ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

মাগুরায় বন্ধ স্কুলে জুয়ার আসর 

মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৩, ১৪ জুলাই ২০২১   আপডেট: ২০:১০, ১৪ জুলাই ২০২১
মাগুরায় বন্ধ স্কুলে জুয়ার আসর 

খালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় জুয়ার আসর

মাগুরায় নিভৃত গ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত জুয়ার আসর বসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রেখে খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ উঠেছে। করোনাসৃষ্ট মহামারিতে জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটানা প্রায় দেড় বছর বন্ধ। এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন একশ্রেণীর অসাধু মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া মাধ্যমিক ও খালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একই ক্যাম্পাসে অবস্থিত। স্থানীয় বখাটেরা বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসিয়েছে জুয়ার আসর। এছাড়া রাস্তার নির্মাণ সামগ্রীতে দুটি বিদ্যালয়ের মাঠ এখন খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এদিকে আসর বন্ধ করতে গিয়ে হুমকির শিকার হয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার জাহিদ। তিনি বলেন, ‘জুয়া খেলতে নিষেধ করলে তারা শোনে না। যদি বেশি নিষেধ করি, তাহলে তারা তালা ভেঙে স্কুলের সব নিয়ে যাবে।’ এর আগে নিষেধের কারণে তারা স্কুলের তালা ভেঙেছিল বলে জানান তিনি।

মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহের জন্য একজন ঠিকাদারকে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল। তিনি এক মাসের বেশি সময় মাঠে রাস্তার নির্মাণ সামগ্রী রেখেছেন। তাকে দ্রুত মাঠ পরিষ্কার করার জন্য বলেছি।’

১৪ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে ওই বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায়, ১০-১২ জন যুবক বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসে জুয়া খেলছেন। এমন সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মেজবাউল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি জানান, স্কুলের বারান্দায় এলাকার ছেলেরা তাস-জুয়া খেলে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে এটি বেড়েছে।

চারজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ। ফলে স্কুলের পরিচর্যা নেই। অধিকাংশ স্কুলে পরিছন্নকর্মী এবং নৈশপ্রহরী না-থাকায় স্কুলের ভবনগুলো অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা বেশি বেহাল।

শ্রীপুর উপজেলার মাঝাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গুলশান আরা বেগম বললেন, মাঝেমধ্যে স্কুলে যাই। পরিষ্কার করি। স্কুল বন্ধ থাকায় দিনে-রাতে স্থানীয় বখাটেরা আড্ডা বসায়। তাদের কিছু বললে নানা ঝামেলায় পড়তে হয়।

মাঝাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি সৈয়দ রজব আলি বাচ্চু বলেন, গ্রামের অনেক স্কুলে চুরি হচ্ছে। আসবাবপত্রসহ চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান জিনিসপত্র। তদারকি ও পাহারার জন্য জনবল না থাকায় এই সমস্যা হচ্ছে।’

মাগুরা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ কামরুল হাসান এবং মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল দুজনেই অভিযোগ অথবা সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে বখাটে ও জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, মাগুরা জেলায় সরকারি ২টি, বেসরকারি ২৪টি মোট ২৬টি কলেজ; মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি ২টি, বেসরকারি ১৪৭টি মোট ১৪৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়; নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩০টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ৭২টি। এছাড়া জেলায় ৫০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

শাহীন/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়