ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যে কারণে শরীরে আজীবন ট্যাটু থাকে

শামীমা নাসরিন রিপা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যে কারণে শরীরে আজীবন ট্যাটু থাকে

শামীমা নাসরিন রিপা : প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ গায়ে ট্যাটু বা উল্কি আঁকছে। পৃথিবীর নানা প্রান্তের নানা উপজাতির মধ্যে ট্যাটু আঁকার প্রচলন ছিল। অনেক উপজাতির মধ্যে এখনো আছে। আর বর্তমানে তো এটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। প্রাচ্য-প্রতীচ্য সবখানেই এখন ট্যাটু বা উল্কি আঁকানোর রমরমা অবস্থা। বিভিন্ন জগতের তারকা তো বটেই, সাধারণ মানুষও তাদের শরীরে ট্যাটু আঁকেন। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। বাংলাদেশের অনেক তরুণ-তরুণীই এখন শরীরে ট্যাটু আঁকেন।

 

ট্যাটুর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হল এর স্থায়িত্ব। ট্যাটু একবার আঁকা হলে সারাজীবন থেকে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে এই ট্যাটু স্থায়ী হয়? চলুন জানার চেষ্টা করি। আমরা সবাই জানি, আমাদের শরীরের ত্বক কয়েকদিন পর পর পরিবর্তিত হয়। ত্বকের পরিবর্তনের মধ্যেও কীভাবে এই ট্যাটু স্থায়িত্ব পায়?

 

আমাদের ত্বক আসলে দুটি স্তর নিয়ে গঠিত। বাইরের স্তরের নাম ‘এপিডার্মিস’। আর ভেতরের স্তরের নাম ‘ডার্মিস’। সাধারণত ত্বক পরিবর্তিত হওয়া বলতে আমরা এপিডার্মিসের পরিবর্তনকে বুঝি। এপিডার্মিসের স্তরের সর্ববাহিরে থাকে মরা কোষের স্তর, যা স্ট্রাটাম কর্নিয়াম নামে পরিচিত। এপিডার্মিস স্তরে ক্যারাটিনোসাইড কোষের সৃষ্টির ফলে স্ট্রাটাম কর্নিয়ামের স্তরটি আস্তে আস্তে ওপরের দিকে ওঠে এবং একসময় তা মরা কোষ হিসেবে উঠে যায়। এই পরিবর্তনটি সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ পর পর নিয়মিতভাবে হয়।

 

কিন্তু ভিতরের স্তর অর্থাৎ ডার্মিস স্তরটির কোনো পরিবর্তন হয় না, যদি না কোনো মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। ট্যাটু আঁকা হয় সাধারণত আমাদের ত্বকের এই ভেতরের স্তরটিতে। ট্যাটু তৈরির মেশিনের সুঁইটি সেকেন্ডে ৫০ থেকে ১৫০ বার ওঠানামা করে আমাদের ত্বকের ডার্মিস স্তরটিতে কালি ফেলে। যেহেতু ডার্মিস স্তরটির কোনো পরিবর্তন হয় না। তাই এই ট্যাটুটি আমাদের দেহে স্থায়ী হয়ে যায়। এক থেকে দুই মাস পরে যখন সুইয়ের আঘাত শুকিয়ে যায় তখন কালি কিছুটা হালকা হয়ে যায়। কারণ, তখন মরা কোষের একটি স্তর উঠে যায়। তবে যথাযথ পরিচর্যা ও যতœ নেওয়া হলে এই ট্যাটু জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

 

অবশ্য ট্যাটু আঁকার কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। শরীরে ট্যাটু আঁকার জন্য যে রঙ ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে মেশানো হয় মারাত্মক একটি রাসায়নিক পদার্থ। এই রসায়নিক পদার্থ চামড়ার একেবারে ভেতর থেকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে। ট্যাটু যেহেতু সারাজীবন শরীরে থাকবে, তাই এই রসায়নিক পর্দাথও সারাজীবন দেহে থাকবে। এর ফলে বিভিন্ন ধরণের অসুখসহ ক্যান্সার হওয়ারও ঝুঁকি থাকে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ জানুয়ারি ২০১৬/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়