ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঝিনাইদহ-খুলনা মহাসড়ক: ভোগান্তির ১৩ কিলোমিটার

রাজিব হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ৭ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ঝিনাইদহ-খুলনা মহাসড়ক: ভোগান্তির ১৩ কিলোমিটার

ঝিনাইদহ থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত সড়কের ১৫ কিলোমিটারের মাঝে দুই কিলোমিটার ছাড়া বাকি ১৩ কিলোমিটার বর্তমানে পথচারীদের মহাভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাসড়টির এই অংশে পিচ-পাথর উঠে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। অনেক স্থানে এতো বড় গর্ত তৈরী হয়েছে যে, গর্তে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। আর এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঝে মধ্যে পিচ রাস্তায় ইটের সলিং করে সাময়িক চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।

ওই সড়কে চলাচলকারী একাধিক যানবাহনের চালকরা বলছেন, মাত্র ২০ মিনিটের পথ এখন ৪০ মিনিটেও যাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া এই ভাঙাচুরা সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক স্থানেই গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে থাকছে। মাঝে মধ্যে নামমাত্র সংস্কার করা হচ্ছে, যা সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। সড়কটুকুতে কর্তৃপক্ষের সুনজর নেই। অবশ্য সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তারাও সড়কটি নিয়ে বিব্রত।

সড়ক ও জনপথ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়া থেকে যশোর আর ঝিনাইদহ থেকে মাগুরা পর্যন্ত ঝিনাইদহ অংশে প্রায় ৭০ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কের ঝিানাইদহ থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত বর্তমানে চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ স্থানে তৈরী হয়েছে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের ঝিনাইদহের হামদহ বাসষ্টান্ডে পর থেকে লাউদিয়া, চুটলিয়া, তেতুলতলা, বিষয়খালী, কয়ারগাছি, ছালাভরা, বেজপাড়া, খয়েরতলা, নিমতলা বাসস্ট‌্যান্ড, মেইন বাসস্ট‌্যান্ড এলাকায় বিটুমিন (পিচ) আর পাথর উঠে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। এইসব স্থানে বর্তমানে এমন অবস্থা বিরাজ করছে, যা পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ থেকে মাঝে মধ্যে সংস্কার করা হলেও এক সপ্তাহের মধ্যেই আবার গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে।   
একাধিক যানচালক জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটির পিচ-পাথর উঠে গর্ত তৈরী হয়। আম্পান ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতি হয়েছিল সড়কের। এরপর কয়েকদফা গর্ত ভরাট করা হয়েছে, কিন্তু ২-৪ দিন পরই আবার আগের অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। 
ওই সড়কে চলাচলকারী বাস চালক জামাল হোসেন জানান, অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। বাসে যাত্রী নিয়ে হেলে-দুলে পথ চলা যায় না। তারপরও উপায়ন্তর না পেয়ে তাদের চলতে হচ্ছে।

ট্রাক চালক আব্দুল আলিম জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র যোগাযোগ হচ্ছে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-যশোর মহাসড়ক। যশোর বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ঝিনাইদহের ওপর দিয়ে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচল করে। মোংলা নৌবন্দর থেকেও মালামাল নিয়ে ট্রাক চালকরা এ জেলার উপর দিয়েই উত্তরবঙ্গে যান। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক দিয়ে ঢাকা, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ জাতীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাহী বাসসহ পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে থাকে। কিন্তু সড়কটির ঝিনাইদহ থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত তাদের ভোগান্তির শেষ নেই।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো জিয়াউল হায়দার জানান, এই সামান্য সড়কটুকু নিয়ে তিনিও বিপদে আছেন। চেষ্টা করছিলেন পিএমপি প্রকল্পের আওতায় সড়কটুকু সংস্কারের। সে লক্ষে উচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। আশা করছেন, দ্রুত সড়কটি সংস্কারের বরাদ্ধ মিলবে তারাও কাজ করাতে পারবেন। তবে আপাতত চলাচলের জন্য উপযোগী রাখতে ক্ষুদ্র মেরামত চলছে বলে তিনি জানান।

ঝিনাইদহ/সাজেদ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়