ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মালদ্বীপে কেন ধরপাকড় করা হচ্ছে?

মোহাম্মদ মাহামুদুল, মালদ্বীপ থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২৩:০৩, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মালদ্বীপে কেন ধরপাকড় করা হচ্ছে?

সম্প্রতি মালদ্বীপের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী দেশটিতে বৈধ-অবৈধ প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশী বাস করছেন। এর মধ্যে ৪০ হাজার অবৈধ। অবৈধদের আগে ধরপাকড় না  করলেও এখন দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ অভিযান চালিয়ে বৈধ-অবৈধ সবাইকে ধরছে। 

অবৈধদের মধ্যে বেশির ভাগ বাংলাদেশী মালদিভিয়ানদের সাথে যৌথভাবে ব্যবসা করতে গিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে হত্যা, ছিনতাই, মাদক, মানবপাচার ও হুন্ডিসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে দেশটির কারাগারে তিন হাজারের মতো বাংলাদেশী আটক আছে বলে জানা গেছে। 

পুলিশের অভিযানে বৈধ বাংলাদেশিরাও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে অন্য দেশের যারা অবৈধভাবে কর্মরত আছেন, তাদের ধরা হচ্ছে না। খুঁজে খুঁজে বাঙালিদের ধরা হচ্ছে। আবার মালদ্বীপ প্রবাসীরা বলেন, অন্যান্য দেশের প্রবাসীদের মধ্যে যারা অবৈধভাবে ব্যবসা করে ও বসবাস করে  অভিযোগ পেলে তাদের ধরা হলেও ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকদের বেলায় ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটির পুলিশ। 

বৈধ প্রবাসীদের দেশটিতে থাকতে হলে ভিসা ঠিক রাখার জন্য প্রতিবছর গুনতে হয় প্রচুর টাকা। মালদ্বীপ প্রবাসী শেখ সজীব আহমেদ বলেন, এখানে আমরা কোম্পানি পাব কোথায়? কিছু কিছু কোম্পানিতে কাজ করলে ঠিকমতো বেতনও দেয় না।মূলত বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মী আনবে, তাই ধরপাকড় চলছে। নতুন কর্মী এসে কোথায় কাজ করবে? কোনো ভালো কোম্পানি তো দেখছি না। এর আগে কর্মী এনে রাস্তায় ছেড়ে দিয়েছে।

যারা কোম্পানির ভিসায় আসবেন, তারা অল্প বেতনে লম্বা ডিউটি করে হাড়ভাঙা কষ্ট করে কি কোম্পানিতে থাকবেন? প্রশ্ন তুলে শেখ সজীব আহমেদ বলেন, এক সময় তারাও কোম্পানি থেকে পালিয়ে অবৈধ হয়ে যাবেন। তারপর কী হবে? কেউ হতে চান না অবৈধ, সবাই বৈধভাবে কাজ করতে চান। কিন্তু পারেন না। কোনো কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে কাজ করলে তারাও শেষে বেতন মেরে দেন।

কিশোরগঞ্জের নিজাম উদ্দিন দালালের মাধ্যমে লাখ টাকা খরচ করে পাড়ি জমিয়েছিলেন অপরূপ দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে। ওই সময় তার বেতন ছিল ১০০ ইউএস ডলার। চাকরি শুরুর পর কেটে গেছে ২৩ বছর। এখন তার বেতন বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৩০০ ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩২ হাজার টাকা। সময়ের ব্যবধানে নিজাম উদ্দিনের বেতন খুব একটা বাড়েনি। তারপরও ওই বেতনও ঠিকভাবে কোম্পানির মালিক পরিশোধ করছেন না বলে প্রবাসীদের অভিযোগ।

শুধু নিজাম উদ্দিন নন, মালদ্বীপের রাজধানী মালে, হুলহুমালে ছাড়াও বিভিন্ন দ্বীপে ছড়িয়ে থাকা এমন হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করলেও সেই অনুযায়ী তারা বেতন না পাওয়ার কষ্ট নিয়ে প্রতিনিয়ত জীবন নির্বাহ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে চাপা ক্ষোভ। 

বাংলাদেশ দূতাবাসে এসেও অনেক সময় সহযোগিতা পান না বলে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীর অভিযোগ রয়েছে।

হাসান//

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়