ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

হিটশকে নষ্ট হয়েছে বাগেরহাটের ৪শ ৪২ হেক্টর জমির ধান

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ৮ এপ্রিল ২০২১  
হিটশকে নষ্ট হয়েছে বাগেরহাটের ৪শ ৪২ হেক্টর জমির ধান

হিটশকে বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় ৪শ ৪২ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র চিতলমারী উপজেলাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২শ হেক্টর জমির ধান। এ তথ্য বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের।

গত ৪ এপ্রিল রাতের কালবৈশাখীর পর বয়ে যাওয়া ঝড়ো গরম বাতাসে কৃষকদের ক্ষেতের ধানের এই ক্ষতি হয়। ধানের এমন ক্ষতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। দূর থেকে ধানগাছগুলোকে স্বাভাবিক মনে হলেও ছড়ায় থাকা ধানগুলো চিটে হয়ে গেছে। বাতাসের তোড়ে কিছু ক্ষেতের ধান মাটির সাথে মিশে গেছে। 

করোনা পরিস্থিতিতে ধারদেনা করা টাকায় উৎপাদিত ফসলের এমন ক্ষতিতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক। কৃষি বিভাগ বলছে, আবার এমন হিটশকের ঘটনা না ঘটলে হয়তোবা কৃষকরা অনেকটাই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন।

বুধবার (৭ এপ্রিল) চিতলমারী উপজেলার শ্রীরামপুর বিলে সরেজমিনে বোরো ধানের জমিতে গেলে দেখা যায়, চোখ যেদিকেই যায় শুধুই মাঠভরা ধান। কিন্তু কাছে গিয়ে দেখা গেলো চিত্রটা উল্টো। মাঠভরা ধানে শীষগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড তাপদাহে অনেক ধান চিটা হয়ে গেছে।

সেখানে কথা হয় কৃষক লোপা মন্ডলের সাথে। তিনি বলেন, নগদ-বান্দায় জমি রেখে ধান লাগিয়ে ছিলাম। কিন্তু কয়েক মিনিটের ঝড়ে ধানগুলো নষ্ট হয়ে গেল। ধানের কাছে আসলে চোখ থেকে শুধু জল বের হয়। কিভাবে চলব এখন। সংসারে ৬ জন লোক, প্রতিদিন কাজ না করলে পেটে ভাত জোটে না। শুধু তো আমার নয়, এলাকার অনেকেরই এই অবস্থা। কি যে হবে ভগবানই জানে’।

এছাড়া কৃষক রত্না বৈরাগী, সাথী মন্ডল, রনজিত কুমার এরা বললেন, খুব আশা করে ধান রোপণ করেছিলাম। এক মাসের মধ্যেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু এখন ধানের যে ক্ষতি হয়ে গেল, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। ঝড়ের পরে ধানের কাছে এসে কানতে কানতে বাড়ি চলে যাই। ধানের মধ্যে সব চিটা, ধানে কিছু নেই।

চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন বলেন, আমাদের এলাকার মানুষের জীবন জীবিকা ধান ও সবজির উপর। করোনার কারণে এমনিতেই মানুষ নানা সংকটে রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক কৃষকের ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সরকারের সহায়তা খুবই জরুরি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় এবার ৫৫ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। হিটশকে ৪শ ৪২ হেক্টর জমির ধানই নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা চাষিদেরকে পরিমিত সেচ ও যৌক্তিক পটাশ সারের স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছি।

টুটুল/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়