ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সম্মুখ সমরের এক যোদ্ধা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সম্মুখ সমরের এক যোদ্ধা

হবিগঞ্জের একজন বীর যোদ্ধার নাম আব্দুছ ছামাদ। বীরের মতই বেঁচে আছেন মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরের এই যোদ্ধা।

এ বীর সন্তান জেলার চুনারুঘাট উপজেলার শহরের হাতুন্ডা গ্রামের মরহুম আব্দুল বারিকের ছেলে। তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছেন। জীবনের শুরু থেকে সৎ ও ন্যায়ের পক্ষে সংগ্রাম করে আসছেন। এখনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়ান।

বিজয়ের মাসে কথা হয় এই বীরের সাথে। তিনি জানান, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা খেতাবের জন্য তিনি যুদ্ধ করেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তিনি সম্মুখ সমরে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

একাত্তরে তিনি হবিগঞ্জের আনসার ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেন। সে সময়ে ঢাকার জয়দেবপুর থেকে মেজর কেএম শফিউল্লাহ’র নেতৃত্বে ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘এ’ কোম্পানি ময়মনসিংহ হয়ে হবিগঞ্জে এসে ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘বি’ কোম্পানিসহ শেরপুর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।

বীরযোদ্ধা আব্দুছ ছামাদ বলেন, ‘তারা সেখান থেকে ফেরার পথে চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি চা বাগানের কলঘরের কাছে আমার সাথে দেখা হয়। এ সময আমার সাথে ছিলেন, চাচাত ভাই খোর্শেদ আলী, ফিরোজ মিয়া। সাতছড়িতে সবাই মিলে কয়েকদিন অতিবাহিত করে গন্তব্য হয় তেলিয়াপাড়া কোম্পানি বাংলোয়। সেখানে ৭১’র ৪ এপ্রিল বৈঠকেই সমগ্র রণাঙ্গনকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করেন সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী।’

আব্দুছ ছামাদ বলেন, ‘সে সময়ে আমি ৩নং সেক্টর হেড কোয়ার্টারের নিরাপত্তা সদস্য ছিলাম। এখানে কয়েকদিন অতিবাহিত করে ভারতের হেজামারা চলে যাই। সেখান থেকে আমাকে ও আমার সহযোদ্ধাদেরকে পাঠানো হয় ভারতের কাঁচামাটির ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের কোম্পানিতে। পরে আরআর প্রশিক্ষণে অমপিনগরে পাঠানো হয়। সেখানে দুই মাস প্রশিক্ষণ শেষে পুনরায় কাঁচামাটি ক্যাম্পে চলে আসি। ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের নেতৃত্বে ২য় ইবিআর ‘এ’ কোম্পানি গঠন করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে ‘এ’ কোম্পানিসহ ৫টি কোম্পানি নিয়ে গঠন করা ব্যাটালিয়ান অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঈনুল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে আখাউড়ার সিঙ্গারবিল দিয়ে আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। সেখান থেকে জয়ী হয়ে ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে সাবাজপুর, নরসিংদীর শিবপুর হয়ে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে গিয়ে পৌঁছে শত শত জনতার ভালবাসা পেয়েছি।’

আব্দুছ ছামাদ তার তিন কন্যাকে বিয়ে দিয়ে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বর্তমানে চুনারুঘাটের হাতুন্ডার বাসায় বসবাস করছেন। 

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। দেশ স্বাধীন হয়েছিল। বর্তমানে তার কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। এসব দেখে অত্যন্ত ভাল লাগছে। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করছেন। আমরা তার সাথে আছি।’



হবিগঞ্জ/মো. মামুন চৌধুরী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়