ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বর্ষায় মাছ ধরার ‘চাই’ এর খুব কদর

মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩০, ৫ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১০:৫২, ৫ জুলাই ২০২২
বর্ষায় মাছ ধরার ‘চাই’ এর খুব কদর

বর্ষাকাল চলছে। মাঠ-ঘাট, খাল-বিল-নদীতে পানি আর পানি। আর পানিতে নানা প্রজাতির দেশীয় মাছের ছড়াছড়ি।দিনাজপুরের হিলিতে তাই এখন মাছ ধরার ‘চাই’ এর খুব কদর। 

মাছ ধরার ‘চাই’ হিলিতে খালই নামে পরিচিত। যারা এই খালই বানাচ্ছেন তারা পরিচিত মাহালি নামে। হিলির মাহালিরা এখন খালই তৈরিতে ব্যস্ত সময় পর করছেন। পেশাদার ও শখের জেলেরা মাছ ধরার খালই কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন হাটে-বাজারে মাহালিদের কাছে।

প্রতি বছর বর্ষার শেষে বিভিন্ন মাঠ-ঘাটে খাল-বিলে ডিম ছাড়ে বিভিন্ন জাতের দেশীয় মাছ। বর্ষা শেষে ওইসব মাছের ডিম কাদামাটিতে পড়ে থাকে এবং মাটির ভেতর রয়ে যায়। আবার বর্ষা শুরু হলে, বর্ষার পানিতে মাটি নরম হয়ে ওইসব ডিম  থেকে মাছের জন্ম হয়। এখন এসব দেশি জাতের মাছগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে পানি জমে থাকা ধান ক্ষেতে আর ডোবা নালায়। এসব মাছ ধরতেই নানাজন হাট-বাজার থেকে খালই জোগাড় করছেন।

হিলি হাটের মাহালিদের দোকানে গেলে দেখা যায়, হাতের তৈরি বিভিন্ন রকমের খলসানী, টেবা, বিত্তি ও পলই জাতের খালই দোকানে সাজিয়ে রেখেছেন। আর তা কিনতে ভিড় করছেন অনেকেই। মাহালিরা খলসানী খালই বিক্রি করছেন ৩৬০ টাকা থেকে ৪২০ টাকা, টেব খালই ১২০ টাকা, বিত্তি খালই ২২০ টাকা ও পলই খালই বিক্রি করছেন ৯০ থেকে ১০০ টাকা। ক্রেতারা অনেকেই বলছেন, এবছর প্রতিটি খালইয়ের দাম বেশি নিচ্ছেন। তারা বলছেন, সব জিনিসের দাম বেশি, আমাদের লাভ কম।

খালই কিনতে আসা আরাফাত রহমান বলেন, আমার বাড়ি হিলির পূর্বে জাংগই গ্রামে। আমাদের গ্রামের আশপাশের ধানিজমি ও ছোট ছোট ডোবা নালা বর্ষার পানিতে ভরে গেছে। আর সেখানে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জাতের দেশি মাছ। বর্ষাকালে মাছ ধরা আমার নেশা। একটা খলসানী খালই নিলাম সাড়ে ৩শ টাকা দিয়ে। 

খালই কিনতে আসা স্থনীয় মহিউদ্দিন বলেন, বর্ষাকালে আমি কখনো মাছ কিনে খাই না। প্রতি বছর বর্ষায় বিভিন্ন খালই দিয়ে মাছ ধরি। আজ আমি একটা পলই ও একটা বিত্তি কিনলাম।

হিলি বাজারের মাহালি সুশান্ত দাস বলেন, আগের মতো তো আর আমাদের তৈরি জিনিসপাতির বিক্রি নাই। তবে বর্ষাকাল আসলে একটু বেশি মাছ ধরার খালই বিক্রি হয়।

মাহালি প্রদীপ দাস বলেন, এই কাজে আমাদের আর লাভ হয় না। একটা বাঁশের দাম ২২০ থেকে ৩৪০ টাকা। তা দিয়ে ৮ থেকে ১০টা খালই তৈরি হয়, তা তৈরির মজুরি দিতে হয় ১০০০ টাকা। এতে তেমন লাভ হয় না। বাপ-দাদার কর্ম ছাড়তে পারি না। এতে সংসার চালানো মুশকিল। আমরা যা করছি, আমাদের ছেলেদের আর এই কর্ম করতে দেবো না।

/টিপু/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়