ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ঢাবিতে তাবলীগের আলোচনা সভায় বাধা ও হামলার অভিযোগ 

ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩০, ১৩ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ২২:৩৩, ১৩ মার্চ ২০২৪
ঢাবিতে তাবলীগের আলোচনা সভায় বাধা ও হামলার অভিযোগ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু টাওয়ার (ফাইল ফটো)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গবন্ধু টাওয়ার মসজিদে তাবলীগের আলোচনা সভা আয়োজনে বাধা দেওয়া এবং পরে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 

বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুর পৌনে ২টায় বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের সামনের রাস্তায় আলোচনা সভার আয়োজকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে আহত হন—সাকিব আজাদ তুর্য, শাহীনুর ইসলাম রাসেল, রাফিদ হাসান সাফওয়ান, ফাহিম দস্তগীর এবং রেজোয়ান আহম্মেদ রিফাত। তারা আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। 

হামলায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম তাওহীদুল ইসলাম। ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে জানা গেছে, তিনি শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি পটুয়াখালি জেলায়। তিনি তেজগাঁও কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের কর্মচারী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইন বিভাগের একদল শিক্ষার্থীরা জোহরের নামাজ পড়তে বঙ্গবন্ধু টাওয়ার মসজিদে আসেন। নামাজ শেষ হওয়ার পর তারা রমজানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কর্মচারী সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক বাধা দেন। পরে শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম সুজন তাদের মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

মসজিদ থেকে বের হলে বাইরে এসে আবারও তাওহীদুল ইসলাম সুজন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাওহীদুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।

হামলায় আহত সাকিব বলেছেন, ‘রমজান মাস উপলক্ষে আলোচনা সভা করার উদ্দেশ্যে আমরা আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে গিয়েছিলাম। সে সময় সিরাজুল ইসলাম বাধা দিলে আমরা মসজিদ থেকে বের হয়ে আসি। বাইরে এসে ছাত্রলীগ নেতা তাওহীদুল ইলাম সুজন ‘শিবির কর্মীদের ধর’ বলে আমাদের ওপর হামলার নির্দেশ দেয়। তার সাথে থাকা কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলে আমরা কয়েকজন অজ্ঞান হয়ে যাই। এক রিকশাচালক আমাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ হামলার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

হামলার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত রাইজিংবিডিকে বলেন, জামায়াত-শিবিরের ছেলেরা আলোচনা সভা করতে চেয়েছিল। কিন্তু, জিজ্ঞাসা করলে তারা তাবলীগের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেয়। সেখানে থাকা স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে তাদের আলোচনা সভা করতে নিষেধ করেন। তারা স্থানীয়দের সঙ্গে তর্কাতর্কি করে। একপর্যায়ে  তারা স্থানীয়দের গায়ে হাত তোলে। ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী হট্টগোল থামানোর চেষ্টা করে।

অভিযুক্ত তাওহীদুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই। আমার ওপরে মিথ্যা দোষ দেওয়া হচ্ছে। আমি এ সময় ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম।’

বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের দারোয়ান খোকন বলেন, শিক্ষার্থীরা মসজিদ থেকে বাইরে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু ছেলে তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় কয়েকজনকে রাস্তার ওপরে ফেলে বেধড়ক পেটানো হয়। প্রথমে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। পরে তারা সেগুলো ফেলে দিয়ে কিল, ঘুষি আর লাথি দিতে থাকে। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন শিক্ষার্থী বাইরে পালিয়ে যায় আর কয়েকজন ভবনেই আশ্রয় নেয়।

হারুন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়