ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সাভারে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়কে বেঁধে নির্যাতন

সাভার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ১২ আগস্ট ২০২১  
সাভারে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়কে বেঁধে নির্যাতন

ঢাকার সাভারে অন্তঃসত্ত্বা নাতনিকে নিতে গিয়ে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই ব্যক্তি। মারধরের পর মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ নির্যাতিতদের উদ্ধার করেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকালে নির্যাতিত দুই পরিবারের সদস‌্যরা সাংবাদিকদের কাছে উল্লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার দুজন হলেন পঞ্চাশোর্ধ আব্দুল মান্নান ও তার আত্মীয় শহীদ মোল্লা। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানার ধরলা ইউনিয়নের বাসিন্দা তারা। অভিযুক্তরা হলেন—সাভার উপজেলার বনগাঁও ইউনিয়নের হাদারপুর কাজীপাড়া এলাকার আবুল কালাম ও তার বাবা বাশার মহাজন।

১১ মাস আগে আবুল কালামের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সিঙ্গাইরের সোনিয়া আক্তারের। সোনিয়ার নানার আত্মীয় হন আব্দুল মান্নান ও শহীদ মোল্লা।

আব্দুল মান্নানের ছেলে ফরিদুল আহমেদ বলেন, ‘সোনিয়ার বাবা ১০ বছর আগে সৌদি আরবে মারা যান। তারপর থেকেই সোনিয়া তার নানা আরশাদ আলির বাড়িতে থাকত। ১১ মাস আগে কালামের সঙ্গে যখন সোনিয়ার বিয়ের বিষয়ে কথা চলছিল, তখন ওদের সঙ্গে আমাদের বিবাদ হয়। বিয়ে হয়ে গেলেও ওই বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছিল। কালামদের বাসায় কেউ যেতো না। এরই মধ্যে সোনিয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানতে পেরে তাকে নানার বাড়িতে মায়ের কাছে আনার কথা চলছিল। এজন্য গত পরশু দিন (মঙ্গলবার) দুপুর দেড়টার দিকে সোনিয়ার নানা আমার বাবা আব্দুল মান্নান ও তার ফুপাতো ভাইকে বনগাঁওয়ে পাঠায়। তবে ওদের সাথে সম্পর্ক ভালো না থাকায় হাদারপুর বাজারে বসে স্থানীয় দুজনকে সোনিয়ার শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হয়। পরে সোনিয়ার স্বামী ও শ্বশুরসহসহ তাদের বাড়ির লোকজন বাজারে এসে আমার বয়স্ক বাবা ও তার ফুপাতো ভাইকে পিছমোড়া করে গামছা দিয়ে বাঁধে। মারতে মারতে নির্জন স্থানে একটি ভবনের ছাদে নিয়ে বসিয়ে মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেয়। সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। পরে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠায়। ওই ভিডিও ও ছবি আমাদের এলাকার অনেকের কাছে পাঠিয়ে সামাজিকভাবে হেয় ও ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। পরে ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানানো হলে মঙ্গলবার রাত ২-৩টার দিকে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। কিন্তু অভিযুক্তদের আটক করতে পারেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে অভিযোগ দিতে সাভার মডেল থানায় গেলে ডিউটি অফিসার এসআই নাজিউর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। পরে থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালামকে বিষয়টি জানালে তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে আবার থানায় ডাকেন। তবে যাওয়ার আগে এসআই নাজিউরকে ফোন করলে তিনি আবারও বিকেলে আসতে বলেন। আসলে পুলিশ আমাদের সেভাবে কোনো সাহয্য করেনি।’

এ বিষয়ে সোনিয়ার স্বামী আবুল কালাম বলেছেন, ‘আমি তো নির্যাতন করি নাই। তারা আমার শ্বশুরও না, নানাশ্বশুরও না। একজনকে তো আমি চিনিই না। আরেকজন দুঃসম্পর্কের আত্মীয়। আইসা আমার বউরে জোরজবরদস্তি কইরা টাইনা নিয়া যাইতে চাইছে। তখন আমার বউ বাঁচাও বাঁচাও বইলা চিৎকার করছে। পরে দৌড়ায় গিয়া ধইরা আইনা বাইন্ধা রাখছি। পরে তো এখানে মীমাংসা হইছে।’

কালাম মোবাইল ফোন  ও টাকা কেড়ে নেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

বনগাঁওয়ের ভবানীপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজিউর রহমানকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যস্ত আছি। পরে ফোন দেন।‘

সাভার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, 'আমি তো এত কিছু জানি না। ওনাদের একটু থানায় পাঠায় দেন। আমরা মামলা নেবো।’

সাব্বির/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়