স্কুলের চারদিকে থৈ থৈ পানি, বাড়ির উঠানে ক্লাস
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বন্যার শুরু থেকে বিদ্যালয়ের চারদিকে থৈ থৈ পানি। বর্তমানেও শ্রেণিকক্ষে তিন ফুটের মতো পানি রয়েছে। পানির কারণে স্কুলে প্রবেশ ও ক্লাস নেওয়ার মতো অবস্থা নেই।
এদিকে রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে সারাদেশে ক্লাস শুরু হয়েছে। তাই টাঙ্গাইলের বাসাইলে শিক্ষার্থীদের স্কুলের পাশেই এক বাড়িতে ক্লাস করতে দেখা গেছে। কিন্তু সেখানেও জায়গা সঙ্কটে গরমে দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।
নানা প্রতিকূলতার মধ্যে বাসাইল উপজেলার রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বশরীরে ক্লাসে অংশ নিতে পেরে খুব খুশি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা আক্তার জানান, বন্যার শুরু থেকে স্কুলে পানি প্রবেশ করেছে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে স্কুলের জমিদাতা নজির হোসেনের বাড়িতে ঘরের মেঝে ও উঠানে ক্লাস নেওয়া হয়েছে।
রোববার প্রথম দিনে ৫ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস ছিলো। উপস্থিতিও ছিলো ভাল। স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ১১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। দীর্ঘদিন পরে হলেও ক্লাসে সরাসরি অংশ নিতে পেরে শিক্ষার্থীরা খুব খুশি।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী নিলুফা আক্তার বলেন, অনেক দিন পর ক্লাস করতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। তবে আমাদের রঙিন স্কুলে ক্লাস করতে পারলে আরো বেশি ভাল লাগতো। কিন্তু বন্যার কারণে আমাদের স্কুলে অনেক পানি। দীর্ঘদিন পর অনেক বন্ধুরা এক সাথে ক্লাস করতে পেরেছি।
একই শ্রেণির নিঝুম আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকলেও তেমন পড়তে পারিনি। স্কুলে ক্লাস নিলে বন্ধুদের সাথে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পড়াশোনা করা যায়। পড়ালেখাও ভাল হয়।
স্কুলের শিক্ষক মো. আলমগীর ভূইয়া বলেন, বিভিন্ন স্কুলে উৎসবমুখর পরিবেশে ক্লাস নিতে পারলেও বন্যার কারণে আমরা নিতে পারিনি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস করেছি। তবে জায়গা না থাকায় শিক্ষার্থীদের বসতে কষ্ট হয়েছে। প্রচণ্ড গরমেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। পুরা এলাকাতেই পানি থাকায় দূর থেকে নৌকা যোগে স্কুলে যেতে হয়। শুকনো মৌসুমেও কাদার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সব মিলিয়ে হতাশার মধ্যে আছি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা আক্তার বলেন, সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে মাস্ক দেওয়া হয়েছে। হ্যান্ড স্যানেটাইজারসহ সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ছিলো। বন্যার পানি সরে গেলে শ্রেণি কক্ষেই ক্লাস নেওয়া হবে।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের ২ হাজার ৪২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মধ্যে এক হাজার ৬২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭৯৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফুল দিয়ে বরণসহ নানা আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়েছে।
আবু কাওছার/টিপু