ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

এ কেমন লঞ্চঘাট!

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এ কেমন লঞ্চঘাট!

রয়েছে নির্দিষ্ট লঞ্চ টার্মিনাল। যাত্রীদের উঠা-নামার জন্যও রয়েছে পল্টুন, বেইলি ব্রিজ। কিন্তু ঘাট ইজারাদার সেখানে লঞ্চ ভিড়াতে দিচ্ছেন না।

নির্দিষ্ট লঞ্চ টার্মিনালটিতে মাত্র কয়েকমাস আগেই লঞ্চ যাত্রীদের সুবিধার্থে নতুনভাবে বেইলি ব্রিজ নির্মানসহ সংযোজন করা হয়েছে নতুন একটি পল্টুনের। কেবলমাত্র ঘাট ইজারাদারের খামখেয়ালিতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার এ লঞ্চঘাটটিতে ভিড়ছেনা অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী কোন লঞ্চ কিংবা ট্রলার।

প্রভাবশালী ইজারাদারের প্রকাশ্য চাপে লঞ্চ ভিড়াতে হচ্ছে ইজারাদারের স মিল ঘাটে। এতে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বিষয়টি একাধিকবার বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ও কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও প্রতিকার পাননি সাধারণ যাত্রীরা।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কলাপাড়া পৌর শহরের বাজার স্লুইস এলাকায় নুরুল হক মুন্সির স মিল এবং ইজারাদারের রাইচ মিলের পাশেই ভিড়ছে কলাপাড়া-মৌডুবি রুটে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি লঞ্চ। এখানেই টেবিল-চেয়ার পেতে ইজারাদারের লোকজন যাত্রীসহ পণ্য পরিবহনের টোল আদায় করছেন। ঘাটের পাশেই নদীর পাড় জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গোল গাছ। রয়েছে বড় বড় গাছের স্তুপ। এরই মধ্য দিয়ে চরম ভোগান্তিসহ ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে ওঠা নামা করছেন রাঙ্গাবালি উপজেলাসহ বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে শহরে আসা বিভিন্ন বয়সের কয়েক হাজার যাত্রী। ঝুঁকি নিয়েই পণ্য পরিবহন করছেন শ্রমিকরা।

কলাপাড়া-মৌডুবী রুটে চলাচলকারী এমএল রূপসী তুষার-২ লঞ্চের কেরানী আ. জব্বার বলেন, ‘যাত্রীসহ পণ্য পরিবহন এবং লঞ্চ ভিড়ানো চরম ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও ইজারাদারের চাপে এখানে লঞ্চ ভিড়াতে হচ্ছে।’

একই অভিযোগ এমএল রাহাত লঞ্চের কর্মচারীদের। লঞ্চ ভিড়াতে অপারগতা প্রকাশ করলে ইজারাদাররা তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ করেনা।

মৌডুবীর লঞ্চযাত্রী রাশেদ বলেন, ‘ঝুঁকি নিয়ে দুরুদুরু বুকে লঞ্চে উঠলাম। নামার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সাহস পাচ্ছিনা।’

একই কথা বললেন লঞ্চের বেশ কয়েকজন যাত্রী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা প্রশ্ন করেন, ‘যাত্রীদের এই ভোগান্তি নিরসনে ইজারাদারের খামখেয়ালীর লাগাম টেনে ধরার ক্ষমতা কি কারো নেই!’

ঘাট ইজারাদার তানভীর মুন্সী বলেন, ‘সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি চাইলেও কর্তৃপক্ষ ঘাটে লঞ্চ ভিড়াচ্ছেন না।’

পটুয়াখালী নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীদের সুবিধার্থে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে কলাপাড়ার ঐতিহ্যবাহী লঞ্চঘাটটি নতুনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। অথচ সেখানে দোতলা লঞ্চ ছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটের কোন লঞ্চ ভিড়ছে না এমন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

 

কলাপাড়া (পটুয়াখালী)/ মো.ইমরান/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়