ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

এখনো টিকে আছে পানি সেচের সনাতন পদ্ধতি

রফিক সরকার, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১১, ২৭ এপ্রিল ২০২২   আপডেট: ১২:১২, ২৭ এপ্রিল ২০২২
এখনো টিকে আছে পানি সেচের সনাতন পদ্ধতি

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের কৃষকেরা আধুনিক সেচযন্ত্র দিয়ে নয়, সেচ দিচ্ছেন সনাতন পদ্ধতিতে। যেখানে সব ক্ষেত্রে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে, সেখানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলি জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ব্যবহার হচ্ছে সনাতন পদ্ধতি ‘দোন বা দোংগা’র ব্যবহার। তবে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নে এটি ব্যবহৃত হয়। এলাকাভেদে একে ভিন্ন ভিন্ন নামে চেনেন কৃষকেরা।

কাওরাইদ ইউনিয়নে নান্দিয়া সাঙ্গুন, ধামলই, সোনাব, নয়াপাড়া আর গলদাপাড়া গ্রামের কৃষকেরা বেশি ব্যবহার করেন দোন বা দোংগা। বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে কিছু কৃষক এখন সেচ দিতে দোন ব্যবহার করছেন। দোন দিয়ে সেচ পদ্ধতিতে কোনো ধরনের খরচ নেই বলে জানান তারা। কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়ার পরও খাল ও নালা খনন, বাঁধ নির্মাণ, সংরক্ষিত জলাধার থেকে এখনো দোন দিয়ে পানি ওঠানোর কাজ করেন স্থানীয় কৃষকরা।

সনাতন সেচ পদ্ধতি ফসলের খেতে পানি দেওয়ার সময় কথা হয় কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের কৃষক কবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও কিছু কিছু জমিতে এখনো দোনের ব্যবহার চলছে। দোন দিয়ে পানি সেচ দেওয়া সহজ। এ ছাড়া এতে খরচ নেই বললেই চলে।

কবির বলেন, একবার একটি দোন কিনে নিতে পারলে অনায়াসে চলে চার বছর। দোনের ব্যবহার বর্তমান কৃষিতে নেই। তবু কিছু কিছু এলাকার কৃষকেরা দোন ব্যবহার করে নিজেদের খেতে সেচ দেন। তবে পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতেই দোনের ব্যবহার করেন বলেও জানান কৃষক কবির।

তিনি আরও বলেন, বাবা সবসময় কৃষি জমিতে দোন দিয়ে সেচ দিতেন। এর ধারাবাহিকতায় আমিও বেশ কিছু জমিতে দোনের মাধ্যমে পানি সেচ দেই। সকালে ফজরের নামাজ আদায় করে দোন দিয়ে পানি তোলা শুরু করেছি। দুই বিঘা জমিতে সেচ দিতে দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগে। পার্শ্ববর্তী বরমী বাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় একটি দোন কিনে এনেছি। এরপর বাঁশ দিয়ে পানি ওঠানোর ব্যবস্থা করেছি।

একই ইউনিয়নের ধামলই গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া বলেন, কিছু কিছু জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে পানি সেচের সুযোগ নেই। আর দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও তা অনেকটা ব্যয়বহুল। এজন্য বাধ্য হয়ে দোন দিয়ে পানি উঠাই। তবে নদীর তীর, খালপাড়ের জমিতে দোন দিয়ে সেচ দেওয়া যায়।

এবিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এস এম মুহিদুল হাসান বলেন, উপজেলার বেশির ভাগ কৃষি জমিতে আধুনিক সেচ পদ্ধতির ব্যবস্থা থাকলেও এখানকার কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পানি সেচে দোন ব্যবহার করে থাকেন কৃষকেরা।

/মাহি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়