহার হয়। যেখানে বিজ্ঞানের লেশমাত্র ব্যবহার নেই, এমনকি নেই কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা।

তেমনই এক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগমুক্তির দাওয়াই হিসেবে ইঞ্জিন অয়েল দিয়ে মানুষের রোষানলে পড়েছেন বোঙ্গানি মাসেকো নামের দক্ষিণ আফ্রিকার ড্যাভিটনের এক ধর্ম প্রচারক। বোঙ্গানি প্রথম আলোচনায় আসেন যখন তিনি একটি সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সবার সামনে বলেন, ‘যদি কেউ বাঁচতে, ভালো হতে এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি সমর্পিত হতে চান তবে ইঞ্জিন ওয়েল খান।’

বোঙ্গানির এমন কথা শুনে অনেকেই অবাক হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ব্রিদ অব ক্রাইস্ট মিনিস্টিরিজ’ নামের একটি পেজের পোস্টে দেখানো হয় বোঙ্গানি মাসেকো তার অনুসারীদের মাঝে ‘হ্যাভোলিন মোটর অয়েল’ বিতরণ করছেন, আর অনুসারীরা আনন্দের সঙ্গে বিষাক্ত এই তরল পান করছেন। ফেসবুকের এই পোস্টটি ভাইরাল হলে অনেকেই বিষয়টির সমালোচনা করেন। অবশ্য বোঙ্গানির সমর্থনেও অনেকে কথা বলেছেন। অনেকেই বলছেন, এটি হয়তো অন্য কোনো পানীয় বা ওয়াইন যা ইঞ্জিন অয়েল বোতলে করে বিতরণ করা হচ্ছে।

সর্বোপরি ইঞ্জিল অয়েল পান কি আরোগ্য লাভের উপায়? এ প্রশ্নের উত্তরে মাসেকো নিশ্চিত করেন যে, বোতলের ওই মোটর অয়েল পানের উপযুক্ত এবং নিরাপদ কারণ তিনি ওই তেল নিয়ে প্রার্থনা করেছেন। এর ফলে তা পানের জন্য উপযুক্ত হয়েছে।

ইঞ্জিন ওয়েলের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে এই ধর্ম প্রচারক নিজেই বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা সত্য যে বোতলে ইঞ্জিল অয়েল রয়েছে।’ 

তিনি আরো জানান, ইঞ্জিন ওয়েল পানের বিপদ নিয়ে  তিনি কোনো গবেষণা করেননি কারণ সৃষ্টিকর্তার ওপর তার যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে। তিনি যা করতে চান মোটর অয়েল সেই কাজই করবে। তিনি বলেন, ‘রোগমুক্তিতে এই তেলের ভূমিকা রয়েছে এবং ঈশ্বরের শক্তির প্রমাণ হল, এই তেল।’

এক সাক্ষাৎকারে মাসেকো আরো জানান, ‘যখন আমরা কোনো কিছু প্রার্থনা করে খাই তখন এর ভেতরের বিষ মরে যায়। ফলে তা মানুষের ক্ষতি করতে পারে না। এবং তা খেলে কিছুই হয় না, কাউকে হাসপাতালে যেতে হয় না।’

নিজের যুক্তি প্রমাণ করতে এই বিতর্কিত ব্যক্তি বাইবেলের উদাহরণও টেনে আনেন।

কী করে তিনি বুঝতে পারেন যে তার এই অদ্ভুত দাওয়াই কাজ করছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এর ক্ষমতা পরিমাপ করতে বিশেষ কিছু করার দরকার নেই, মানুষ এগিয়ে আসুক আর তারা তা পান করে পরীক্ষা করুক।’

তবে এমন বিষয় এবারই প্রথম নয়। এর আগেও এক ধর্মযাজক মাটি থেকে সরাসরি ঘাস খেয়ে মানুষকে এই বলে আহ্বান জানিয়েছিলেন যে, ঘাস খেলে মাথার চুলের উপকার হয় এবং চুল বৃদ্ধি পায়।   

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ জানুয়ারি ২০১৭/মারুফ/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়