ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যানজটে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৪, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ২০:০৩, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
যানজটে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী

রংপুর শহরের রাস্তাগুলোতে তীব্র যানজট এখন প্রতিদিনের চিত্র। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই যানজটের কবলে পড়ে নাকাল নগরবাসী। রংপুরবাসীর দাবি, অটোরিকশা চলাচলে নিয়ন্ত্রণ না থাকা ও অতিরিক্ত অটোরিকশা চলাচল করায় শহরে প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আর রংপুর সিটি করপোরেশন মেয়র বলছেন, সিটি করপোরেশন ও মহানগর ট্রাফিক বিভাগ যৌথভাবে এই যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

শহরের জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পায়রা চত্বর হয়ে সিটি বাজার পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়কের আশপাশে বিপণিবিতান, বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ অফিস অবস্থিত। অটোরিকশার কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে প্রতিদিন যানজটের কবলে পড়তে হয় নগরবাসীকে। আবার এই স্থানে যানজটের তীব্রতা সৃষ্টি হলে এর রেষ যেন সিটি বাজার অতিক্রম করে কাচারী বাজার পর্যন্ত পৌঁছায়। অন্যদিকে ক্লিনিক পাড়ায় পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় থেকে মেডিক্যাল মোড়ের চিত্র যেন আরও ভয়াবহ। জরুরি কাজে নগরে আসা মানুষের জীবন দূর্বিসহ হয়ে পড়ে।

বাজার শেষ করে রাস্তার উল্টো দিকে যাওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন শহরের সিটি বাজার এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বাবু। তিনি বলেন, ‘বাজার করতে যত সময় লাগে, তার থেকে বেশি সময় রাস্তায় চলে যায়। রাস্তা পার হতেও এই রোদে সময় লাগে অনেক।’

এদিকে পায়রা চত্বরে সড়কের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো অটো স্ট্যান্ডে পরিণত করে রাখে দিনের বেলায় যাত্রীর আশায়। এতে অনেকাংশে রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়ে। সিটি বাজার থেকে পায়রা চত্বর হয়ে জাহাজ কোম্পানি মোড় পর্যন্ত পাঁচ থেকে আট মিনিটের হাঁটাপথ, সেখানে অটোরিকশায় গেলে সময় লাগছে ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট।

মর্ডান এলাকার অটো চালক মনির মিয়া বলেন, 'এতদিনে করোনার বিধিনিষেধ গেল। এখন আবার রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকতে হয়। এ জ্যামের কারণে আয় রোজগারও কমে গেছে। ভ্যাপসা গরমে জ্যামে আটকে থেকে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছি।'

নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকার অটো রিকশা চালক আব্দুল গফুর বলেন, 'দীর্ঘ আট বছর থেকে রিকশা চালাই বাহে। কিন্তু গেল দুই তিন বছরে এই সড়কে এতো অটোরিকশা বাড়ি গেইছে বলার মতন ভাষা নেই। আগে রিকশা চালাইতেও একটা আনন্দ আছিলো আর এখন খালি আস্তাত জ্যাম। অন্য আস্তাত যাত্রি কম নিরূপায় হইয়া শহরোত আসি কষ্ট ভোগ করি।'

শহরের জাহাজ কোম্পানি মোড় এলাকায় চারদিক থেকে চারটি সড়ক এসে মিলেছে। এ মোড়ের চারদিকেই বিপণিবিতান অবস্থিত। এখানেও সড়কের মধ্যে অটোরিকশার স্ট্যান্ড দেখা যায়। এই মোড়ের পাশে শহরের প্রধান ব্যবসায়ীকেন্দ্র হাঁড়িপট্টি, লোহাপট্টি ও বেতপট্টি।  এই এলাকার ছোট সংযোগ সড়কগুলোয় কেনাকাটা করতে এসে দীর্ঘ সময় মানুষকে যানজটে আটকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এ সময় এক নারী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘বছরের পর বছর এ অবস্থা দেখে আসছি। এ বিষয়ের কি কোনো সমাধান নেই?’ 

এদিকে শহরে বর্তমানে ২০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করলেও সিটি করপোরেশনের ভাষ্য অনুযায়ী লাইসেন্স নিয়ে ৫ হাজার ২৪০টি অটো আর ৩ হাজার আটোরিকাশা চলাচল করছে মহানগরে।

মহানগর ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শহরে দিন দিন অটোরিকশা বেড়ে যানজটের সৃষ্টি করছে। আমরা এই যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান এ বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বলেন, প্রতিদিন মহানগর এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে অসংখ্য নিবন্ধনহীন অটোরিকশা শহরে ঢুকে পড়ে যানজট সৃষ্টি করছে। ট্রাফিক বিভাগসহ আমরা সেসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছি এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

আমিরুল/সুমি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়