ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

পাহাড়ে এখনও লাগেনি শীতের আমেজ

নুরুচ্ছাফা মানিক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২০, ১৩ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১১:১৩, ১৩ নভেম্বর ২০২০
পাহাড়ে এখনও লাগেনি শীতের আমেজ

শীত মৌসুমকে ঘিরে প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা 

পাহাড়ে এখনও লাগেনি শীতের আমেজ। অন্যান্য বছর কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে শীতের হাওয়া বইতে শুরু করলেও খাগড়াছড়িতে এবারের চিত্র খানিকটা ভিন্ন। প্রকৃতির পালা বদলে শীত আসতে কিছুটা বিলম্ব হলেও বসে নেই এই মৌসুমকে ঘিরে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি।

খাগড়াছড়িতে দোকানে দোকানে টাঙানো হয়েছে শীতের বাহারি পোশাক। রাখা হয়েছে কম্বল ও অন্যান্য শীতবস্ত্র। ব্যস্ততা বাড়ছে লেপ বানানোর কারিগরদের। তবে শীতের আগমনী বার্তা দুঃসংবাদ বয়ে আনছে নিম্ন আয়ের ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য।

খাগড়াছড়ি শহরের মিনি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. রাসেল জানান, কয়েক দিন ধরে কিছু কিছু ক্রেতা জ্যাকেট, সোয়েটার কিনছেন। তবে শীত বেশি হলে বিক্রি বাড়বে এমন আশায় নতুন করে কম্বল, নিত্যনতুন জ্যাকেট ও সোয়েটার সংগ্রহ করা হচ্ছে।

নারিকেল বাগান এলাকার বেডিং ব্যবসায়ী মো. খোকন বলেন, ‘লেপ তৈরির অর্ডার আসতে শুরু হয়েছে। কারখানায় কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীত আসার আগে প্রস্তুতি হিসেবে অনেকে সাধ্যমতো লেপ-কম্বল নিচ্ছেন। দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি লেপের দাম কম। তবে বিদেশি কম্বলের দাম বেশি।’

ব্যবসায়ীরা শীত নিয়ে প্রস্তুতির কথা বললেও কিছুটা ভয়ে আসেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

অটোরিকশাচালক হিরু রঞ্জন দেবু বলেন, ‘শীতে নাকি করোনার প্রভাব বাড়বে। এটা নিয়ে ভয়ে আছি। গাড়ি না চালালে সংসার তো চলবে না।’
রিকশাচালক হাসান বলেন, ‘কলেজ গেইট এলাকায় একটি মেসে দৈনিক ৩০ টাকা দিয়ে রাতে থাকি। পরিবার পরিজন কেউ নেই। শীতে অন‌্যরা যখন ভালো ঘরে গরম কাপড়ের নিচে থাকবে তখন আমরা কষ্টে থাকবো। আমার মতো লোকজনদের খোঁজ কেউ রাখে না।’

প্রতিবছর শীতে শীতার্তদের পাশে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। তবে শীতবস্ত্র বিতরণের এ কালচারে কিছুটা পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে।

স্থানীয় সামাজিক সংগঠন অরণ্যে তারুণ্য’র সংগঠক অপু দত্ত বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক সময় শীত যাওয়ার পরে শীতবস্ত্র দেওয়ার হিড়িক পড়ে। এটা যদি শীতের শুরুতে দেওয়া যায় তবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রকৃত উপকারে আসতো।’

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি খাগড়াছড়ি ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান অ‌্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ‘প্রতিবছর রেড ক্রিসেন্ট যে পরিমাণ কম্বল বরাদ্দ দেয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের বাইরেও আমাদের অনেক সময় নিজের পকেট থেকে জনগণকে দিতে হয়। শীতবস্ত্রের বেলায়ও তার ব্যতিক্রম ঘটে না।’

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রমের আওতায় সরকার দেশের মানুষের জন্য নানা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছরের মতো এবারও শীতবস্ত্র আসলে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, এতিমখানাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে এ সেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ 

খাগড়াছড়ি/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়