ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

লোকবল সংকটে শায়েস্তাগঞ্জ মৎস খামার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১১, ৪ এপ্রিল ২০২২   আপডেট: ১৩:২১, ৪ এপ্রিল ২০২২
লোকবল সংকটে শায়েস্তাগঞ্জ মৎস খামার

হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের আশপাশে গড়ে উঠছে শিল্প কারখানা। পরিবেশের উপর বাড়ছে চাপ। খামারটিকে রয়েছে লোকবল সংকট। চ্যালেঞ্জের মুখে থাকার পরও এ খামারে উৎপাদন হচ্ছে মানসম্মত মাছের পোনা ও রেনু। এসব পোনা সুলভমূল্যে ক্রয় করে চাষিরা মাছ চাষ করছেন। তৈরী হচ্ছে কর্মসংস্থান। 

এ অবস্থায় এখানে শূন্য পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হলে উৎপাদন কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

খামার সূত্রে জানা গেছে, চাষিদের লাভবান করতে সরকার জেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার থানা ভবনের কাছে প্রায় ১ হাজার ২৩২ শতক জমি অধিগ্রহণ করে। সরকারিভাবে এ জমিতে ১৯৬২ সালে স্থাপন করা হয় শায়েস্তাগঞ্জ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার। এ খামারটি শুরু থেকে চাষিদের মানসম্মত মাছের পোনা সরবরাহ করে আসছে। হ্যাচারীসহ ১২টি পুকুরে মাছের পোনা চাষ হচ্ছে। এক সময়ে এ খামারটিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও চালু করে চাষিদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে মৎস্য চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। 

মৎস্য সম্প্রসারণ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শায়েস্তাগঞ্জের এ খামারে বর্তমানে মাছের পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণে উৎপাদিত এ পোনা সুলভমূল্যে ক্রয় করে চাষিরা পুকুরে চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।  

কিন্তু আলো ছড়ানো বিশাল এ খামারের দেখভালকারী ৫টি পদের মধ্যে ৩টি শূন্য। লোকবল সংকটের মধ্যেও খামার ব্যবস্থাপক ও হ্যাচারি সহচরের দায়িত্ব পালনে অতিরিক্ত শ্রম দিতে হচ্ছে। অফিস সহায়ক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও ক্ষেত্র সহকারী পদ শূন্য। এখন পর্যন্ত লোকবল নিয়োগ করা হয়নি এসব পদে। এ কারণে সরকারি এ মৎস্য খামারে পোনা মাছ উৎপাদন রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও খামার ব্যবস্থাপক হিসাবে ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট যোগদান করা অশোক কুমার দাশের দায়িত্বশীল ভূমিকায় পোনা, রেনু পোনা ও বড় মাছ উৎপাদনে সফলতা আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। 

চলতি বছর নানা প্রজাতির রেনু ২২৫ কেজি, ৩ লাখ পোনা, ব্রুড মাছ ১ হাজার ৮০০ কেজি প্রতিপালন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্রুড মাছ থেকে রেনু পোনা উৎপাদন করা হয়। এসব মাছ চাষে খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা। বিক্রির লক্ষমাত্রা ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা।  

রেনু ও পোনার পাশাপাশি চাষিদের সঠিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে এ খামার থেকে। পরামর্শ পাওয়ায় দিন দিন বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

খামার ব্যবস্থাপক অশোক কুমার দাশ বলেন, ‘রাতের বেলায় পাহারার জন্য জরুরী ভিত্তিতে নৈশ প্রহরী ও পোনা সবররাহে গাড়ি এবং চালক পদ সৃষ্টি করে লোকবল নিয়োগ করাও প্রয়োজন। বর্তমানে ৪ জন শ্রমিককে অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছে। শূন্য পদে লোক নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেছি। 

তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন স্থান থেকে চাষীরা আসছে। আমি তাদেরকে সঠিক পরামর্শ প্রদানের চেষ্টা করছি। এ খামারের সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। বাকি পাশে মনোরম পরিবেশ। যোগাযোগের ব্যবস্থা উন্নত থাকায় মৎস্য চাষিদের এখানে নিয়মিত যাতায়াত আছে। এ মৎস্য খামারকে কেন্দ্র করে প্রায় এক হাজার চাষি উপকৃত হচ্ছেন।’

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, একাধিকবার সরকারি বরাদ্দে ঠিকাদারের মাধ্যমে এ খামারের উন্নয়ন হয়েছে। তবে এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়নি। অনেকে মনে করেন, বরাদ্দ সাপেক্ষে সংস্কার কাজ করে শূন্য পদে লোকবল নিয়োগ দিলে মৎস্য চাষের উন্নয়নে এ খামারটি আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারবে। খামার এলাকায় কলা, সবজি, ফল ও ফুলের গাছ রয়েছে। তবে পূর্বের তুলনায় গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পাখিদের বিচরণও কমে গেছে।’  

মামুন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়