ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কুষ্টিয়া মেডিক‌্যাল নির্মাণে অনিয়ম: তদন্তে আবারও আইএমইডি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৩, ১৮ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২২:১৬, ১৮ জানুয়ারি ২০২১
কুষ্টিয়া মেডিক‌্যাল নির্মাণে অনিয়ম: তদন্তে আবারও আইএমইডি

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সিমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি, সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত, স্বাস্থ্য ও সংস্থাপন বিভাগের অব্যবস্থাপনা ও অস্বচ্ছতা তদন্তে আবারও কাজ শুরু করেছে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। 

আইএমইডি প্রধান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত দল কাজ শুরু করেছে। 

তদন্ত দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) মো. সাইফুর রহমান, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান, গণপূর্ত বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. শওকত আলী এবং পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. আব্দুর রউফ।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) তদন্ত দল সরেজমিন নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিক‌্যাল কলেজ প্রকল্প সাইট পরিদর্শন করেছেন। পরে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব দাপ্তরিক নথিপত্র তলব করে তা পর্যবেক্ষণ করেন। 

এসময় সেখানে প্রকল্প শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী প্রকল্প পরিচালকগণ, সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীগণকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত দল।

তদন্ত শেষে তদন্ত দল ও আইএমইডি প্রধান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘এ মুহূর্তে তদন্তাধীন বিষয়ে বিশদ কিছু বলার সুযোগ নেই। তবে এটুকু বলি- আমরা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে খতিয়ে দেখছি।’ 

উল্লেখ্য, নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘায়িত নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিক‌্যাল কলেজ প্রকল্পের নির্মাণকাল সম্প্রসারণসহ আনুষঙ্গিক চাহিদা পূরণকল্পে উন্নয়ন প্রস্তাবনা অনুমোদন চেয়ে একনেক সভায় উপস্থাপন করেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। 

গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভার সভাপতি প্রধান মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে উন্নয়ন প্রস্তাবনার ফাইল ফেরত পাঠান এবং ওই দিনই নির্মানাধীণ এই প্রকল্পটি তদন্তের নির্দেশ দেন আইএমইডিকে।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘এসবের কারণে নির্ধারিত নির্মাণকালের প্রায় তিনগুণ সময় পেরিয়ে যায়। এছাড়া সরকারি অর্থ ব্যয়সহ অপচয়ের কারণে ঝুলে থাকা নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিক‌্যাল কলেজ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’ 

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩ মার্চ কুষ্টিয়াসহ আশপাশের পাঁচ জেলার মানুষের চাহিদার কথা ভেবে ২৭৫ কোটি টাকার প্রাক্কলন ব‌্যায়ে একনেক সভায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন, দরবৃদ্ধি করে কার্যাদেশ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ২০১৭ সালের মধ্যভাগে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ‘বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ’ (আইএমইডি) তদন্ত করেছিল। 

ওই সময় তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকল্পটির নির্মানাধীণ একাডেমিক, হাসপাতাল, ছাত্রাবাস ও আবাসিকসহ সবকটি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেই নকশা পরিবর্তনসহ নানা অনিয়মের সত্যতা পেয়েছিল তদন্তকারী দল। ওই প্রতিবেদনে প্রকল্পটির প্রায় সব ক্ষেত্রেই বেঁধে দেওয়া ব্যয়ের সীমা লঙ্ঘন করে অনুমোদন না নিয়েই অর্থ ব্যয় করে সরকারি ক্রয় আইনের ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘নির্মানাধীণ কুষ্টিয়া মেডিক‌্যাল কলেজ প্রকল্পটি ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তদন্ত চলছে। বলতে পারেন আমি নিজেই আজ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছি। ফলে তদন্তাধীন এই বিষয়ে কোনো কিছুই বলার কোনো এখতিয়ার আমার নেই।’

কাঞ্চন কুমার/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়