খুমেক হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের দাবি 

খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক জেলার মানুষকে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য নির্ভর করতে হয় খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতাল-খুমেকের ফরেনসিক বিভাগের ওপর।

ওই রিপোর্টের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে খুন, অপমৃত্যু, ধর্ষণসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলার ন্যায় বিচার। কিন্তু এই ফরেনসিক বিভাগের সবকটি পদ বর্তমানে শূন্য। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায়বিচার প্রার্থীরা। 

এ অবস্থার উত্তোরণে খুমেক হাসপাতালে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ এবং ওসিসি’র ল্যাবে  দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের দাবি উঠেছে।

রোববার  সকাল ১০টায় নগরীর কনসেন্স মিলনায়তনে জনউদ্যোগ, খুলনার পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে গেলেই দেখা মিলবে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও অপমৃত্যুর শিকার মানুষদের পরিবারের সদস্যদের ফরেনসিক রিপোট প্রাপ্তির বিড়ম্বনার চিত্র।

অভিযোগ করা হয়, সময়মত ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ হচ্ছে না, হচ্ছে না পরীক্ষা, ফলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক থেকে প্রভাষকসহ ৬টি পদের সবকটিই শূন্য। তাই গত কয়েক মাস ধরে ফাইলবন্দি রয়েছে শতাধিক রিপোর্ট। ফলে কেবল ন্যায়বিচার প্রত্যাশীরা নয়, ফরেনসিক মেডিসিনের ক্লাস না হওয়ায় মেডিক‌্যাল শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষা বঞ্চিত।

আরও উল্লেখ করা হয়, খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) গত তিন মাসে ৫৩ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ৯ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আর বাকীরা ১৮ বছরের উর্দ্ধে। ২৪ সেপ্টেম্ববর ধর্ষণের শিকার হয়, খালিশপুর থানা এলাকায় ৬৫ বছর বয়সি এক নারী।

এছাড়া, বেশির ভাগ ঘটনাই খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও তেরোখাদা উপজেলার। কয়রা উপজেলার বালিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা সাড়ে ৪ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে গত ১৮ আগস্ট ওসিসিতে ভর্তি হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলার তেরখাদা উপজেলায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী (৯) ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

এছাড়া, মুজগুণীতে ২৫অক্টোবর ২জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ওসিসিতে ভর্তি হয়।  এ অবস্থায় দ্রুত রিপোর্ট পেতে খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ ও ওসিসি’র ল্যাবে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানানো হয়।

জনউদ্যোগ, খুলনা নারী সেলের আহবায়ক এ্যাড. শামীমা সুলতানা শীলু, সিপিবি নেতা মিজানুর রহমান বাবু, নারী নেত্রী নূরুন নাহার হীরা, সাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দা তৈফুন নাহার, আগুয়ান ৭১ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী, মহানগর সভাপতি আবিদ শান্ত, জনউদ্যোগ যুব সেলের নূর আলম, সাংবাদিক ইয়াসীন আরাফাত রুমী ও জনউদ্যোগ, খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।