ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সুরভী-৯ লঞ্চে আগুন আতঙ্ক, পরে যাত্রীদের নির্যাতন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ৯ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৯:১৮, ৯ জানুয়ারি ২০২২
সুরভী-৯ লঞ্চে আগুন আতঙ্ক, পরে যাত্রীদের নির্যাতন 

ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে আগুন আতংকে মেঘনা নদীতে যাত্রাবিলম্ব হওয়া এমভি সুরভী-৯ লঞ্চে যাত্রীদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

লঞ্চটি রোববার (৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে বরিশাল নদীবন্দরে নোঙ্গর করার আগে লাঠিসোঁটা দিয়ে যাত্রীদের নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা নদীবন্দরে গিয়ে ভিডিওচিত্র তুলতে গেলে দুইজন ক্যামেরাপারসনকে মারধর করে হামলাকারীরা। 

এ সময় ক্যামেরার লাইট ভেঙে যায়। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সুরভী লঞ্চের ম্যানেজার মো. মিজানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সুরভী লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। হামলার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা বলেছেন নির্যাতিতরা। 

৫ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি সুরভী-৯ লঞ্চটি শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে মেঘনা নদী অতিক্রমকালে সাইলেন্সার পাইপে লাগানো তাপনিরোধক (পলেস্তার) প্রলেপ থেকে বাম্পীয় ধোঁয়া বের হয়। এতে যাত্রীদের মাঝে আগুন আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

যাত্রীদের মধ্যে কেউ জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। ওই রাতে কোস্টগার্ডের একটি দল মাঝ নদীতে লঞ্চে গিয়ে ধোঁয়ার উৎস খুঁজতে থাকে। তারা লঞ্চটিকে মেঘনার মোহনপুর এলাকায় নোঙ্গর করতে বাধ্য করে। পরে চাঁদপুর নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ইঞ্জিন পরীক্ষা করার পর ভোর সাড়ে ৪টার পর লঞ্চটি মেঘনার মোহনপুর থেকে বরিশালর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। 

রাতভর অনেক যাত্রী তাদের দুর্ভোগের বিষয়টি নিজ নিজ ফেসবুক পেজে লাইভ করে। অনেকে ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে। লাইভ এবং ফেসবুকে যাত্রীরা লঞ্চের সার্ভিস নিয়ে নানা মন্তব্য করে। এর জের ধরে সকালে লঞ্চটি বরিশাল নদী বন্দরে পৌঁছলে লঞ্চের ম্যানেজার মো. মিজানের নেতৃত্বে শ্রমিকরা বেশ কয়েকজন যাত্রীকে মারধর করে।

খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা নির্যাতনের ছবি তুলতে গেলে তাদের উপরও হামলা চালায় তারা। হামলায় ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন দেওয়ান মোহন ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরাপানমস রুহুল আমীন আহত হয়। ভেঙে যায় মোহনের ক্যামেরার লাইট। যাত্রী এবং সাংবাদিক নির্যাতনের চিত্র লঞ্চের নিজস্ব সিসি ক্যামেরায় ধারণ হয়। 

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) বলেন, তাদের সামনে ঘটেছে যাত্রী এবং সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা। এ ঘটনায় নির্যাতিত কেউ আইনি পদক্ষেপ নিলে তাদের সহায়তা করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা। তবে তার আগেই পালিয়ে যায় হামলকারীরা। এ ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিএমপি’র সহকারী কমিশনার (কোতয়ালী) শারমিন সুলতানা রাখী। 

যাত্রী এবং সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছে সুরভী নেভিগেশন গ্রুপের পরিচালক মো. রেজিন-উল কবির। নির্যাতনের ঘটনায় লঞ্চের ম্যানেজার মিজানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কেউ আইনগত পদক্ষেপ নিলে কর্তৃপক্ষের আপত্তি থাকবে না।
 

স্বপন/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ