ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সব শিশুই যেন হোম কোয়ারেন্টাইনে

অরিন্দম মাহমুদ, ধামইরহাট (নওগাঁ) সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৭, ৬ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সব শিশুই যেন হোম কোয়ারেন্টাইনে

একটা নির্দিষ্ট সিলেবাসে রুটিনের মধ্যে আবদ্ধ থেকে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে হয়। সকাল হতেই পড়াশোনা শেষে স্কুলে যাবার প্রস্তুতি, স্কুলে গিয়ে পড়ার  ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। ক্লাসে শিক্ষকের কাছে পড়া মুখস্থ না দিতে পারলে বকুনি, আবার কখনো কখনো পড়াশোনার ভয়ে স্কুল ফাঁকি দেওয়ার অজুহাতও চর্চাও রয়েছে।

অনেক সময় প্রাইভেট, কোচিংয়ের চাপে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয় বলে তারা খুব একটা ছুটি পায়না। তাই তারা বছরের শেষে একটিমাত্র বিশেষ ছুটির অপেক্ষায় থাকে। ছুটি পেলেই ছুটে যায় মামার বাড়ি, নানার বাড়ি, দাদুর বাড়িসহ স্বজনদের বাড়িতে। ছুটি শেষে ঘরমুখী শিক্ষার্থীরা অপেক্ষায় থাকে নতুন বছরের। এ সময় শিক্ষার্থীরা নতুন বই আর নতুন ক্লাসে ওঠার আনন্দে বিভোর থাকে।

হঠাৎ মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের আক্রমনে আজকের সব শিশুর জীবন চলে গেছে অঘোষিত লকডাউনে, কোন রোগের উপসর্গ না থাকলেও হোমকোয়ারেন্টাইনে।

নির্দিষ্ট রুটিনে বড় হওয়া ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জীবন অনেকটাই থমকে গেছে। দীর্ঘদিন ঘরে আটকে থাকায় না পারছে খেলাধুলা করতে, না পারছে ঘরে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে। একেবারে ছোটরা বাবা-মা জানতে চাচ্ছে, কবে আবার স্কুলে যাব? কতদিন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়নি, ওরা কেমন আছে তাও জানিনা।

নওগাঁর ধামইরহাট কেজি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস অনন্যা বলে, বাড়িতে বসে বসে আর ভালো লাগছে না। বাবা মা ঘর থেকে বের হতে দেয় না। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারছি না। স্কুলে গেলে অনেক মজা হয়, স্যারেরা পড়ায়, গল্প-কবিতা শোনায় আর বন্ধুদের সঙ্গে কতই না মজা করি আমরা! ইস্, কবে আবার স্কুলে যেতে পারব?

চাকময়রাম মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী এলিজা এলাহী বলে, ‘স্কুলে যাবার মজাই আলাদা। প্রতিটি শিক্ষার্থীদের জীবনে স্কুল জীবন কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা করোনাভাইরাসের কারণে ঘরে বসে থেকে গুরুত্ব অনুভব করতে পারছি।’

অভিভাবক নাজমা ফারুকী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের জীবনের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের জীবন থমকে গেছে। ঘরে বন্দি থাকায় তারা যেমন স্কুলে যেতে পারছেনা, তেমনি বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ওরা খেলাধুলা করতে না পারায় বাসায় ঠিকমতো পড়াশোনায় মনোযোগীও হচ্ছে না।

চকময়রাম মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম খেলাল ই রব্বানী বলেন, স্কুলের সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা প্রাণচাঞ্চল্য পরিবেশে প্রাত্যহিক শিক্ষাদান করে থাকতাম। করোনাভাইরাসের কারণে আজ ৫৫ বছর বয়সে এসে জনগণকে সচেতনতার পাশাপাশি নিজেও এক রকম ঘরে বসে বদ্ধ জীবন কাটাচ্ছি। আশা করি খুব শীঘ্রই এই মহামারি থেকে আমরা নিজেকে রক্ষা করতে পারব।


ধামইরহাট (নওগাঁ)/অরিন্দম মাহমুদ/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়