বিয়ের ৯ দিনের মাথায় মোটরসাইকেল কেড়ে নিল যুবকের প্রাণ

মাত্র নয় দিন হয়েছে আশরাফুলের বিয়ে হয়েছে। তার স্ত্রী সাদিয়ার হাতের মেহেদির রঙ এখনো টকটকে লাল। সেই লাল মেহেদির রঙ আরো লাল হয়েছে স্বামীর শরীরের রক্তে। বেপরোয়া মোটরসাইকেলের চাপায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আশরাফুল ইসলাম (২৮)।

মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের বিলকিষ্টি গ্রামে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটে।

নিহত আশরাফুল ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের বিলকিষ্টি গ্রামের মৃত সোনামিয়ার ছেলে।  অপরদিকে ঘাতক মোটরসাইকেলের চালক জহিরুল ইসলাম (২২)।

জানা যায়, বিকেলে নিজের চাষের জমিতে যাচ্ছিলেন আশরাফুল। সড়কে হাটার সময় বিপরীত থেকে বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেলে আসা জহিরুল আশরাফুলকে চাপা দেন। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।

গেল বছরও সাজানো গোছানো সংসার ছিল আশরাফুলদের। তাদের সংসারে মা-বাবা-ভাই ছিল। কিন্তু ভাগ‌্যের কী নির্মম পরিহাস! প্রথমে আশুর ভাইয়ের মৃত্যু হয়। এরপর বাবাও চলে যান স্ট্রোকে। বাবা-ভাই মারা যাবার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সড়ক দুর্ঘটনায় আশরাফুলও চলে গেলেন। অথচ তিনিই ছিলেন এই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব‌্যক্তি। তারপরে বিয়ের মাত্র নয় দিনের মাথায় আশরাফুলের এভাবে চলে যাওয়াকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার মা-স্ত্রী।

আসুর মা কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাচ্ছিলেন বারবার। তার মৃত্যুর পরপরই অজ্ঞান হয়ে হতবিহবল হয়ে পড়েছেন আসুর স্ত্রী সাদিয়া আক্তার শান্ত (২০)।

আসুর মা বলেন, ছেলেটা মাত্র নয় দিন আগেই বিয়ে করেছিল। ওর বাবার মৃত্যু, ভায়ের মৃত্যুর পর এই ছেলেই পরিবারের একমাত্র ভরসা ছিল। আজ এই পরিবারে আর কেউ রইল না।

আসুর প্রতিবেশী রুবেল হোসেন রাইজিংবিডিকে জানান, দরিদ্র ছোট পরিবারটি কোনমতে চলে যাচ্ছিল। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে পরিবারটা নিঃস্ব হয়ে গেল। ওই পরিবারটি অকাল পাথারে পড়ে গেল।

ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তন্ময় সাহা বলেন, রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্ততি চলছে।

 

সাভার/সাব্বির/বুলাকী