ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চীনের অধরা সংস্কৃতির পুনরুদ্ধারে অদম্য ইয়াং

ছাই ইউয়ে (মুক্তা) || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪২, ২০ মার্চ ২০২৫  
চীনের অধরা সংস্কৃতির পুনরুদ্ধারে অদম্য ইয়াং

চীনের জাতীয় পর্যায়ের সুবিশাল সম্মেলনটি হলো রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি)। আর এই সম্মেলনের সদস্যদের মধ্যেও আছে নানা ধরনের জাতিগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। এ সম্মেলনের বার্ষিক অধিবেশনের দ্বিতীয় ‘সদস্য করিডোর’-এ এবার সবার নজর কেড়েছেন এক বিশেষ অতিথি। তিনি সিপিপিসিসি’র সদস্য এবং চীনের ইউনি সংস্কৃতি ও শিল্প ঐতিহ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ইয়াং ইউ নি।

ইয়ুননান প্রদেশের হানি জাতিগোষ্ঠীর এই তরুণী তার শৈশব কাটিয়েছেন হানির সিঁড়ি আকারে তৈরি ক্ষেতের পাশে, যেখানে ছড়িয়ে রয়েছে ১৩০০ বছরের ঐতিহ্য।

আরো পড়ুন:

ইয়াং ছোটবেলা থেকেই হানি সংস্কৃতির আবহে বড় হয়েছেন। সংগীত, নৃত্য, এবং প্রাচীন চীনা গান তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি দেখেন, চীনের গ্রামগুলোয় এখন গান বা নাচের প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে। এমনটা দেখে ইয়াং তার ভেতরে বোধ করেন এক অদম্য তাড়না। প্রতিষ্ঠা করেন ইউনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কেন্দ্র। এর মাধ্যমে গত ৯ বছরে চীনের তিন হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন হানি সংস্কৃতি নিয়ে। এখন এই কেন্দ্রের মাধ্যমেই বিশ্বজুড়ে প্রচার করে চলেছেন হানি সংস্কৃতির।

ইয়াং বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষরা যা রেখে গেছেন তা শুধু গান নয়, উদ্ভাবনী চিন্তাও।” আর এমন চিন্তা থেকে চীনের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ১০০ তরুণদের নিয়ে এক নৃত্যদল তৈরি করেন ইয়াং।

এমনকি হানি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেন হিপ-হপ। সৃষ্টি করলেন আনকোরা কিছু। যা তরুণদের আরো আকর্ষণ করছে।

ইয়াংয়ের এই উদ্ভাবনী নৃত্য ২০২৪ সালের ল্যানকাং-মেকং নদী অববাহিকা সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীতে বেশ প্রশংসিত হয়।

এআই যুগে প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে নতুন পথ অনুসন্ধান করছেন ইয়াং। ছোটখাটো ভিডিও প্ল্যাটফর্মে হানি গান ও নৃত্য শেখান, এআর প্রযুক্তির মাধ্যমে সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে তৈরি ক্ষেতে কৃষিকাজের দৃশ্য ধারণ করেন এবং ভিআরের মাধ্যমে দর্শকদের হাজার বছরের পুরোনো সিঁড়িক্ষেতে ‘ক্লাউড ভ্রমণ’-এর সুযোগ করে দিচ্ছেন।

সিপিপিসিসি’র সদস্য হিসেবে ইয়াং ইউ নি চীনের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সমন্বিত উন্নয়নে দারুণ মনোযোগী। তার কথা হলো, “ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি সুরক্ষিত রাখতে হবে। যুগের সঙ্গে তা উন্নতও করতে হবে।”

সিপিপিসি’র অধিবেশনে ইয়াং প্রস্তাব করেছেন, “সংস্কৃতি ব্যবহার করে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চীনা জাতির একত্রীকরণের কাজ ত্বরান্বিত করতে হবে।” সেইসঙ্গে বিদেশি বন্ধুদের ইয়ুননানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে, তিনি তার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছেন।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (বাংলা বিভাগ), বেইজিং

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়