ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

গাজীখালি নদীতে অবৈধ ড্রেজার, হুমকিতে ফসলি জমি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১০:৫৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
গাজীখালি নদীতে অবৈধ ড্রেজার, হুমকিতে ফসলি জমি

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও ঢাকার ধামরাই উপজেলার গাজীখালি নদীর বারবারিয়া এলাকায় ড্রেজার চালিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করায় হুমকিতে পড়েছে শ্মশানঘাটসহ কয়েক একর ফসলি জমি।

সরকার দলীয় নাম ভাঙিয়ে আব্দুস সাত্তার নামের এক ব্যক্তি ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু বিক্রি করছেন। বিষয়টি মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েও কোনো সমাধান হয়নি বলে মন্তব্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের।

বুধবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজিমনে ঢাকার ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবারিয়া এলাকায় ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়। বারবারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনের অংশে ওই বালুর ভিটি তৈরি করছে বালু ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

ড্রেজারে কাজে বালু উত্তোলনে ব্যস্ত শ্রমিক ইউনুস মিয়া বলেন, ‘প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে গাজীখালি নদীতে ড্রেজার বসানো হয়। তারা সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। নদী থেকে বালু তুলে রাস্তার পাশে ভিটি করে বালু জমাট করে রাখা হয়। সেখান মাটি বিক্রি করেন মালিকপক্ষের নিয়োজিত লোকজন।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ড্রেজার ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘নদী খনন প্রকল্পের আওতায় নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন তিনি। তার সঙ্গে আরও দুইজন ব্যবসায়ী রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মবিনুর রহমান তাকে নদী উত্তোলন করতে বলেছেন।’

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মবিনুর রহমান জানান, নদী খননের প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ৭ই জুলাই সমাপ্ত হয়ে গেছে। সেখানে নদী খননের প্রকল্পের জন্য নদী থেকে মাটি বা বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি পুরোটাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাম ভাঙানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি  ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে মুঠোফোনে জানানো হয়েছে। এছাড়াও মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার আব্দুস সাত্তারকে নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তারা কোনো তোয়াক্কা না করেই দেদারসে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারবারিয়া এলাকার একাদিক কৃষক বলেন, ‘বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে তাদের ফসলি জমি। বিষয়টি মৌখিকভাবে ড্রেজার ব্যবসায়ীদের জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বরং এসব বিষয়ে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি করলে বড় ধরণের ক্ষতি হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সাত্তারের লোকজন। সব সময়ই ড্রেজার দেখাশুনার জন্য ৭/৮ জন লোক ড্রেজারের আশেপাশে থাকে। আমরা এক প্রকার সহ‌্য করে আছি।’

জানতে চাইলে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী জানান, গাজীখালি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই এ বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চন্দন/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ