ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

রেলের গেটম্যানরা ৬ মাস ধরে বেতন পান না, দায়িত্ব পালনে অনীহা

সাকিরুল কবীর রিটন, যশোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১১:০৮, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩
রেলের গেটম্যানরা ৬ মাস ধরে বেতন পান না, দায়িত্ব পালনে অনীহা

যশোরের মানিকদিহি রেলক্রসিং

পশ্চিমাঞ্চলের রেলপথে যশোর অংশে প্রকল্পের অধীনে দায়িত্বে থাকা গেইটকিপারদের বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে। ফলে অনিশ্চয়তায় গেইট ফেলে অন্য চাকরিতে ছুটছেন তারা। এতে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে রেলক্রসিংগুলো।

ভুক্তভোগীরা জানান, ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ১৩ তম একনেক সভায় প্রকল্পভুক্ত গেইটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাস দেওয়া হয়। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন প্রকল্প গেইটকিপারদের চাকরি রাজস্বকরণের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু গত ৬ মাস ধরে তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। ফলে অনিশ্চিত জীবনের আশঙ্কায় এখন অনেক গেইটকিপারই নতুন চাকরির সন্ধান করছেন। এতে করে অনেক রেলক্রসিং থাকছে গেইটম্যান শূন্য।

সূত্র জানায়, পূর্ব-পশ্চিম মানউন্নয়ন শীর্ষক গেইটকিপার প্রকল্পে মোট ১ হাজার ৮৮৯ জন চাকরিতে যোগদান করেন। কিন্তু অনিয়মিত বেতনভাতা এবং অনিশ্চিত হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ৩৮৫ জন। বর্তমানে মোট ১ হাজার ৫০৪ জন গেইটকিপার দায়িত্বপালন করছেন।

পূর্বাঞ্চলে ১ হাজার ৩৮ জনের মধ্যে বর্তমানে চাকরিতে আছেন ৭৬৬ জন। অন্যদিকে, পশ্চিমাঞ্চলে ৮৫১ জনের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন ৭৩৯ জন। তবে পশ্চিমাঞ্চলের রেলপথে যশোর অংশে প্রকল্পের অধীনে দায়িত্বে থাকা ১৩৫ জনের মধ্যে গেইটকিপার আছেন ১১১ জন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে যশোর অংশে প্রকল্পের অধীনে দায়িত্বে থাকা ৫ জন গেইটকিপার বলেন, আমাদের ছয় মাস ধরে বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে। পরিবার নিয়ে খুব অসহায় অবস্থায় দিন পার করতে হচ্ছে আমাদের। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংসার খরচ চালাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও আমাদের যেন রাজস্বকরণ করা হয়। ইতোমধ্যে আমাদের অনেকের চাকরির বয়স চলে গেছে। চাইলেও সরকারি আর কোনো চাকরির আবেদন করতে পারব না।

যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল বাজারের পাশে মানিকদিহি রেলক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে অনেকদিন ধরে।  এমন অবস্থায় মানুষদের রেলক্রসিংয়ে যাতায়াত নিরাপদ করতে স্থানীয় বাসিন্দা হাফেজ মাওলানা শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি দুর্ঘটনা এড়াতে সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন।  সাইন বোর্ডে তিনি লিখেছেন, ‘এই গেইটে গেইটম্যান নাই। নিজ দায়িত্বে চলাচল করুন।’ 

হাফেজ মাওলানা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মানিকদিহি রেলক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। দুর্ঘটনা সচেতনতামূলক সাইনবোর্ডটি টাঙিয়ে দিয়েছি। যাতে মানুষ নিরাপদে চলাচল করতে পারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে এখানে যে গেইটম্যান ছিলেন, তিনি নিয়মিত গেইটে থাকতেন না। আর প্রায় তিন মাস হচ্ছে এখানে কোনো গেইটম্যান নেই।’

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক বীরবল মন্ডল বলেন, ‘সারাদেশে গেইটকিপার সঙ্কট রয়েছে। এজন্য কয়েক জায়গায় গেইটকিপার নেই। বেতনভাতাসহ সার্বিক বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অচিরেই এ বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশা করি।’

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়