ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সোমবার পঙ্গু মোজাম্মেলকে দোকান ও গাড়ি দিচ্ছে ওয়ালটন

দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৬, ২৪ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ২২:১৯, ২৪ অক্টোবর ২০২১

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কুন্দনহাটের দুই পা হারা পঙ্গু মেইল মোজাম্মেলকে নতুন দোকান ও গাড়ি দিচ্ছে বাংলাদেশের সুনামধন্য কোম্পানি ওয়ালটন।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় বিরামপুর উপজেলার কুন্দনহাটে মেইল মোজাম্মেলের হাতে দোকান ও গাড়ির চাবি তুলে দেয়া হবে।

এসময় প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত থাকবেন বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিরামপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকার, বিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ সুজন কুমার মহন্ত, হাকিমপুর (হিলি) প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বৈশাখী টিভির হিলি প্রতিনিধি, সাপ্তাহিক হিলিবার্তা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও এনটিভির হিলি প্রতিনিধি এবং সাপ্তাহিক আলোকিত সীমান্ত পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও জিটিভির হিলি প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন বুলু এবং বিরামপুর প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানসহ অন‌্যান‌্যরা।

সার্বিক ব্যবস্থাপনায় থাকবেন ওয়ালটন কোম্পানির বিরামপুর শোরুমের ম্যানেজার শাহা আলম।

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন ‘সাহসের প্রতীক ‘মেইল’ মোজাম্মেল’ শিরোনামে ভিডিও সংবাদ প্রচার হয় দেশের জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি অনলাইনে। সংবাদটি প্রচারের পর সেটি চোখে পড়ে ওয়ালটনের ডিএমডি হুমায়ুন কবিরের। পরে তার নির্দেশক্রমে ওয়ালটন কোম্পানির বিরামপুর শোরুম ম্যানেজার শাহা আলম পঙ্গু মোজাম্মেল হকের জন্য একটি নতুন দোকান ও তার চলাচলের জন্য একটি চার্জার অটোবাইক তৈরির কাজ শুরু করেন। জায়গার জটিলতা কাটিয়ে মোজাম্মেলের দোকান ও গাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। আগামীকাল আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ‘মেইল’ মোজাম্মেল হকের নিকট দোকান ও গাড়ির চাবি তুলে দেবে ওয়ালটন কোম্পানি।

জানা যায়, মেইল মোজাম্মেল হক ১০ বছর আগে একজন তরতাজা, সুষ্ঠু সবল দেহের অধিকারী মানুষ ছিলেন। প্রথমের তার পায়ের একটি আঙ্গুলে ক্ষত হয়। আর সেই ক্ষত স্থানটিই মোজাম্মেলের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। একের পর এক অপারেশন করে কেটে ফেলতে হয় তার দুই পা। চারটি অপারেশনে দুই পায়ের পাশাপাশি তিনি শ্রবণ শক্তিও হারিয়ে ফেলেন। দীর্ঘদিনের চিকিৎসায় মোজাম্মেলের যা ছিল সব শেষ হয়ে যায়। তবুও ভেঙে পরেননি সাহসী এই মানুষটি।

পেশায় তিনি একজন সাইকেল, ভ্যান, রিকশার মেকার। দুই পা হারিয়েও তিনি তার কর্ম থেকে কখনো পিছপা হননি। কোমরের উপর ভর করেই সাইকেল, রিকশা ও ভ্যান মেরামত করছেন। শত কষ্টের মাঝেও কারও কাছে হাত পাতেননি। পঙ্গু অবস্থায় কাজ করে চার ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া করিয়েছেন। মেয়েদের ‘বিএ’ পাশ করিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে মোজাম্মেলের ক্ষত স্থানগুলোতে বেড়ে যাচ্ছে জ্বালা-যন্ত্রণা। বয়সের ভারে কাজের গতিও কমে যাচ্ছে। তার যে চলাচলের গাড়িটি আছে, সেটিও অকেজো হয়ে গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অন্যের দোকান ভাড়া নিয়ে চলে তার কর্মজীবন। দোকানে নেই কোনও যন্ত্রাংশ। তাই প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে আয় রোজগার। এখন সারাদিনে রোজগার হয় দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। তবে কাল থেকে শুরু হবে মোজাম্মেলের এক নতুন জীবন। আর ভাড়া দোকানে থাকতে হবে না। ছোট ভাঙাচোরা গাড়িতেও বসতে হবে না। সোমবার থেকে সে হবে একটি দোকানের মালিক এবং চড়বেন একটি উন্নতমানের বড় আকারের গাড়িতে। দোকানে থাকবে বিভিন্ন রকমের যন্ত্রাংশ, ক্রেতাদের যেতে হবে না অন্যের দোকানে। সব মিলিয়ে সাহসী মেইল মোজাম্মেল আবার চলবেন আপন গতিতে।

মোসলেম/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়