গোল উৎসবের বিশ্বকাপ ফাইনাল
ফিফা বিশ্বকাপ হয়েছেন এখন পর্যন্ত ২১ বার। ১৩ দেশ জায়গা করে নিয়েছে ফাইনালে, তার মধ্যে টুর্নামেন্ট জিতেছে আট দল।
পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতে সবচেয়ে সফল দল ব্রাজিল। তবে সবচেয়ে বেশিবার ফাইনাল খেলা দল জার্মানি। সাতবার শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে উঠেছিল ব্রাজিল, যেখানে জার্মানরা আটবার ফাইনাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চারবার।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি স্কোরের ফাইনাল হয়েছিল ব্রাজিল ও সুইডেনের মধ্যে। ১৯৫৮ সালে স্টকহোমের ওই ম্যাচে সাত গোল হয়েছিল, যেখানে ৫-২ গোলে জিতে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার শিরোপা জেতে সেলেসাওরা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছয় গোলের ফাইনাল হয়েছে চারবার এবং সবগুলো ম্যাচেই স্কোরলাইন ছিল একই, ৪-২ এ চ্যাম্পিয়ন হয় দলগুলো। সবশেষ ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালেও হয়েছিল ছয় গোল, ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে রাশিয়ায় শিরোপা উদযাপন করে ফ্রান্স।
ব্রাজিল ৫-২ সুইডেন
আসর: ১৯৫৮
গোলদাতা: ব্রাজিল- ভাভা (২), পেলে (২), মারিও জাগাল্লো।
সুইডেন- নিলস এরিক লাইডহোম, টোরে সিমনসন।
ভেন্যু: রাসুন্ডা স্টেডিয়াম, সুইডেন
স্টকহোমে প্রথমবার বিশ্বকাপ ট্রফি জেতে ব্রাজিল। ১৯৫৮ সালের ২৯ জুন তারা স্বাগতিকদের হারায় ৫-২ গোলে। এই ম্যাচে অনন্য একটি রেকর্ড হয়েছিল, বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হন পেলে (১৭ বছর ও ২৪৯ দিন) এবং সুইডেনের নিলস লাইডহোম (৩৫ বছর ও ২৬৩ দিন) হন বিশ্বকাপ ফাইনালের সবচেয়ে বয়স্ক গোলদাতা।
উরুগুয়ে ৪-২ আর্জেন্টিনা
আসর: ১৯৩০
গোলদাতা: উরুগুয়ে- পাবলো দোরাদো, হোসে চিয়া, ভিক্টোরিয়ানো ইরিয়ার্তে, হেক্টর ক্যাস্ত্রো।
আর্জেন্টিনা- কার্লোস পেউসেল্লে, গুইলেরমো স্তাবিলে।
ভেন্যু: এস্তাদিও সেন্তেনারিও, উরুগুয়ে।
প্রথম বিশ্বকাপ নিজেদের মাঠেই জিতেছিল উরুগুয়ে। আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারায় তারা। তখনকার উরুগুয়ের কোচ ৩১ বছর বয়সী আলবার্তো সুপ্পিসি সর্বকনিষ্ঠ কোচ হিসেবে জেতেন বিশ্বকাপ ট্রফি।
ইতালি ৪-২ হাঙ্গেরি
আসর: ১৯৩৮
গোলদাতা: ইতালি- লুইগি কোলাউস্সি (২), সিলভিও পিওলা (২)।
হাঙ্গেরি- পাল তিতকোস, গিওগ্রি সারোসি।
ভেন্যু: স্তাদে অলিম্পিক দে কলোম্বেস, ফ্রান্স
বিশ্বকাপ শিরোপা অক্ষুণ্ন রাখা প্রথম দল ইতালি, যে কীর্তি তারা গড়েছিল ১৯৩৮ সালে। প্যারিসে এই ইতিহাস গড়ার ম্যাচে ৪-২ গোলে তারা হারায় হাঙ্গেরিকে। তাদের পর একমাত্র দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপ জেতা দল ব্রাজিল, ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে।
ইংল্যান্ড ৪-২ পশ্চিম জার্মানি
আসর: ১৯৬৬
গোলদাতা: ইংল্যান্ড- জিওফ হার্স্ট (৩), মার্টিন পিটার্স।
পশ্চিম জার্মানি- হেলমুট হাল্লের, ভলফগাং ওয়েবার।
ভেন্যু: ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম, ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ও একমাত্র বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৬৬ সালে। পশ্চিম জার্মানিকে তারা ফাইনালে হারায় ৪-২ গোলে। জিওফ হার্স্টের ফ্যান্টম গোলে ইংল্যান্ড জেতে ট্রফি। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ এ শেষ হলে হার্স্ট অতিরিক্ত সময়ে গোল করেন। তার শট ক্রসবারে লেগে পশ্চিম জার্মানি গোলকিপার হ্যান্স টিলকোভস্কির পেছনে লাফায়। ইংল্যান্ডের রজার হান্ট একেবারেই নিশ্চিত ছিলেন গোল লাইন অতিক্রম করেছে বল, তাই বল বিপদমুক্ত হওয়ার আগে জালে না পাঠিয়েই উদযাপন শুরু করেন। শুধুমাত্র এই সেন্টার ফরোয়ার্ড ও লাইন্সম্যানই নিশ্চিত ছিলেন বল লাইন পেরিয়ে গেছে। জার্মানরা তীব্র প্রতিবাদ জানালেও শেষ পর্যন্ত রেফারি সময় নিয়ে জানান, গোলটা হয়েছে।
ফ্রান্স ৪-২ ক্রোয়েশিয়া
আসর: ২০১৮
গোলদাতা: ফ্রান্স- মারিও মানজুকিচ (আত্মঘাতী গোল), কিলিয়ান এমবাপ্পে, আন্তোয়ান গ্রিয়েজম্যান, পল পগবা।
ক্রোয়েশিয়া- ইভান পেরিসিচ, মারিও মানজুকিচ।
ভেন্যু- লুঝনিকি স্টেডিয়াম, রাশিয়া।
মস্কোর ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স। এই জয়ে দারুণ এক নজির স্থাপন করেন কোচ দিদিয়ের দেশম। মারিও জাগাল্লো ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের পর খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা তৃতীয় ফুটবলার হন তিনি।
ঢাকা/ফাহিম
আরো পড়ুন